পূজা কমিটিও দুধেল গাই!
ভোটক্রেতাযু দিদি,
আপনার থেকে ভোট কী করে কেনা যায় তা শিখতে হবে। এই যে দুর্গাপূজা আসছে, সেটাকেও আপনি ধাপে ধাপে ভোট কেনার মেশিন বানিয়ে ফেলেছেন।
তাই পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপূজা আসা মানেই পাপও আসছে। এই কথাটা শুনে অবাক লাগছে? লাগবে না দিদি। বাঙ্গালির চরিত্র নষ্ট করে দিতে কীভাবে আপনার সরকার দুর্গাপূজাকে কাজে লাগিয়েছে তা আমি স্পষ্ট করে দিতেই এই চিঠি লিখছি। এত কিছু রয়েছে এর মধ্যে যে আমাকে অন্যদিনের তুলনায় একটু বড়ো চিঠিই লিখতে হবে। কষ্ট করে পড়ে নেবেন প্লিজ।
এ বার দুর্গাপূজার ক্লাবগুলিকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। আপনার ঘোষণার দিন আমার প্রথমেই মনে হয়েছিল, আমার প্রয়াত পিতা কেন
আমার জন্য পর্যাপ্ত টাকা রেখে গেলেন না। সত্যি বলছি দিদি, আমি ভোগ করতাম না। আপনার মতো করে দরিদ্র মানুষদের বলতাম, বলুন কতো চাই? হাজার হাজার টাকা এইভাবে বিলিয়ে দিতাম। না দিদি, আপনি একদমই এটা ভাববেন না যে, আমি আপনাকে ‘বাবার টাকা’ কিনা সেই প্রশ্ন তুলছি। আমি শুধু এটাই বলতে চাইছি যে, পৈতৃক সম্পত্তি না থাকলে কি এমন উদার হস্তে এবং উদার কণ্ঠে দানধ্যান করা যায় বলুন! তবে যেভাবে পূজার সঙ্গে
দুর্নীতি এবং পাপের মিশেল ঘটানো হয়েছে আপনার আমলে তার জুড়ি মেলা ভার!
আপনার দেওয়া টাকা নিয়ে একটা বড়ো মুশকিল কী জানেন? ওই টাকা আদৌ পূজায় খরচ করা যায় না। প্রতিমা কেনা দূরে থাক, সিদ্ধি-সিঁদুর কেনার
দশকর্মার ফর্দকেও ওই অর্থ খরচের হিসাবে দেখানো যায় না। নিয়ম অনুযায়ী, পুরোহিতকে দেওয়া দক্ষিণা বা ঢাকির খরচও সরকারি অনুদানের অর্থে করা যায় না। পুরোটাই পাপের টাকা যে। সরকারি অর্থ হলো রাজ্যের করদাতা বা জনগণের টাকা। সেই টাকা অপচয় করা অপরাধ নয়, পাপ।
সংক্ষেপে, এই অনুদানের ইতিহাসটা একবার মনে করাই আপনাকে। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরের বছর আপনি গোটা রাজ্যের মধ্যে থেকে বাছাই করা
কিছু ক্লাবকে পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য আর্থিক অনুদান ঘোষণা করেছিলেন। বাছাই করা ক্লাবগুলি প্রথম বছরে এককালীন ২ লক্ষ টাকা এবং পরবর্তী ৩
বছর ১ লক্ষ করে মোট ৫ লক্ষ টাকা পেত। যদিও কোভিড পর্বে ২০২০ সাল থেকে ওই প্রকল্পে অর্থ দেওয়ার কাজ স্থগিত রাখা হয়। ২০২৩ সালে তা পুরোপুরি বন্ধও করে দেওয়া হয়েছে।
তার আগেই দিদি আপনি, রাজ্যের পূজা উদ্যোক্তাদের ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া শুরু করেছিলেন ২০১৮ সালে। তখনই পূজা বাবদে বিদ্যুতের বিলে ২৫ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে অনুদানের পরিমাণ বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা এবং ২০২১ সালে এক লাফে ৫০ হাজার টাকা করা হয়। ২০২২ সালে তা বেড়ে ৬০ হাজার এবং ২০২৩ সালে ৭০ হাজার টাকা করা হয়। পরের বার মানে ২০২৪ সালে এই অনুদান বেড়ে হয়েছে ৮৫ হাজার টাকা। তার পরে এ বার একেবারে লাখ টপকে গিয়েছে। এক লাখ দশ হাজার। শুনলাম আপনার ঘোষণার পর অর্থ দপ্তর জানতে পেরেছে যে, এই
বাবদ ৪৭৩ কোটি টাকা খরচ করতে হবে। গত বারের থেকে ১০০ কোটি বেশি। দিদি এটাও মনে রাখতে হবে যে, শুরুতে ক্লাব ছিল ২৮ হাজারের মতো।এখন বেড়ে সেটা ৪৩ হাজারের বেশি। কীভাবে এই টাকার ব্যবস্থা হচ্ছে সেটাও বলব নাকি দিদি?
