অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত ও বিতাড়নের উদ্দেশ্যে অবিলম্বে এনআরসি-র প্রয়োজন
রবীন্দ্রনাথ দত্ত
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সহকর্মী ফিরহাদ হাকিম অনবরত হুমকি দিচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গে সিএএ এবং এনআরসি করতে দেবেন না, নাগরিকত্ব কাড়া হলে জীবন দিয়ে রুখবেন। এখানে যারা বাস করছেন তারা সকলেই এদেশের নাগরিক। তৃণমূল সরকার এবং সেকুলার পন্থীদের অবগতির জন্য কিছু তথ্য তুলে ধরছি:
(১) ১১.৪.২০২০ ফাঁসি হয়ে গেল মুজিব খুনি আবদুল মাজেদের। সে ২৩ বছর কলকাতায় আত্মগোপন করে ছিল- যুগশঙ্খ ১২.৪.২০।
(২) পশ্চিমবঙ্গে ৪০ বছর ধরে পাকাপাকি ভাবে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল মুজিব হত্যার চাঁই রিসেলদার মোসলেউদ্দিন। সে গোবরডাঙ্গার চাঁদপাড়া এলাকায় দত্ত ডাক্তার নাম ধারণ করে একটি আয়ুর্বেদ ফার্মেসি চালাত, যুগশঙ্খ ৭.১১.২১, (পরে তাকে গ্রেপ্তার করে শেখ ৫.৫.২০১৪। হাসিনা ফাঁসি কাঠে চড়ায়)।
(৩) অনুপ্রবেশ রাজনীতি- দৈনিক স্টেটসম্যানের সম্পাদকীয় ২৯.৩.২০০৭ টা পড়ে দেখতে অনুরোধ করছি মুখ্যমন্ত্রী এবং ফিরহাদ হাকিম সাহেবকে।
(৪) ১২ লক্ষ বাংলাদেশি দেশে ফেরেনি বলছে বিএসএফ, আনন্দবাজার পত্রিকা ১৮.১.২০০৬।
(৫) যেসব বাংলাদেশি ঢুকেছে তাদের ফেরত পাঠাতে নিষেধ করেছি- জ্যোতি বসু। বর্তমান ২.৪.১৯৯৩।
(৬) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরোর রিপোর্ট- রাজ্যে ৭০ লক্ষ অনুপ্রবেশকারী: ব্যাপক হারে জাল সার্টিফিকেট নিয়ে এদেশে এসে মিশে যাচ্ছে বাংলাদেশিরা, বর্তমান ২০.৪.২০০৪।
(৭) অনুপ্রবেশকারী নিয়ে মন্তব্য, মোদীর গ্রেপ্তার চান মমতা। আনন্দবাজার পত্রিকা
(৮) অনুপ্রবেশকারীদের দখলে চলে যাচ্ছে কলকাতা- মায়ের ডাক ১০.২.২০০৬।
(৯) সম্পাদক সমীপেষু আনন্দবাজার পত্রিকা ১৩.৩.১৯৯৬, অনুপ্রবেশ নিয়ে ৫ জন বিদগ্ধ বাঙ্গালির পত্র যার মধ্যে ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ থেকে জনৈক ডক্টরেটের পত্রও আছে, অবশ্যই পাঠ্য।
(১০) ৩০ লক্ষ বাংলাদেশি পশ্চিমবঙ্গে। আনন্দবাজার পত্রিকা ৩১.৭.১৯৯০।
(১১) কত বেআইনি বালাদেশি? পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যের কাছে তথ্য চাইবে কেন্দ্র ২০১১-র জনগণনা প্রক্রিয়া শুরু- বর্তমান ৬.১০.২০০৯।
(১২) অনুপ্রবেশ-২ ‘সম্পাদক সমীপেষু’ আ: বা: প: ১৪.৩.১৯৯৬
(১৩) সবিনয় নিবেদন- দি স্টেটস ম্যান ৮.১০.২০০৮।
(১৪) বৃহত্তর বাংলাদেশ গঠনের ছক? করে বাস করছেন কেউ-বা আছে ফুটপাতে।বর্তমান ২২.১০.২০১৪।
(১৫) অনুপ্রবেশ – সীমান্তরক্ষী বাহিনীর চোখ এড়িয়ে রোজ হাজার হাজার লোক ঢুকছে বাংলাদেশ থেকে। পশ্চিমবঙ্গে মিশে যাচ্ছে এপার পশ্চিমবঙ্গের জনারণ্যে। সেই সঙ্গে সীমান্ত অঞ্চলে চলছে অবাধ চোরা কারবার, ফটো-সহ একপৃষ্ঠাব্যাপী আনন্দবাজার পত্রিকায় ২৭.৩.১৯৯১ লিখেছেন তাপস সিংহ।
(১৬) বেপরোয়া মোহাজির- রাজ্য প্রশাসনের হেডকোয়ার্টার্স রাইটার্স বিল্ডিংস থেকে প্রায় ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করছে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের একটি সংগঠন। আর সেই খবরটি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পাননি রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব মণীশ গুপ্ত। সাংবাদিক বৈঠকটি ডেকেছে অনুপ্রবেশকারীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ মোহাজির সঙ্ঘ’। সাংবাদিকরা অবাক হয়ে দেখেছেন উদ্যোক্তারা তাদের সমর্থনে এক বিরাট মিছিল এনে হাজির করেছে। সঙ্ঘের সভাপতি রইসউদ্দিন বিশ্বাস দাবি তুলেছে তারা চায় ভারতের নাগরিকত্ব এবং খেয়ে পরে বাঁচতে। সঙ্ঘের উদ্যোক্তরা পরিষ্কার ভাষায় স্বীকার করেছেন কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে এক লক্ষ বাংলাদেশি ঝুপড়ী করে বাস করছেন কেউ-বা আছে ফুটপাতে। সঙ্ঘের নিজস্ব হিসেব অনুযায়ী সারা ভারতে এই অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা পাঁচ লক্ষ। আনন্দবাজার পত্রিকা ২৭.৩.১৯৯১।
