দুর্গাপূজা হয়ে উঠেছিল বিপ্লবীদের কেন্দ্রস্থল
রবিব্রত ঘোষ
বঙ্গে দুর্গাপুজা ব্যাপক প্রচলিত হয়েছিল ১৭৫৭ থেকে। সে বছরই পলাশীর যুদ্ধ জয়কে স্মরণীয় করে রাখার জন্য রাজা নবকৃষ্ণদেব কলকাতার শোভাবাজারের বাড়িতে খুব ধুমধামের সঙ্গে দুর্গাপূজার আয়োজন করেন। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মকর্তারা নিমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে এই উৎসবে যোগ দেন। জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে পালিত এই দুর্গাপূজায় কোম্পানির ইংরেজ কর্মকর্তাদের আগমনে তা বিজয় উৎসবে পরিণত হয়। সে আমলের কিছু ধনী জমিদারদের কাছে সিরাজের এই পরাজয় ছিল ইসলামিক শাসন থেকে মুক্তির সোপান। তাই ক্লাইভকে ধন্যবাদ জানানোর জন্যই রাজা নবকৃষ্ণ দেব-সহ আরও অনেকেই মহা
ধুমধামে দুর্গাপূজা করেন।
বঙ্গে দুর্গাপূজার শুরুটা এমনভাবে হলেও এই দুর্গাপূজা পরবর্তীকালে মাতৃবন্দনায় পরিণত হয়ে পরাধীনতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে ওঠে। এর পিছনে বঙ্কিমচন্দ্রের উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসে দেশমাতৃকাকে দেবী দুর্গার সঙ্গে বন্দনা করেছেন। তাঁর ‘বন্দেমাতরম্’ গানের শেষে দুর্গার বন্দনা আছে। সেখানে বলা হচ্ছে, বাহুতে তুমি মা শক্তি/হৃদয়ে তুমি মা ভক্তি/তোমারই প্রতিমা গড়ি মন্দিরে মন্দিরে। ত্বং হি দুর্গা দশপ্রহণধারিণী।
এই উপন্যাসেই মহেন্দ্রকে সন্ন্যাসী ভবানন্দ দুর্গা ও জগদ্ধাত্রী মূর্তি দর্শন করিয়ে দেশসেবায় অনুপ্রাণিত করেন। বঙ্কিম-বর্ণিত কালী হয়ে উঠেছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের মূর্ত প্রতীক। জমিদার মহেন্দ্রকে দেবালয়ের কালীমূর্তির সামনে এনে সত্যেন্দ্র ব্রহ্মচারী বলেন, ‘দেখ, মা যা হইয়াছেন।’ মায়ের উগ্রচণ্ডী মূর্তি ধারণের কারণ ব্যাখ্যা করেন, ‘কালী- অন্ধকার সমাচ্ছন্না কালিমাময়ী। হৃতসর্বস্বা, এই জন্য নগ্নিকা। আজি দেশে সর্বত্রই শ্মশান- তাই মা কঙ্কালমালিনী।’ এর পর জ্যোতির্ময়ী দশভুজা দুর্গার সামনে নিয়ে গিয়ে বলেন, ‘মা যা হইবেন। দশ ভুজা দশ দিকে প্রসারিত- তাহাতে নানা আয়ুধরূপে নানা শক্তি শোভিত, পদতলে শত্রু বিমর্দিত…।’ আনন্দমঠের কালী বা দুর্গা ভারতমাতার দুই বিপ্রতীপ অবস্থানের কল্পিত রূপ। কালী সমকালীন শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ইঙ্গিতবাহী, আর মা দুর্গা মহাশক্তিশালী অসুরদলনী। পরবর্তীকালে অগ্নিযুগের বিপ্লবী ঋষি অরবিন্দ নিজের বাড়িতেই দুর্গা বা অম্বা মন্দির স্থাপন করেন: তাঁর প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় উত্তর কলকাতার ৩৯, কর্ণওয়ালিশ স্ট্রিটে এক অভিনব দুর্গাপূজা হয়। দেবীর মূর্তির বদলে সেদিন সেখানে পূজিতা হন নানা অস্ত্র। ভারতের বিপ্লবী চেতনার বিকাশে শ্রীঅরবিন্দ রচিত ভবানী মন্দিরে, শ্রীঅরবিন্দ লেখেন, ‘আমরা শক্তিকে ত্যাগ করিয়াছি, শক্তিও আমাদের ত্যাগ করিয়াছেন। আমাদের হৃদয়ে, মস্তিষ্কে, বাহুতে মা নাই।’… যা আমাদের সর্বাগ্রে অর্জন করা উচিত তা শক্তি- শারীরিক শক্তি, মানসিক শক্তি, নৈতিক শক্তি এবং সবার উপরে সকল জিনিসের অন্তহীন ও অবিনশ্বর উৎস, আধ্যাত্মিক শক্তি। যদি শক্তি পাই তবে অন্য সব জিনিস সহজে আপনিই আসিবে।