বলেই দিই। পূজা কমিটিদের বিদ্যুৎ বিলে ৮০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার জন্য সিইএসসি এবং রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন পর্ষদকে বলেছেন আপনি। রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ না হয় লোকসান মেনে নেবে। কারণ, এই রাজ্যে আপনার মর্জি ইজ ইকোয়াল টু রাজ্য সরকারের নীতি। কিন্তু বেসরকারি সিইএসসি কেন লোকসান মানবে বলুন তো? হয় তারা অন্যভাবে সুবিধা নেবে কিংবা সাধারণ গ্রাহকের বিল বাড়িয়ে দেবে।
এই অনুদান নিয়ে একাধিক মামলা হয় কলকাতা হাইকোর্টে। প্রথমবার, ২০১৮ সালে সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়
কলকাতা হাইকোর্টে। সেই সময়ে, রাজ্যের পক্ষে আদালতে জানানো হয়েছিল, দুর্গাপূজা উদ্যোক্তাদের এই টাকা দেওয়া হচ্ছে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ প্রকল্পের প্রচারের জন্য। কেউ বুঝতে পারেনি সেই দাবির কথা। আসলে এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে রাজ্য সরকার নিশ্চিত করে দেয় যে, প্রতিটি মণ্ডপে আপনার ছবি থাকবে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গ বা কলকাতা পুলিশের ওই বিজ্ঞাপনে বড়ো জায়গা জুড়ে থাকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ। ঠাকুর দেখার সঙ্গে মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়-দর্শন ফ্রি। আপনার বুদ্ধির তুলনা হয় না। আমার যে একটা দিদি আছেন, সেটা ভেবে না আমার কেমন একটা গর্ব হয়। ঠিক গর্ব নয়, অহংকার বলতে পারেন।
কিন্তু আপনি এটাকে দুর্গাপূজার টাকা বললেও পূজায় কি তা খরচ করা যায় না? একটি মামলার প্রেক্ষিতে ২০২২ সালে কলকাতা হাইকোর্ট কিছু শর্তও বেঁধে দেয় রাজ্যকে। শর্তে বলা হয়েছিল, অনুদানের অর্থব্যয় সংক্রান্ত নথি হাইকোর্টে জমা দিতে হবে। তিন মাসের সময় দেওয়া হয়েছিল রাজ্যকে। কিন্তু সেই নথিপত্র দেওয়া হয়েছিল কি?
নিয়ম অনুযায়ী এখন পুলিশের ‘আসান’ অ্যাপের মাধ্যমে আবেদন করতে হয় এই টাকা পাওয়ার জন্য। গোটা রাজ্যে যত দুর্গাপূজা রয়েছে, তাদের স্থানীয়
থানায় হিসাব জমা দিতে হয় পূজার পরে। কিন্তু আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও বছরের পর বছর সেই টাকা খরচের যথাযথ হিসাব জমা পড়ে না। অডিট ছাড়াই টাকা দেওয়া হয়। ব্যয়ের হিসাব খতিয়ে দেখে সিএজি রিপোর্ট দিক বলে আদালত নির্দেশ দিলেও তা মানা হয় না। হিসাবপত্র প্রতিবারই থেকে যায় অন্ধকারে। অভিযোগ, পূজার পরে মামলাও চলে যায় ঠাণ্ডা ঘরে। এ বারও যথাযথ হিসাব মিলবে তো? আমি বলে রাখি দিদি, হিসাব মিলবে না। কারণটা কিন্তু সেই হিসাব দেওয়ার পদ্ধতিতেই লুকিয়ে রয়েছে। জাল বিল দিয়েই হিসাব দিতে হয়। কোনো অডিট হয় না।
