দেব শিল্পী বিশ্বকর্মা
সর্বাণী চক্রবর্তী
তিনি সর্বমেধ যজ্ঞে নিজেকে নিজের কাছে বলি দেন। ইনি বাচস্পতি, মনোজব, বদান্য, কল্যাণকর্মী বিধাতা।
পুরাণমতে বিশ্বকর্মা বৈদিক ত্বষ্টাদেবতার কর্মশক্তিও আত্মসাৎ করেছিলেন। এই জন্য তিনি ত্বষ্টা নামেও অভিহিত। বিশ্বকর্মা কেবল দেবশিল্পী নন, দেবতাদের অস্ত্র সমূহেরও প্রস্তুতকর্তা। ইনি সর্বপ্রথম আগ্নেয়াস্ত্রের নির্মাতা। মহাভারত অনুসারে তিনি শিল্পের শ্রেষ্ঠ কর্তা, সহস্র শিল্পের আবিষ্কারক, সর্বপ্রকার কারুকার্য-নির্মাতা। দেবলোক স্বর্গেরও স্রষ্টা বিশ্বকর্মা। রাক্ষসরাজ রাবণের লঙ্কাপুরীও বিশ্বকর্মার সৃষ্টি। বিশ্বকর্মা পূজার ধ্যানমন্ত্রেও আছে- বেদে পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বকর্মা বলা হয়েছে। বিষ্ণুপুরাণ অনুসারে অষ্টম বসু প্রভাসের ঔরসে এবং বৃহস্পতির ভগ্নী যোগসিদ্ধার গর্ভে বিশ্বকর্মার জন্ম হয়। কোনো কোনো পুরাণে বিশ্বকর্মাকে স্বয়ং ব্রহ্মার পুত্র বলা হয়েছে। বিশ্বকর্মা শিল্প সমূহের প্রকাশক, অলঙ্কারের স্রষ্টা এবং দেবতাদের জন্য বিমানের নির্মাতা। তাঁর কৃপায় মানবসমাজ শিল্পকলায় পারদর্শিতা লাভ করে। বিশ্বকর্মা অন্যতম উপবেদ ‘স্থাপত্য বেদ’-এর প্রকাশক এবং চতুঃষষ্ঠী কলার অধিষ্ঠাতা।
ঋগ্বেদে তাঁকে সর্বদর্শী, সর্বজ্ঞ, বাচস্পতি, মনোজব, বদান্য ও কল্যাণকর্মা উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। বিভিন্ন পুরাণে বিশ্বকর্মার উৎপত্তির ভিন্ন ভিন্ন
কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। যেখানে ব্রহ্মার নাভিকোষ থেকে বিশ্বকর্মার উৎপত্তি এবং শাপগ্রস্ত হয়ে মর্ত্যে জন্ম নেওয়ার কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। বিভিন্ন পৌরাণিক উৎস অনুসারে ভগবান বিশ্বকর্মার স্ত্রীর নাম ঘৃতাচী। বামন পুরাণ এবং অন্যান্য গ্রন্থে তাঁকে এই স্বর্গীয় অপ্সরার স্বামী রূপে উল্লেখ করা হয়েছে। পুরাণে বিশ্বকর্মার পাঁচ পুত্রের কথা জানা যায়। তাঁরা হলেন মনু, মায়া, ত্বান্তর, শিল্পী ও বিশ্বজ্ঞ। এই পাঁচ পুত্র বিশ্বকর্মা সম্প্রদায়ের পাঁচটি উপগোষ্ঠীর পূর্বপুরুষ, যথা কামার, ছুতার, ধাতু ঢালাইকারী, পাথর মিস্ত্রি ও স্বর্ণকার। রামায়ণ অনুসারে বানরীর গর্ভজাত বিশ্বকর্মার প্রকৌশলী পুত্র নল ও নীল। যারা ছিলেন শ্রীরামচন্দ্রের সেতু বন্ধনের প্রধান স্থপতি। মহাভারত অনুসারে দানবীর গর্ভে বিশ্বকর্মার পুত্র ময়দানব, যার হাতে নির্মাণ হয়েছিল পাণ্ডবদের ইন্দ্রপ্রস্থ।
