পশ্চিমবঙ্গ নিজের মেয়েকে চেয়ে প্রত্যুত্তরে কী পেল
শিবেন্দ্র ত্রিপাঠী
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে অভয়ার গণধর্ষণের এক বছর ঘুরতে না ঘুরতেই পশ্চিমবঙ্গে আবার গণধর্ষণ। ২০২৪-এ ডাক্তার, আর এবার আইনের ছাত্রী। দুটি ঘটনাই ঘটল কলেজ পরিসরে। দক্ষিণ কলকাতার কসবা ল’ কলেজে ঘটল এই লজ্জাজনক ও নির্মম ঘটনা। নারকীয় অপরাধের তিন অভিযুক্ত হলো টিএমসিপির প্রাক্তন ইউনিট প্রেসিডেন্ট এবং কলেজের অস্থায়ী কর্মী ৩১ বছরের মনোজিৎ মিশ্র এবং কলেজেরই অন্য দুই ছাত্র উনিশ বছরের জাইব আহমেদ ও কুড়ি বছরের প্রমিত মুখোপাধ্যায়। নির্যাতিতা ছাত্রীটিকে মনোজিৎই নাকি কলেজের গার্লস সেক্রেটারির পদ দিয়েছিল। মেয়েটি তার অভিযোগ পত্রে লিখেছে, এই তিন ধর্ষক তার উপরে ৩-৪ ঘণ্টা ধরে অত্যাচার করেছে। সে অচৈতন্য হয়ে পড়লে তাকে ওষুধ খাইয়ে, শ্বাসকষ্ট হলে ইনহেলার দিয়ে সুস্থ করিয়ে পুনরায় তার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। সবশেষে হুমকি দিয়ে বলেছে একথা কাউকে বললে তার বাবাকে তারা মিথ্যা মামলায় অ্যারেস্ট করিয়ে দেবে এবং তার
প্রেমিককে খুন করাবে। তারা এই ধর্ষণের ভিডিয়ো রেকর্ডিংও করেছে! ভাবা যায়, আজকের উন্নত যুগে এই অসভ্য বর্বরেরা বাস করছে? অবশ্য লোকে বলছে মনোজিৎ মিশ্রের সঙ্গে শাসকদলের সর্বোচ্চ নেতা-নেত্রীদের ওঠাবসা আছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ছবিও ঘুরছে। অর্থাৎ তারা মোটেই সামান্য নয়, বরং তারা শাসক দলের ছত্রছায়ায় লালিত পালিত।
এরাজ্যে এই ঘটনা নতুন নয়, বরং বহু দিন ধরে এই ধারার প্রতিফলন, যেখানে শাসকদলের ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা রাজনৈতিক মাফিয়ারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দখল করে, ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা হরণ করছে এবং প্রশাসন নির্লজ্জভাবে চোখ বুজে রয়েছে। ছাত্রীটি বলছে, তাকে প্রথমে টয়লেটে নিয়ে যাওয়া হয়, পরে সে চিৎকার করলে তাঁকে একটি ঘরে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয়। কলেজ চত্বরে এমন বর্বরতা ঘটলেও কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ পশ্চিমবঙ্গে এখন শিক্ষার মন্দিরগুলো রাজনৈতিক অপরাধীদের ঘাঁটি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘটনার পরে এই মনোজিৎ, জাইব ও প্রমিত কিন্তু বেশ ডাকাবুকো হয়ে উঠেছে। কীসের কারণে জানি না প্রশাসন তাদের ‘এমজেপি’ বলে ডাকছে। মনোজিৎ নাকি কলেজে ম্যাংগো নামে বিখ্যাত। একটা সেলিব্রেটি ভাব। তবে এই ম্যাংগো নাকি অতি বিবেকবান, নারীবাদী চরিত্র! ২০২৪-এ যখন আরজি করে অভয়া কাণ্ড হয়, সকলে নির্যাতিতার ধর্ষণ ও হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলনে মুখর, তখন গত ১৬
আগস্ট এই ল্যাংড়া আম কিন্তু পিছিয়ে ছিল না। সে তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছিল এক প্রতিবাদী কবিতা – ‘ধর্ষকের ফাঁসি চাই, নাটক নয় বিচার চাই, অবিলম্বে বিচার চাই, দোষীদের ফাঁসি চাই’। সবার উপরে হেডিঙে লিখেছিল ‘বাংলার অগ্নিকন্যা’। তখন অবশ্য ২০২৪, আগস্ট মাস, তাই অনেকেই তার জাত চিনতে পারেনি। কারণ তখন তো আমের মরসুম শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু এবার এই ধর্ষণকাণ্ড জুন মাসে, আমের ভরা মরসুম। ল্যাংড়া সুবাসে পশ্চিমবঙ্গ ম-ম করছে। স্বাদে, বর্ণে, গন্ধে একেবারে অতুলনীয়। মনোজিতের বাবা আবার বলেছেন ‘ছেলের স্কুল জীবন থেকেই তৃণমূলের প্রতি ভীষণ আস্থা’।
এবার নিশ্চয়ই বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গে কাদের দৌলতে এখন ‘দুয়ারে ধর্ষক’ প্রকল্প চলছে? কাদের থেকে ঘরের মেয়েদের সাবধানে রাখতে হবে?