… যে শক্তিরূপিণী মায়ের পূজা করিতেন রামকৃষ্ণ… তিনি কালী, ভবানী।’ শ্রীঅরবিন্দ তাঁর ভবানী মন্দিরে বলেছেন, ‘আমরা এমন কয়েকজন লোক হইয়া একটি মূল কেন্দ্র গড়িতে চাই যাহাদের মধে শক্তি চরম পূর্ণতা লাভ করিবে,… বুদ্ধিতে ও হৃদয়ে অগ্নিময়ী ভবানীকে ধারণ করিয়া তাহারা আমাদের দেশের দূর দূরান্তরে বিচরণ করিবে, সে শিখা ছড়াইয়া দিবে।’ এ সবই ছিল বিপ্লবের গোপন প্রস্তুতি। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের পর থেকেই দুর্গাপূজা স্বাধীনতা আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠে। বিপিন চন্দ্র পাল তখন ‘স্বদেশি পূজা’ উৎসবের আয়োজন করেন, যা দেশীয় পণ্যের প্রচার এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসনের বিরোধিতার প্রতীক হয়ে ওঠে।
১৯১৯ সাল। বঙ্গ জুড়ে স্বদেশি আন্দোলনের জোয়ার। কলকাতা, খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম সবত্রই স্বদেশি ভাবধারায় জেগে উঠছে এক নতুন প্রজন্ম। এখানে সেখানে প্রতিদিন গড়ে উঠছে ছোটোখাটো বিপ্লবী দল। এমন কয়েকটি বিপ্লবী আড্ডায় ঠিক হলো, সবাইকে এক ছাদের তলায় আনতে হবে। তবেই স্বদেশি আন্দোলনে সফলতা আসবে। তার জন্য সেরা উপায় হলো দুর্গাপূজা। ঠিক করা হলো, দুর্গাপূজাকে উপলক্ষ্য করে স্বদেশি চেতনায় উদ্বুদ্ধ যুবকদের সংগঠিত করা হবে। উৎসবও হবে আর দেবী বন্দনার সঙ্গে সঙ্গে দেশমাতৃকার বন্দনায় তরুণ প্রজন্মকে জাগরিত করার কাজও হবে। ১৯২৫ সালে মান্দালয়
জেলে থাকাকালীন সুভাষচন্দ্র বসু দুর্গাপূজা আয়োজনের অনুমতি চান। প্রথমে কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিতে চায়নি। কিন্তু সুভাষচন্দ্র ও অন্যান্য বন্দিদের অনশনের ফলে শেষ পর্যন্ত তাদের অনুমতি দিতে বাধ্য হয় ব্রিটিশ সরকার। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে দুর্গাপূজা কীভাবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের একতাবদ্ধ করেছিল এবং ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছিল।
কলকাতার বহু বারোয়ারি দুর্গাপূজা এক সময় ছিল বিপ্লবের কর্মস্থল। এর সব থেকে ভালো উদাহরণ হলো উত্তর কলকাতার সিমলা ব্যায়াম সমিতির দুর্গাপূজা, যার আরম্ভ হয়েছিল ঋষি অরবিন্দ ও বাঘা যতীনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী যুগান্তর দলের নেতা বিপ্লবী অতীন্দ্রনাথ বসু নেতৃত্বে। এই সমিতি ছিল লাঠিখেলা, তলোয়ার চালনা, কুস্তি খেলা প্রভৃতি শেখার প্রধান আখড়া। দেশমাতৃকার আরাধনার উদ্দেশ্য নিয়ে অতীন্দ্রনাথ ১৯২৬ সালে সিমলা ব্যায়াম সমিতির উদ্যোগে দুর্গাপূজার শুরু করেন। সারা বছরের শরীরচর্চা আর সাহসিকতার পরীক্ষার দিন হিসেবে বেছে নেওয়া হতো মহাষ্টমীর দিনটিকে। এই দিনটি তাঁরা বীরাষ্টমী দিসব হিসেবে পালন করতেন। এই বীরাষ্টমী অনুষ্ঠানে দেবী দুর্গার সামনে লঠিখেলা, ছুরিখেলা, কুস্তি, মুষ্টিযুদ্ধ আর তরবারি খেলার মাধ্যমে সাহস আর শক্তি দেখানোর পরীক্ষা হতো।