ঋগ্বেদে উল্লেখ আছে, বিশ্বকর্মা সর্বদর্শী ভগবান। তাঁর চক্ষু, মুখমণ্ডল বাহু ও পদদ্বয় সর্বত্র ব্যাপৃত। বাহু ও পদদ্বয়ের সাহায্যে তিনি স্বর্গ ও মর্ত্য নির্মাণ
করেছেন। বিশ্বকর্মা সৃষ্টিশক্তির রূপক নাম। তিনি ধাতা, বিশ্বদ্রষ্টা ও প্রজাপতি। বিশ্বকর্মা পিতা, সর্বজ্ঞ, দেবতাদের নামদাতা এবং মর্ত্যজীবের অনাধিগম্য।
দংশপাল মহাবীর সুচিত্রকর্মাকারক। বিশ্বকৃৎ বিশ্ববৃক্ ত্বং চ বাসনা মানদণ্ডধূক্।।’ ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে বিশ্বকর্মা কন্যা সবর্ণার (মতান্তরে সংজ্ঞা) স্বামী সূর্য।
সবর্ণা সূর্যের প্রখর তেজ সহ্য করতে না পারায়, বিশ্বকর্মা সূর্যকে শানচক্রে স্থাপন করে তাঁর তেজের অষ্টমাংশ কর্তন করেন। এই কর্তিত অংশ পৃথিবীর উপর পতিত হলে সেই তেজপুঞ্জের দ্বারা বিশ্বকর্মা বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র, শিবের পিনাক, কুবেরের পাশ, কার্তিকেয়র শক্তি এবং অন্যান্য দেবতাদের অস্ত্রশস্ত্রাদি নির্মাণ করেন। কথিত, শ্রীক্ষেত্রের জগন্নাথদেবের প্রথম দারুমূর্তি ছদ্মবেশে বিশ্বকর্মা নির্মাণ করেছিলেন। সূর্য ও সবর্ণার দুই পুত্র শনৈশ্চর ও যম এবং এক কন্যা কালিন্দী।
ওই পুরাণ অনুসারে, পুষ্করতীর্থে গমনকালে বিশ্বকর্মা কামবর্ধক মনোহর বেশধারী অপ্সরা ঘৃতাচীকে দর্শন করেন। বিশ্বকর্মা তখন সূর্যলোক থেকে ফিরছেন।
স্বভাবতই মন তার প্রফুল্ল। ওই অপ্সরাকে দেখে তিনি কামমোহিত হলেন। ঘৃতাচী স্থির যৌবনা। তার কটাক্ষে সদা চঞ্চলতা। তার মনোমোহিনী রূপ ও কটাক্ষপাতে মুনি ঋষিরা পর্যন্ত কামান্ধ হয়ে পড়েন। কামশাস্ত্রবিদ বিশ্বকর্মা ওই অপ্সরার কাছে গিয়ে বললেন-
-হে সুন্দরী তুমি আমার প্রাণ হরণ করেছ। আমি তোমার অন্বেষণে সমস্ত জগৎ পরিভ্রমণ করেছি। তুমি আমার প্রাণ। তোমা বিনা আমি মৃত। ভেবেছিলাম আত্মহত্যা করব। কিন্তু রম্ভার কাছে সংবাদ পেলাম তুমি কাম ভবনে যাত্রা করেছ, তাই কালবিলম্ব না করে ছুটে এলাম।
একবার চেয়ে দেখ কী মনোরম নির্জন উদ্যান। সরস্বতী থেকে প্রবাহিত হচ্ছে স্নিগ্ধ শীতল বায়ু। এসো আমরা এই পুষ্পোদ্যানে শৃঙ্গারে রত হই। তুমি সুন্দরী