শাসকদলের মহান নেতারা অবশ্য সংবাদমাধ্যমে যথারীতি নারী জাতির প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও সম্মানের পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছেন। একজন বলছেন, ‘প্রশাসন কী করবে? বন্ধু যদি বন্ধুকে ধর্ষণ করে তবে পুলিশের কী করার আছে’? আবার অন্যজন বলছেন, ‘মেয়েটির ওখানে একা যাওয়া কী দরকার ছিল? ছাত্রীটি ওখানে না গেলে এই ঘটনা ঘটতোই না। অভিযুক্ত পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে মাত্র’। আর দলের ঘোষিত মুখপাত্র ঘোষবাবু তো স্পষ্ট করে ঘষেই দিয়েছেন। বলেছেন, ‘ওই ধর্ষকদের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই’। ব্যাস, ল্যাটা চুকে গেল। রুষ্ট বিরোধীদের ছোঁড়া বাউন্সার বলগুলি লাফিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। খুঁজে আনতে সন্ধ্যে গড়াবে। ততক্ষণে খেলা শেষ। তার মানে নেতা প্রবরেরা নিদান দিয়েই দিয়েছেন, ‘নিজের কলেজে পড়তে যেতে গেলে এখন থেকে হয় ছাত্রীদের সেন্ট্রাল ফোর্স নিয়ে যেতে হবে, নয়তো পাঁচ-সাতজন প্রাইভেট সিকিউরিটি। নইলে পার্টির ছাত্রনেতারা কখন যে হায়নার মতো
ঝাঁপিয়ে পড়ে তুলে নিয়ে যাবে, তারপর চার পাঁচ ঘণ্টা ধরে… বাকিটা ইতিহাস। ল’ কলেজের এই কাণ্ড আমাদের সামনে একটি বিষয় পরিষ্কার করে দিয়েছে যে শাসকদলের ছত্রছায়ায় থাকলেই মেয়েরা নিরাপদ নয়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করলেও দলের নেতাদের হাতে গণধর্ষিতা হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।
যে মনোজিৎকে নিয়ে এতো আলোচনা, তার রয়েছে দু’নম্বরিতে ‘ষোলোকলা’ পূর্ণ করার এক অমর কীর্তি। তবে এক-এক করে খুলেই বলা যাক। ১. দীর্ঘদিন ধরে জুনিয়ার ছাত্র-ছাত্রীদের র্যাগিং করত সে। ২. যেকোনো জায়গায় দেখা হলে ছাত্রদের তাকে গুড মর্নিং বলে সম্বোধন করতে হতো, না করলে নাকি সরাসরি চড় জুটতো, কেউ প্রতিবাদ করলে জুটতো চরম লাঞ্ছনা। ৩. সকল ছাত্র-ছাত্রীকে টিএমসিপির মিছিলে যেতে বাধ্য করত এই মনোজিৎ। ৪. ইউনিয়ন রুমে সালিশি সভা বসিয়ে বিচার করতো সে। সেই-ই ছিল জজ-হাকিম-উকিল-সবকিছু একসঙ্গে। একেবারে সুকুমার রায়ের ‘বিচার’ কবিতার মতো। ৫. কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে সে মিথ্যা নারী-ঘটিত মামলায় ফাঁসিয়ে দিত। ৬. বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের কিছু পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে বাধ্য করা হতো। তাদের নগ্ন ছবি মোবাইলে তুলে রাখত। পরে আবার তারা সঙ্গ দিতে অস্বীকার করলে তাদের সেই ছবি