(১৭) দিল্লির জনৈক আইনজীবী কেতন দত্ত কর্তৃক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের এদেশ থেকে বিতাড়নের পরিপ্রেক্ষিতে একটি মামলা দায়ের করার পর দিল্লি হাইকোর্ট বার বার ভর্ৎসনা করার পরও দিল্লির কংগ্রেস সরকার এবং কেন্দ্রীয় কংগ্রেস সরকার নানা অজুহাতে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়নের কোনো ব্যবস্থাই করেননি। বরং তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিবরাজ পাতিল বলেন মানবিকতার কারণে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের তাড়ানো সম্ভব নয়, আনন্দবাজার পত্রিকা ১৭.৫.২০০৫।
(১৮) ভারত সরকারের এক গোপন রিপোর্টে প্রকাশ দিল্লির ৩০টি বিধানসভা কেন্দ্র এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ও পশ্চিমবঙ্গের ২৫টি লোকসভা কেন্দ্র এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের ও পশ্চিমবঙ্গের ২৫টি লোকসভা কেন্দ্রের ভোটের ফলাফল নির্ভর করে অনুপ্রবেশকারী মুসলমানদের দ্বারা। সম্পাদকীয় বর্তমান ১০.৮.২০০৮।
(১৯) আমাদের পাড়ায় জনৈক ছাতা মেরামতকারী আসেন, বাড়ি বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায় ওখানেও স্ত্রী-পুত্র-কন্যা আছে। উত্তর ২৪ পরগনায় তালাক প্রাপ্তা এক মুসলমান মহিলাকে সাদি করে নিয়েছেন এখানেও পুত্র কন্যা আছে। সে আমাকে বলেছে এখানেও তার ভোটার কার্ড এবং আধার কার্ড আছে। বাংলাদেশ যাওয়ার সময় কোনো পাসপোর্ট ভিসার প্রয়োজন হয় না।
(২০) সবচেয়ে মারাত্মক যে ঘটনা সেটা হলো ১৯৭১-এর বংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় যে রাজাকাররা বাংলাদেশে ৩০ লক্ষ লোককে নৃশংসভাবে খুন করেছিল এবং ৪ লক্ষ মহিলাকে দিনের পর দিন আটক রেখে ধর্ষণ করেছিল তারা সব এখন ইসলামপুর, পূর্ণিয়া করিডোর দিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাষ্ট্রসঙ্ঘের বদান্যতায় এদের জন্য বিশাল বিশাল শেড তৈরি হয় এবং বাংলাদেশ সরকার এদের ওখানে থাকার ব্যবস্থা করে। কথা ছিল এদেরকে পাকিস্তান সরকার সেদেশে নিয়ে যাবে। কিন্তু পাকিস্তান সরকার একজন রাজাকারকেও ফেরত নেয়নি। এরা সব ভারতে ঢুকে পড়েছে এবং স্থানীয় মুসলমান এবং ভোটলোভী রাজনৈতিক নেতাদের সহায়তায় ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরি করে ভারতের নাগরিক হয়ে
গেছে। এদের হাতেই এখন আমাদের সরকার গড়ার চাবি কাঠি।
(২১) মুখ্যমন্ত্রী উবাচ সংখ্যালঘু ভাই-বোনদের বলছি আমরা আপনাদের ভোটের কথা ভেবেই বিজেপিকে ছেড়েছি। এবার আমাদের দেখুন। দেশ ২.৩.২০০৮।
(২২) মোদীজীর বক্তব্যের পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘যারা ঘৃণা ছড়াচ্ছেন হিংসায় উসকানি দিচ্ছেন, তাদেরকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না? পশ্চিমবঙ্গের একটা মানুষের গায়ে হাত তুলতে দেব না। নির্বাচন কমিশনকে বলব, তাকে গ্রেপ্তার করুন কোমরে দড়ি দিয়ে নিয়ে যাক। তৃণমূল নেত্রীর চ্যালেঞ্জ আমি এখনও বলছি একটা লোকের গায়ে হাত দিয়ে দেখ, কে শরণার্থী, কে অনুপ্রবেশকারী তা তুমি বলার কে? এরা সবাই নাগরিক, বাংলাদেশের যুদ্ধের আগে এসেছেন। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে থেকে এসে একথা কেউ বলতে পারেন না।