শ্রেষ্ঠা। আর আমি মৃত্যুঞ্জয়ের বর লাভ করেছি। বরুণ আমাকে দিয়েছেন রত্নমালা। কুবেরের প্রাসাদ নির্মাণ করে দিয়েছি, প্রীত হয়ে কুবের দিয়েছেন অফুরন্ত ধনরাজি। পবনদেব দিয়েছেন স্ত্রীরত্নভূষণ। বহ্নিশুদ্ধবস্ত্র সমূহ অগ্নিদেবের কাছ থেকে লাভ করেছি। কামদেবের কাছ থেকে কামিনী মনোরঞ্জক কামশাস্ত্র আর
চন্দ্রের কাছ থেকে রতিবিদ্যা শিক্ষা পেয়েছি। আমার আহরিত সব সম্পদ সুখ সম্ভোগ শেষ হলেই তোমার হাতে তুলে দেব।
বিশ্বকর্মার সুন্দর বাক্যগুলি শ্রবণ করে ঘৃতাচী মৃদু হাসলেন। বললেন- -হে কামপুরুষ! আপনার সব কথা আমি মেনে নিলাম। কিন্তু আপনি মানবেন কিনা জানি না। যেদিন যাঁর উদ্দেশ্যে আমরা গমন করি, সেই দিনের জন্য আমরা তাঁর পত্নী। আজ আপনি কামদেবের জন্য প্রস্তুত, তাই আজ আমি কামদেবের জন্য প্রস্তুত, তাই আজ আমি আপনার গুরুপত্নী। কারণ আপনি নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন যে, কামদেবের কাছে কামশাস্ত্র অধ্যয়ন করেছেন।
বিদ্যাদাতা ও মন্ত্রদাতা গুরু পিতার থেকে লক্ষগুণ এবং মাতার থেকে শতগুণে শ্রেষ্ঠ। অতএব হে বীর্যবান পুরুষ! শাস্ত্র বলে যে নারী মাতৃসমা। তার সঙ্গে দেহ সম্ভোগ করলে কালসত্র নরকে গতি হয়। গুরুপত্নীর সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হলে কুম্ভীপাক নামক ভয়ংকর নরকে গমন হয়। ব্রহ্মার বয়সকাল পর্যন্ত
সেখানে নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। ঘৃতাচী আরও বললেন- —পরপুরুষের সঙ্গে গুরুপত্নী যদি স্বেচ্ছায় রমণ করে তাহলে তারাও একই দোষে দুষ্ট হবে। তাই বলছি আজ আমি কামিনী, কামদেবের ভবনে যাচ্ছি। কামদেবের সঙ্গে রমণ করব বলে। অন্যদিন আপনার ঘরণী সেজে আসব। আজ চলি। ঘৃতাচীর এহেন আচরণে বিশ্বকর্মা অত্যন্ত রুষ্ট হলেন। তিনি তাঁকে ভূতলে শূদ্র যোনিতে জন্মগ্রহণ করার অভিশাপ দিলেন। ঘৃতাচীও ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন, আমার অভিশাপে তুমি স্বর্গভ্রষ্ট হয়ে মর্ত্যে জন্ম নেবে।
বিশ্বকর্মার অভিশাপে ঘৃতাচী মর্ত্যের প্রয়াগধামে জন্ম নিলেন মদন নামে এক গোপের ঘরে। তিনি হলেন জাতিস্মর। ধর্মপরায়ণা এই কন্যা মনোরম গঙ্গাতীরে
তপস্যায় রত হলেন। ক্রমে শতবর্ষ অতীত হলো। কিন্তু তপস্বিনীর শরীরের কান্তি তখনও তপ্ত কাঞ্চনের মতো।
এদিকে ঘৃতাচীর অভিশাপ পেয়ে বিশ্বকর্মা ব্রহ্মার দ্বারস্থ হলেন। ব্রহ্মার পাদবন্দনা করে তাঁর কাছে আদ্যন্ত নিবেদন করলেন। ব্রহ্মার নির্দেশে বিশ্বকর্মা এক
