একটি মেয়ের কুড়িটি চিঠি
মৃত্যুপুরীর সঞ্জীবনী
একটি মেয়ে ৩৭ বছর বয়স। এখন সে পরিণত। এটা বুঝতে পারার জন্য যে মাত্র ৬ মাস বয়সে যখন সে মাতৃহারা হয়, যখন তার মায়ের ৩১ বছর বয়স। কী মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে কষ্ট পাচ্ছিল তাঁর মা। তিনি মুক্তি পেতে চেয়েছিলেন আর শাস্তি দিতে চেয়েছিলেন তাঁর স্বামী সেই দেশের সবথেকে শক্তিশালী মানুষটিকে। সেই মানুষটি এই ৩৭ বছরের মেয়েটির বাবা সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বাধিনায়ক জোসেফ স্তালিন।
তৃতীয় পর্ব
পিন্টু সান্যাল
শ্বেতলানাকে ঘিরে ছিল এক ঘূর্ণিঝড়- বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের ঘূর্ণিঝড়। স্তালিন সাম্যবাদী সমাজ রচনার মরীচিকার পিছনে দৌড়াচ্ছিলেন আর সোভিয়েত সমাজের লক্ষ লক্ষ পরিবারের মতোই তার নিজের মেয়ের জীবনেও নেমে আসে নিঃসঙ্গতা।
অ্যানা সের্গেয়েভনা আলিলুয়েভা ছিলেন নাদেঝদা আলিলুয়েভার বড়ো বোন, শ্বেতলানার মাসি। পরিবারের জ্যেষ্ঠ কন্যা হিসেবে অ্যানা ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও বুদ্ধিমতী। তাঁর ভাই-বোনদের মতো তিনিও বলশেভিক আন্দোলনের প্রতি আকৃষ্ট হন।
শ্বেতলানার আত্মকথায় তার মাসির করুণ পরিণতির কথা জানা যায়। অ্যানা, স্তানিস্লাভ রেডেন্স-কে বিয়ে করেন, যিনি NKVD (সোভিয়েত গোপন পুলিশ)-এর একজন সিনিয়র কর্মকর্তা এবং স্তালিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। রেডেন্স ছিলেন স্তালিনীয় নিরাপত্তা সংস্থার একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি, যিনি ইউক্রেন ও পরবর্তীকালে মস্কোতে NKVD-র প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এক সময়, অ্যানা ও রেডেন্স সোভিয়েত অভিজাতদের মতো স্বচ্ছল ও সুবিধাপ্রাপ্ত জীবনযাপন করছিলেন। তাদের একটি কন্যা সন্তান ছিল এবং তারা স্তালিনের অন্তরঙ্গ বৃত্তের অংশ ছিলেন। তবে ১৯৩০-এর দশকে রাজনৈতিক পরিবেশ অন্ধকার হয়ে উঠলে, তাদের ভাগ্যে নেমে আসে এক করুণ পরিণতি। ১৯২৬ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পলিটব্যুরোর ৭ সদস্যের (জোসেফ স্তালিন, নিকোলাই বুখারিন, মিখাইল তমস্কি, গ্রিগরি জিনোভিভ, লিওন ট্রটস্কি, লেভ কেমনেভ আর আলেক্সেই রেকভ) মধ্যে ১৯৪০ সাল আসতে আসতে একমাত্র বেঁচে ছিল স্তালিন। সমাজকে ‘শ্রেণী সংগ্রাম’-এ রক্তাক্ত করা কমিউনিস্টরা নিজেদেরই ক্ষমতা দখলের জন্য রক্তাক্ত করছিল সেই সময়।
১৯৩৪ সালের ডিসেম্বরে সার্গেই কিরভ লেনিনগ্রাদে এক আততায়ীর হাতে প্রাণ হারান। অনেকে বলেন এই হত্যাকান্ডের পিছনেও স্তালিনের হাত ছিল। স্তালিনের কাছে সুযোগ এসে গেল বিরোধী কণ্ঠস্বরকে বিলুপ্ত করার। “The Great Purge’ নামের বিশ্বের বৃহত্তম রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে প্রায় সাত লক্ষ মানুষকে নিকেশ করে স্তালিন। কিন্তু বিশ্বমঞ্চে স্তালিনের পাশবিক রূপ ঢাকতে অন্যান্য দেশের কমিউনিস্ট নেতাদের চেষ্টার খামতি ছিল না। মস্কোয় ১৯৩৫ সালের কংগ্রেসে ফ্রান্সের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মরিস ঘোরেজ ব্যাখ্যা করেন কীভাবে স্তালিন শ্রমিকদের গর্বিত করেছেন।
১৯২৬ সাল থেকেই বিরোধীদের ‘জিনোভিভাইটস্’ অথবা ‘ট্রটস্কাইটস্’ তকমা দিয়ে পার্টি থেকে বিচ্ছিন্ন করার কাজ শুরু করে স্তালিন। গোপন পুলিশকে শুধু প্রতিবিপ্লবীদের শায়েস্তা করতে ব্যবহার করা হয়নি বরং পার্টির অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্যকে দমন করতেও ব্যবহার করা হয়েছিল। ‘শ্রেণী সংগ্রাম’ তত্ত্ব দিয়ে শুধু সমাজকেই ভাগ করা হয়নি, যে কোনো মতপার্থক্যকে দমন করতে পার্টির অভ্যন্তরেই প্রতিনিয়ত রক্তাক্ত সংগ্রাম চলছিল। গোপন পুলিশ একসময় লেনিনগ্রাদে জিনোভিভের নেতৃত্বে কমিউনিস্ট পার্টি থেকে বিরোধীদের নিশ্চহ্ন করেছিল আর এবার দাঁড়াল জিনোভিভের সমর্থকদের নিশ্চিহ্ন হওয়ার পালা। ১৯২৭ সালেই সমস্ত প্রধান নেতা ট্রটস্কি, জিনোভিত, কেমনেভ, রাডেক, রাকোভস্কি পার্টি থেকে বহিষ্কৃত ও গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