সাধারণভাবে ছোটো পূজার ক্ষেত্রে অনুদানেই মিটে যায় প্রায় সব খরচ। প্রতিমা থেকে মণ্ডপ, প্রসাদ থেকে আলো- সব খরচ হয়ে যায় রাজ্যের অনুদানে। কিন্তু হিসাবে তা দেখালে চলে না। করোনার সময়ে তবু মাস্ক, স্যানিটাইজারের খরচ দেখানো গিয়েছিল। মিথ্যা কম্বল বিলি থেকে আরও নানা কাজকর্মের জাল বিল বানিয়ে জমা দিতে হয়। দিলেই হলো। কেউ পরীক্ষা করে না। পুলিশ এবং আপনার সরকার সবটা বোঝে। খুঁটিয়ে প্রশ্ন করা হয় না। এ টাকার
যেন কোনো হিসাবই হয় না। জনসাধারণের করের টাকা তো কী হয়েছে? আপনি বলেছেন, অতএব হবে না। হিসাব টিসাব হবে না। অডিট ফডিটের
কোনো প্রশ্ন নেই।
এমনি এমনি নাকি! কেউ জানে কতো বুদ্ধি করে এই টাকা দেওয়ার জন্য রাজ্য বারবার মিথ্যা বলেছে আদালতেও? ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে কলকাতার
দুর্গাপূজাকে ‘হেরিটেজ’ তকমা দেওয়ার কথা তুলে ধরে রাজ্য জানায় যে, এটা শুধু রাজ্য নয়, দেশের জন্যও গর্বের বিষয়। রাজ্য সরকার হলফনামায় জানায়, সংবিধানের ৫১(এ) ধারা অনুযায়ী ‘হেরিটেজ’ রক্ষার দায়িত্ব দেশের প্রত্যেক নাগরিকের। সেই মোতাবেক রাজ্য সরকারের কাছে প্রত্যাশা করা হয়, তারা যেন এগুলির সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করে। দুর্গাপূজার দিনগুলিতে পূজা ও উৎসব মসৃণভাবে পরিচালনার জন্য ওই অর্থ বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু দিদি, আদৌ তো পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপূজাকে ‘হেরিটেজ’ তকমা দেয়নি ইউনেস্কো। কলকাতার দুর্গাপূজা পেয়েছে এই স্বীকৃতি। তাহলে গোটা রাজ্যে এত খরচ কেন? ক্লাব মানে ভোট কেনা নাকি! এসব প্রশ্ন কিন্তু আমার নয় দিদি। আমি আপনার একান্ত অনুগত ভাই। আমি তো আপনি যা বলেন সেটা বেদে লেখা রয়েছে বলেই মনে করি।
তবে দিদি, এই টাকা জোগাড় করার পথটা কিন্তু কেমন যেন পাপের। এই রাজ্যে আয় বাড়ানোর একটাই পথ। সেটা হলো, মদ বিক্রি। বাম জমানার শেষ বছর মানে ২০১০-১১ অর্থবর্ষের বাজেটে আবগারি বিভাগ থেকে ১ হাজার ৭৬০ কোটি টাকার মতো। আর নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার প্রথম ন’বছরে, মানে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষেই সেই রোজগারকে রাজ্য সরকার নিয়ে যায় ১১ হাজার কোটিতে।
ওদিকে ২০১৮ সাল থেকে দুর্গাপূজায় অনুদান দেওয়া শুরু হয়। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার আগে ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে আবগারিতে রাজ্যের রাজস্ব
আদায় হয়েছিল প্রায় ৩,৮৫৭ কোটি টাকা। এরপর প্রতি বছর সেই রাজস্ব কম-বেশি ২১ শতাংশ করে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে পৌঁছেছিল ১৩,৫৪৩ কোটি টাকায়। সর্বশেষ যে বাজেট তাতে রাজ্য সরকারের রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্য হলো সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা। আগে মদ থেকে আয়ে ভাগ বসাত ডিস্ট্রিবিউটররা। এখন সরকারই রাজ্যের একমাত্র ডিস্ট্রিবিউটর। সরাসরি দোকানদারকে মদ বিক্রি করে। ফলে লাভ বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ‘এগিয়ে বাংলা’ স্লোগানটা কিন্তু দারুণ দিদি!