ব্রাহ্মণের ঘরে জন্ম নিলেন।। তিনি ব্রাহ্মণ পুত্র হয়েও শিল্পকর্মে বিশেষ পারদর্শিত হলেন। রাজা ও সম্ভ্রান্তভবনে শিল্পকর্মের জন্য তাঁর ডাক পড়ে। তাঁর খ্যাতি সর্বত্র। সর্বদা তিনি শিল্পসৃষ্টিতে মগ্ন থাকেন।
প্রয়াগ নৃপতির এক শিল্পকর্ম সমাপ্ত করে তিনি একদিন গিয়েছিলেন গঙ্গায় স্নান করতে। তপস্বিনী গোপকন্যাকে দেখে শিল্পীর পূর্বজন্মের কথা মনে পড়ে গেল। এই তপস্বিনী আর কেউ নয়, ঘৃতাচী। তিনি কামানলে দগ্ধ হয়ে ছুটে গেলেন সেই ব্রহ্মচারিণীর কাছে। বললেন-
-হে বরাননে! তুমি ঘৃতাচী, আমি তোমাকে চিনতে পেরেছি। তোমাকে এখানে দেখে আমি আশ্চর্য হচ্ছি। হে সুন্দরী। তুমি আমাকে নিশ্চয়ই চিনতে পেরেছ, আমি বিশ্বকর্মা। আমি তোমাকে গ্রহণ করতে চাই। আমি কামপীড়িত। তুমি এসো, আমার কামনা চরিতার্থ করো এবং শাপমুক্ত হয়ে স্বর্গে গমন করো।
তপস্বিনীরূপী ঘৃতাচী বললেন- -হে বিশ্বকর্মা! এই ত্রিবেণীসঙ্গম প্রয়াগ এক পুণ্যক্ষেত্র। পূর্বজন্মের কথা আমার সব মনে পড়েছে। এই মনোরম গঙ্গাতীরে শৃঙ্গার দান কি সম্ভব? ধর্মপরায়ণ ব্যক্তি তপস্যা বলে মোক্ষলাভ করার উদ্দেশ্যে মর্ত্যে আসেন, বিষ্ণুর মায়ার বাঁধনে আবদ্ধ থেকে নির্দিষ্ট কর্ম করেন। ঈশানমায়া দুর্গাদেবী যার প্রতি সদয় হন, শ্রীকৃষ্ণ তাকে ভক্তি ও ঈপ্সিত মন্ত্র দান করেন। আর সে বিষ্ণুমায়ায় মুগ্ধ হয়ে শ্রীকৃষ্ণের পূজা করতে ভুলে যায়, বিষয়াসক্ত হয়, সে মহামূর্খ।
তপস্বিনীরূপী ঘৃতাচী বললেন- -হে বিশ্বকর্মা! এই ত্রিবেণীসঙ্গম প্রয়াগ এক পুণ্যক্ষেত্র। পূর্বজন্মের কথা আমার সব মনে পড়েছে। এই মনোরম গঙ্গাতীরে শৃঙ্গার দান কি সম্ভব? ধর্মপরায়ণ ব্যক্তি তপস্যা বলে মোক্ষলাভ করার উদ্দেশ্যে মর্ত্যে আসেন, বিষ্ণুর মায়ার বাঁধনে আবদ্ধ থেকে নির্দিষ্ট কর্ম করেন। ঈশানমায়া দুর্গাদেবী যার প্রতি সদয় হন, শ্রীকৃষ্ণ তাকে ভক্তি ও ঈপ্সিত মন্ত্র দান করেন। আর সে বিষ্ণুমায়ায় মুগ্ধ হয়ে শ্রীকৃষ্ণের পূজা করতে ভুলে যায়, বিষয়াসক্ত হয়, সে মহামূর্খ।
হে বিশ্বকর্মা! এখানে পতিতপাবনী গঙ্গা আছেন। অন্য জায়গায় পাপ করলে তা এই গঙ্গায় নাশ হয়। কিন্তু এই গঙ্গাতীরে পাপকার্যে লিপ্ত হলে পাপ শতগুণ বেড়ে যায়। অতএব হে সুশীল! আপনি নিজেকে সংযত করুন।