বাজারে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিত। ৭. বিভিন্ন সময়ে ছাত্রীদের ভিডিয়ো কল করতো এবং সেই কল তাদের ধরতেই হতো। না ধরলে অন্য ট্রিটমেন্ট। ৮. মেয়েদের দেখে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতো প্রকাশ্যে, যা দেখে দলের ছেলেরা মজা নিত। কেউ প্রতিবাদ করতে পারত না। ৯. ইচ্ছামতো পরীক্ষার ফর্ম আটকে রেখে দিত। ১০. পরীক্ষার্থীদের থেকে কাটমানি নিতো। ১১. তাকে ১ লক্ষ টাকা দিলে যে কেউ ল’ কলেজে ভর্তি হয়ে যেতে পারতো। ১২. সে শুধু কসবা ল’ কলেজেই নয়, পার্টির প্রচ্ছন্ন মদতে অন্য কলেজে গিয়েও দাদাগিরি চালাতো। ১৩. ২০২৩ সালে সে জেলও খেটেছিল। ১৪. ক’মাস আগেও পুলিশকে মারার ঘটনায় তার নামে মামলা হয়েছিল। ১৫. কোর্সের সময়কাল পেরিয়ে যাওয়ার পরে আরও চার বছর পর কলেজে বেআইনিভাবে ভর্তি হয়েছিল সে, তবে শেষ পর্যন্ত পাশ করে বেরিয়েছিল কিনা জানা নেই। ১৬. সে এই কলেজে ক্যাজুয়াল স্টাফ হিসেবে চাকরি করেও কী করে কোর্টে প্র্যাকটিস করে? অর্থাৎ এই কলেজে তার পুরো
জার্নিটাই বেআইনি দু-নম্বরি, জালি প্রহসন মাত্র। এমন গুণধর নেতাকে নিয়ে টিএমসিপি কেন গর্ব করবে না! সে তো প্রকৃতপক্ষেই সুকুমার রায়ের ‘সৎ পাত্র’-এর গঙ্গারাম। তাইতো তাবড় নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে তার এত সখ্য।
এখনো রাজ্যবাসী হয়তো ভাবছে, ধর্ষণ আরজি করে হয়েছে, কসবা ল’ কলেজে হয়েছে, কিন্তু আমাদের ঘরে তো হয়নি। সেজন্য কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া প্রয়োজন। এই জানুয়ারিতে রামনগরে সাত বছরের শিশু কন্যার ধর্ষণ- অভিযুক্ত শাসক নেতা ফারুক গাজি। ফেব্রুয়ারি মাসে মুরারইতে মূক ও বধির গৃহবধূ ধর্ষণ- অভিযুক্ত শাসকদলের পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী তাপস মণ্ডল। মার্চে মালদায় বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণ- অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা অমল মণ্ডল। ওই মাসে মালদার আরেক বাড়িতে ঢুকে অন্য এক মহিলাকে ধর্ষণ- অভিযুক্ত মাসুদুর রহমান। মার্চে নারায়ণগড়ের অন্য একটি ঘটনায় পার্টি অফিসে ডেকে মহিলাকে ধর্ষণ- অভিযুক্ত পার্টির অঞ্চল সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত শীট ও শান্তি ভুঁইয়া। মে মাসে মিনাখায় বাড়ির ভেতর ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণ- অভিযুক্ত নেতা বাবুসোনা মীর ও রবিউল। জুন মাসে গড়বেড়ায় নাবালিকাকে ধর্ষণ- অভিযুক্ত মুজিবুর মণ্ডল-কী মানে হচ্ছে? ধর্ষক নিজের ঘরে ঢুকে পড়েছে কিনা?