সুভাষচন্দ্র বসুর সঙ্গে এই বারোয়ারি পুজা কমিটির গভীর সম্পর্ক ছিল। তিনি বেশ কয়েক বছর এই বীরাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধন করেছিলেন। ১৯২৮ সালের সিমলা ব্যায়াম সমিতির তৃতীয় বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, সে বছর খুব জাঁকজমকভাবে বীরাষ্টমী উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। উৎসবে উপস্থিত ছিলেন শরৎচন্দ্র বসু, সুভাষচন্দ্র বসু, ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত, উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, কিরণ মুখোপাধ্যায়, যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের মতো প্রখ্যাত ব্যক্তিরা।
১৯৩০ সালে নেজাজী কলকাতা পুরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। ওই বছরেই সিমলা ব্যায়াম সমিতি সুভাষচন্দ্র বসুকে সমিতির পক্ষ থেকে গঠিত সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি নিযুক্ত করে। নেতাজীর উদ্যোগে ও স্বদেশি চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে সিমলা ব্যায়াম সমিতির পূজাতে প্রতিমাকে তখন দেশীয় খাদি বস্ত্র পরানোর রীতি শুরু হয়। দেবীর পরনের অলঙ্কার সবই মাটির। অস্ত্র দেশীয় লোহা, তামার। বীরাষ্টমী উৎসব ছাড়াও মণ্ডপে পুতুলখেলা, যাত্রাপালা ও কবিগানের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হতো। এছাড়াও পূজাপ্রাঙ্গণে বিভিন্ন বাণী লেখা পোস্টার শোভা পেত। সে সময়ের ইংরেজি পত্রিকা ‘অ্যাডভান্স’-এ সিমলা ব্যায়াম সমিতির পূজাকে ‘স্বদেশি ঠাকুর’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। ব্রিটিশ সরকার ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করার সাহস করতো না। কিন্তু সিমলা ব্যায়াম সমিতির পূজায় বিপ্লবীদের অংশগ্রহণ বেড়ে যাওয়ায় ১৯৩২ সালে ইংরেজ সরকার এই পূজাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পরপর তিন বছর এ পূজা বন্ধ ছিল। ১৯৩৯ সালে আবার নতুন করে এই পূজা শুরু হয়। এবার এ পূজায় অগ্রণী ভূমিকা নেন স্বামী বিবেকানন্দের ভাই মহেন্দ্রনাথ দত্ত।
১৯১৯ সালে বাগবাজার সার্বজনীন ‘দুর্গাপূজা শুরু হয়। ১৯৩০ সালে কলকাতা পুরসভার অল্ডারম্যান দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সভাপতি হন। তারই উদ্যোগে এই পূজা এক নতুন রূপ পায়। দেশাত্মবোধ ও স্বাদেশিকতার চেতনাবোধ জাগাতে তিনি এই পূজার নামকরণ করেন, ‘বাগবাজার সার্বজনীন দুর্গোৎসব ও প্রদর্শনী’। প্রকৃতপক্ষে ওই বছর থেকেই এই পূজার গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ের শুরু। এই দুর্গাপুজার যে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হতো, তা স্বদেশি শিল্পমেলায় রূপান্তরিত হয়। দুর্গাচরণের উদ্যোগেই পূজার সঙ্গে যুক্ত হয় দেশীয় শিল্প সম্পর্কিত একটি পূর্ণাঙ্গ প্রদর্শনী। গ্রামীণ শিল্পের সঙ্গে কলকাতার মানুষদের পরিচয় করিয়ে দিতেই মূলত তার এই পদক্ষেপ। সে বছরই সুভাষচন্দ্র এই পূজার সঙ্গে যুক্ত হন। সুভাষচন্দ্র