মলয় পর্বতের চন্দন উদ্যানে নিয়ে গেলেন। সেখানে এক নির্জন স্থানে তাঁরা পুষ্পশয্যায় সম্ভোগে প্রবৃত্ত হলেন। বিশ্বকর্মার শক্তি ঘৃতাচী নিজের গর্ভে ধারণ করলেন। সেখানেই তাঁরা কুটীর নির্মাণ করে গার্হস্থ্য আশ্রম পালন করেন। ক্রমে ঘৃতাচী নয়টি পুত্রের জন্ম দেন। উভয়ে পুত্রদের যত্নসহকারে প্রতিপালন করেন। পুত্ররা বয়ঃপ্রাপ্ত হলে বিশ্বকর্মা ও ঘৃতাচী মানবদেহ পরিত্যাগ করে স্বর্গে ফিরে যান।
পরবর্তীকালে ব্রাহ্মণদের আদেশ লঙ্ঘন করার ফলে বিশ্বকর্মার বংশের অনেকে ব্রহ্মার শাপে পতিত হয়েছিল। এই পতিত সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে মানবজাতির নিত্য প্রয়োজনীয় ও কল্যাণকর বিভিন্ন শিল্পকর্মের সঙ্গে যুক্ত আছেন। এরা বিশ্বকর্মার বংশধর রূপে স্বীকৃত।
চিত্রকরের ঔরসে শুদ্রাণীর গর্ভে অট্টালিকাকারের জন্ম হয়। অট্টালিকাকারের ঔরসে এবং কুম্ভকার কন্যার গর্ভে কোটক জাতির সৃষ্টি। কুম্ভকার ও কোটক রমণীর মিলনে সৃষ্টি হয় তৈলকার জাতির। তীবর জাতি এল ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য রমণীর মিলনের ফলে। তীবর স্ত্রীর গর্ভজাত লেট জাতি। চণ্ডাল জাতির জন্ম দেয় শূদ্র ঔরসে ও ব্রাহ্মণ কন্যার গর্ভ। চণ্ডাল ঔরসে ও চর্মকার গর্ভে মাংসছেদি ব্যাধজাতির জন্ম হয়।
দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার পূজা কোনো তিথি নক্ষত্র মেনে হয় না। ভাদ্র মাসের সংক্রান্তিতে বিশ্বকর্মা পূজা অনুষ্ঠিত হয়। চতুর্ভুজ বিশ্বকর্মার বাহন হাতি। বিশ্বকর্মার উপরের ডান হাতে দাঁড়িপাল্লা থাকে। দাঁড়িপাল্লার দুটি পাল্লা জ্ঞান ও কর্মের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। এক হাতে হাতুড়ি, অন্য হাতে মশাল থাকে। হাতুড়ি শিল্পের প্রতীক এবং মশাল জ্ঞানের প্রতীক। বঙ্গে বিশ্বকর্মার হাতে ঘুড়ি দেওয়ার প্রচলন আছে। বঙ্গে বিশ্বকর্মা পূজায় ঘুড়ি উড়ানোর প্রথা দেখা যায়। এই সময়ে বর্ষা বিদায় নেয়। আকাশ নির্মল থাকে, ঘুড়ি ওড়ানোর প্রকৃষ্ট সময়। সাধারণত কল-কারখানা এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানে দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার পূজা হয়ে থাকে। তবে ইদানীং পূজার আচার, নিষ্ঠা থেকে উদ্যোক্তাদের বিশ্বকর্মা তখন ঘৃতাচীকে অদৃশ্যভাবে আড়ম্বরের দিকে বেশি ঝোঁক দেখা যায়।