এই মনোজিৎদের হাত অনেক লম্বা। শাসকদলের ওপর তলার তাবড় তাবড় নেতা-নেত্রীর সঙ্গে ওদের যোগাযোগ। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করলেও তারা যে ছাড়া পেয়ে যাবে না তার কোনো গ্যারান্টিও নেই। এই মনোজিতেরা গার্ডরুমে নিয়ে গিয়ে মেয়েটিকে যেভাবে ধর্ষণ করল তাতে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে কলেজগুলোয় নিরাপত্তা আদৌ আছে কি? বিকেল চারটের পরে কলেজ ছুটি হয়ে যায়। তার পরে ছাত্রসংসদের ঘরে রাত্রি ১০টা/১২টা পর্যন্ত মনোজিৎরা সেখানে কী করছিল? সেই সময় কলেজে কি কোনো কর্মী বা নিরাপত্তারক্ষী উপস্থিত ছিল না? কেউ-ই কি কিছু লক্ষ্য করেনি? আর আইন কলেজের ভেতর আইনের ছাত্রীরাই যদি ধর্ষণের শিকার হয় তবে আইন কাদের বিচার করবে? মধ্যবিত্ত বাঙ্গালি পরিবারের বাবা-মায়েরা কোন ভরসায় তাঁদের মেয়েদের কলেজে পড়াশোনা করতে পাঠাবেন? শাসকদলের রাক্ষসগুলোর হাত থেকে কে বাঁচাবে তাদের? তাপস পালের অতৃপ্ত আত্মা আজ আক্ষেপ করে বলছে ‘আমি ঘরে ঢুকিয়ে রেপ করার কথা বলেছিলাম ঠিকই কিন্তু আমার পার্টির চেলা-চামুণ্ডারা তো আজ বাস্তবে হাসপাতালে, কলেজে ঢুকে রেপ করছে। তবে আমি একা কেন সেদিন দোষের ভাগি হয়েছিলাম?’
২০২১ সালে ‘বাংলা নিজের মেয়েকে চেয়েছিল’। আবেগে ভেসে আমাদের ঘরের মা-বোনেরা এই দলকে জয়ী করেছিল। কিন্তু সেই মেয়ে আজ পশ্চিমবঙ্গের মা-বাবাদের কাছে ত্রাসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারী নিরাপত্তা এই পশ্চিমবঙ্গে আজ নিছক ঠাট্টা। হাঁসখালি কাণ্ডে এক নাবালিকাকে গণধর্ষণের পর পুড়িয়ে মারা হলো, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তিলোত্তমার ধর্ষণ ও হত্যা হলো, কসবা ল’ কলেজে ছাত্রী গণধর্ষিতা হলো- অভিযুক্তরা সকলেই সরকারি দলের। আজ লোকে বলছে পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচাতে হলে, পশ্চিমবঙ্গের মা-বোনদের সম্মান রক্ষা করতে হলে এই শাসককে বিদায় দিতে হবে। আর লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের লোভে নয়, ঘরের লক্ষ্মীর মান বাঁচাতে পরের ভোটটা বুঝে শুনে দিতে হবে। এই সরকারটা উলটে দিতে হবে। এক ভদ্রলোক মজা করে বলছিলেন ‘রুটি আর সরকার, দুটোই মাঝে মাঝে উলটানো দরকার। রুটি না উলটোলে রুটি পুড়ে যায়, আর সরকার না উলটোলে জনগণ পুড়ে যায়’। এখন আর রাত দখল, দিন দখল, রাস্তা দখলে হবে না। সমাধান একটাই- নবান্ন দখল। সরকার বদল। সেটা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই করতে হবে। তাড়াতে হবে এই মহিলাকে, সপার্ষদ, ওই গ্যাংস্টার ভাইপো সমেত। নইলে দু’ তিন মাস অন্তর রাত জাগতে এখনো রাজ্যবাসী হয়তো ভাবছে, ধর্ষণ আরজি করে হয়েছে, কসবা ল’ কলেজে হয়েছে, কিন্তু আমাদের ঘরে তো হয়নি। সেজন্য কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া প্রয়োজন। এই জানুয়ারিতে রামনগরে সাত বছরের শিশু কন্যার ধর্ষণ- অভিযুক্ত শাসক নেতা ফারুক গাজি। ফেব্রুয়ারি মাসে মুরারইতে মূক ও বধির গৃহবধূ ধর্ষণ- অভিযুক্ত শাসকদলের পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী তাপস মণ্ডল। মার্চে মালদায় বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে দশম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে হবে, লাভের লাভ কিছু হবে না।