১৯৩৮-১৯৩৯ সাল পর্যন্ত এই দুর্গোৎসব কমিটির সভাপতি ছিলেন। এছাড়া ১৯৩০ ও ১৯৩৯ সালে তিনি বাগবাজারের সার্বজনীন দুর্গোৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। এই পূজামণ্ডপে স্বদেশি পণ্যের প্রদর্শনী, দেশাত্মবোধক নাটক ও গান পরিবেশন করা হতো। এমনকী দেবী দুর্গাকে খাদির কাপড় পরিয়ে স্বদেশি আন্দোলনকে শক্তিশালী করার চেষ্টা করা হয়। সেই সময় অনুশীলন সমিতির লাঠিখেলা, শরীরচর্চা ইত্যাদি প্রদর্শন করার জায়গা ছিল বাগবাজার সার্বজনীন পূজাপ্রাঙ্গণ। এই অনুষ্ঠানটি হতো বীরাষ্টমী উৎসবের দিনে। ১৯৩৬ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাইঝি সরলা দেবীর পরিচালনায় বাগবাজারে সর্বপ্রথম বীরাষ্টমী উৎসব শুরু হয়। এই পূজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘কাপুরুষতা, ভীরুতা সব মায়ের চরণে অর্পণ করে দেশমাতৃকার পূজার জন্য তৈরি হতে হবে। সে পূজার জন্য প্রয়োজন শুধু ত্যাগ।’ উল্লেখ্য, এখনো মহাষ্টমীর দিনে এখানে বীরাষ্টমী উৎসব পালিত হয়।
১৯৩৭ সালে বিপ্লবী সংগঠন অনুশীলন সমিতির কয়েকজন সদস্য মিলে কলকাতার হেদুয়ার কাছে কাশী বোস লেনে শুরু করেন একটি দুর্গাপূজা। এই পূজা মণ্ডপে পুলিশের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। ফলে বিপ্লবীরা এখানে নিরাপদে তাদের কার্যকলাপ চালাতে পারতেন। পূজার বেদিতে চামড়ার বুট পরে ওঠার সাহস ছিল না পুলিশের। সেই সুযোগটাই কাজে লাগাতে এই দুর্গাপূজার আয়োজন। পূজাতেও এক অভিনব নিয়ম আনলো বিপ্লবীরা। এক জনের বদলে ১১ জন পুরোহিত মিলে শুরু করল মাতৃ আরাধনার। আসলে পূজা করত একজন, আর বাকিরা ছিলেন বিপ্লবীর দল। ছদ্মবেশে মায়ের মণ্ডপেই গোপনে চলত বিপ্লবী
কার্যকলাপ।
কলকাতার বিভিন্ন পূজা কমিটি স্বদেশি পণ্যের প্রদর্শনীর আয়োজন করত। এর মাধ্যমে স্বদেশি শিল্পকে উৎসাহিত করা হতো এবং বিদেশি পণ্য বর্জনের বার্তা দেওয়া হতো। অনেক পূজামণ্ডপে দেশাত্মবোধক গান, নাটক ও আবৃত্তির আসর বসতো। এগুলির মাধ্যমে জনগণের মধ্যে দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা জাগানো হতো। দুর্গাপূজার সময় বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক আলোচনা সভার আয়োজন করা হতো। এসব সভায় স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্ব এবং ব্রিটিশ শাসনের অত্যাচারের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করা হতো। এভাবে দুর্গাপুজা হয়ে উঠেছিল জনসচেতনতা সৃষ্টির একটি কার্যকর মাধ্যম।
শুধু সার্বজনীন পূজাই নয়, অনেক বনেদি বাড়িও স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল। হাওড়ার শিবপুরের রায়চৌধুরী পরিবারের জমিদারবাড়িতে পূজায় দেবীর সামনে একটি সাদা পাঁঠা বলি দেওয়া হতো। সাদা পাঁঠাটিকে মনে করা হতো কোনো ব্রিটিশ পুরুষ। ডায়মন্ড হারবারের নন্দী বাড়ির সদস্যরা সরাসরি আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। এই পরিবারের এক সদস্য একবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যান। পরে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ তাঁকে জেল থেকে ছাড়িয়ে আনেন। সেই বছর থেকেই প্রতিবাদস্বরূপ দেবীর গায়ে বিদেশি কাপড়ের পরিবর্তে পরানো হয় স্বদেশি শাড়ি। কলকাতার অনেক বাড়িতেও পূজায় স্বদেশি সামগ্রী ব্যবহারের রীতি শুরু হয়। দশমীতে বিসর্জনের পর অনেকেই খালি পায়ে দেশাত্মবোধক গান গাইতে গাইতে বাড়ি ফিরতেন।