এবার অনেকে প্রশ্ন করবেন, মদ বিক্রির সঙ্গে দুর্গাপূজার কী সম্পর্ক? হে হে বাওয়া! ওখানেই তো দিদির বুদ্ধি। পশ্চিমবঙ্গের শ্রেষ্ঠ উৎসব আবগারি
দপ্তরের জন্যও শ্রেষ্ঠ সিজন। আর আমার দিদি মুখ্যমন্ত্রী একটা মস্ত সুবিধা করে দিয়েছেন। আগে পূজা মূলত শুরু হতো মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যা বা মহাসপ্তমীর সকাল থেকে। মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যাতেও মণ্ডপ তৈরির কাজ চলত। এখন মহালয়ার আগে থেকেই উদ্বোধন শুরু করে দেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী, মানে আমার গর্বের দিদি। সেই থেকেই উৎসবের আমেজ শুরু। ওদিকে পূজা একেবারে লক্ষ্মীপূজার আগে গিয়ে কার্নিভ্যাল দিয়ে শেষ। ফলে পূজা এখন কমপক্ষে দশ দিনের। ফলে ফুর্তিও দশ দিনের। রাজ্য সরকারের গোপন স্লোগান- ঢুকু ঢুকু পিও, আর যুগ যুগ জিও। মনে রাখবেন, পূজায় জামাকাপড়ের বাজার খারাপ যেতে পারে, কিন্তু মদের একেবারেই নয়। পূজা লম্বা মানেই মদ বিক্রি বেশি। রাজ্যে প্রায় ৪৫ হাজার পূজা। প্রতিদিন বারোয়ারি পিছু দু’হাজার টাকার মদ বিক্রি হলেই দেখুন না লাভের অঙ্কটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। হিংসা করবেন না। বরং, আমার দিদির বুদ্ধির তারিফ করুন।
একটু অপ্রিয় কথা বলি দিদি! রাগ করবেন না প্লিজ। আপনার দল তৃণমূল ক্ষমতায় এসে না পশ্চিমবঙ্গের সব মানুষকে, বাঙ্গালি জাতিটাকেই ভিখিরি
মনে করে। আপনিই গর্ব করে বলেন, জন্ম থেকে মৃত্যু সবেতে আমি ভাতা দিই। কতটা অহংকারের ঘোষণা বলুন তো! ‘আমি দিই।’ কার পয়সায় দিই? তোমার পয়সায়, তোমারই করের টাকায় তোমায় ভিক্ষা দিই। আর তুমি তা হাত পেতে নাও। লজ্জা নেই তোমার।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের কথা মনে এলো। ভাবুন তো এই ভাণ্ডারে লক্ষ্মীদের প্রতি কোনো সম্মান রয়েছে? এই ভাণ্ডারের সঙ্গেই যুক্ত অলক্ষ্মীর কথা। সিঁথির সিঁদুর
মুছে গেলে বিধবা ভাতা পেতে আবেদন লাগে না। সরকার দেয়, তাই হাত পেতে নেওয়া হয়। স্বামী, সন্তান মদ খেয়ে সরকারের রোজগার বাড়ান। সংসারে
অত্যাচার বাড়ান। আর সেই মদ থেকে লাভের টাকা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। কতো বড়ো অপমান ভাবুন তো! কতো বড়ো ভিখিরি বানিয়ে দেওয়া।
পিতা বা মাতার মৃত্যু হলে শ্মশানে দাহ করার জন্য সরকার এককালীন দু’হাজার টাকা দেয়। প্রকল্পের নাম- সমব্যথী। কে জানাতে বলেছে এমন
সমবেদনা? কাজ দাও না কাজ। এমন কাজ যাতে পিতা, মাতা স্বর্গত হলে তাঁদের দাহকাজটা যাতে নিজের পয়সায় করা যায়। ২০১৬ সালে এই প্রকল্প চালু
হয় দিদি। আপনিই বলুন, তার আগে বাঙ্গালির ঘরে কারও মৃত্যু হলে দাহ হতো কী করে? কখনও কি এমন হয়েছে যে, পয়সার অভাবে কারও দাহকাজ আটকে গিয়েছে? প্রতিবেশী, আত্মীয়েরাই তো এগিয়ে এসেছেন চিরকাল। কিন্তু বাঙ্গালিকে ভিখিরি বানাতে হবে তো। দাও না ওকে দু’হাজার টাকা। দিয়ে দাও। তাতে গোটা পরিবারটাকে কিনে নেওয়া যাবে।
দেবী দুর্গাকে কতো আদরে ঘরের মেয়ে মনে করে বলুন তো বাঙ্গালি? এরপরে হয়তো জামাইষষ্ঠীতে বাজার করার টাকাও দেবে আপনার সরকার। হ্যাঁ, উমা তো আমাদের কন্যারূপেও আসেন।
ভাবুন তো কোনো দিন কোনো পাড়ায় টাকার অভাবে দুর্গাপূজা আটতে থেকেছে? বরং, কখনও বন্যা হলে পূজা কমিটি বাকি খরচ কমিয়ে সেবায় মন
দিয়েছে। কখনও তাদের হাত পাততে হয়েছে? স্বামীজী, নেতাজীর বাঙ্গালি জাতিকে শুধু ব্যক্তিগতভাবে নয়, এখন সর্বজনীনভাবেও ভিখিরি বানাতে পেরেছে এই সরকার পূজার টাকা দিয়ে।
এতো এতো শ্রী প্রকল্প দিদি, তবু শ্রীহীন এই রাজ্যে আজকের দিনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থাকলে তিনি নতুন করে বঙ্গমাতা কবিতাটা লিখতেন। হয়তো এইভাবে শেষ করতেন- দশ কোটি সন্তানেরে, হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ ভিখিরি করে, মানুষ করনি।