১৯৩৬ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত NKVD-র প্রধান হিসেবে নিকোলাই ইয়েজহভের সময় সাধারণ মানুষ থেকে পলিটব্যুরো পর্যন্ত অত্যাচারের শিকার হয়েছিল। লেনিনের খ্যাতিমান সঙ্গীদের প্রত্যেকেই সোভিয়েত সরকার বিরোধী কাজকর্ম, অন্তর্ঘাত, সোভিয়েত ইউনিয়নকে ভাঙার চক্রান্তে জড়িত থাকা, সোভিয়েতের নেতাদের হত্যার চক্রান্তে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি দেয়। মস্কোতে প্রথম সারির নেতাদের বিচারের নাটক, সোভিয়েত রাশিয়ায় ঘটে চলা সামাজিক উৎপীড়ন থেকে নজর ঘোরাতে সহায়ক হয়েছিল।
স্তালিনের প্রতি সম্পূর্ণ অনুগত থাকা সত্ত্বেও রেডেন্সকে গুপ্তচরবৃত্তি এবং সোভিয়েত বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। এই অভিযানের সময়, স্তালিন প্রায়শই তার নিকটতম সহযোগীদের বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র করতেন, যাতে তিনি তার ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেন এবং সম্ভাব্য বিরোধীদের নির্মূল করতে পারে।
১৯৩৮ সালে স্তানিস্লাভ রেডেন্সকে NKVD গ্রেপ্তার করে। প্রথমে, অ্যানা বিশ্বাস করতে পারেননি যে তার স্বামী একজন দেশদ্রোহী হতে পারেন। অন্যান্য স্ত্রীর মতো তিনিও হয়তো তার মুক্তির জন্য আবেদন করেছিলেন, কিন্তু এই ধরনের আবেদন প্রায়ই পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলত। শ্বেতলানার বিবরণ থেকে তার জীবনের উপর এই গ্রেপ্তারের প্রভাব জানা যায়- ‘আমার মাসিমা অ্যানা এবং তাঁর ছেলে-মেয়েরা মস্কোতে চলে এলেন রেডেন্স গ্রেপ্তার হওয়া পর। অন্যদের স্ত্রীরা যেভাবে সবকিছু হারিয়েছিলেন, তার বিপরীতে মাসিমাকে তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে থাকতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে আমাদের বাড়িতে আসার অনুমতি আর দেওয়া হয়নি। আমি তখন মাত্র এগারো বছর বয়সি, তাই বুঝতে পারিনি ঠিক কী ঘটেছে। সবাই কোথায় চলে গেল? বাড়িটা এত ফাঁকা কেন? ‘স্তানিস্লাভ কাকু খারাপ মানুষ’- এই ধরনের অস্পষ্ট গুজবগুলো আমার কাছে কোনো অর্থ বহন করত না। শুধু এতটাই বুঝতাম যে বাড়িটা ক্রমশ আরও বেশি শুনশান হয়ে উঠছে, আর আমার জীবনে এখন কেবল স্কুল আর আমার স্নেহশীলা আয়া ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই’।
রেডেন্সকে নির্যাতন করা হয় এবং জোরপূর্বক মিথ্যা স্বীকারোক্তিতে স্বাক্ষর করানো হয়। ১৯৪০ সালে, তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। কিন্তু তখনো অ্যানাকে তার স্বামীর মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়নি এবং অ্যানা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত বিশ্বাস করতেন তার স্বামী জীবিত।
অ্যানার দুর্ভোগের কথা প্রত্যক্ষদর্শী শ্বেতলানার বিবরণ থেকেই জানা যাক- ‘১৯৪৮ সালে, যখন ১৯৩৭ সাল থেকে দশ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করা বহু মানুষকে আবারও গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়, তখন আমার মাসিমা অ্যানাও রেহাই পাননি। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল অ্যাকাডেমিশিয়ান লিনা শটার্ন, লোজোভস্কি ও মোলোটভের স্ত্রী পলিনা ঝেমচুজিনার সঙ্গে-যিনি ছিলেন আমার মায়ের পুরনো ও ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। ছয় বছর পর, ১৯৫৪ সালের বসন্তে তিনি ফিরে আসেন। কিছুটা সময় তিনি একাকী সেলে ছিলেন, তবে বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন জেল হাসপাতালেই। বংশগত অভিশাপ-যে স্কিজোফ্রেনিয়া আমার মায়ের পরিবারকে কষ্ট দিত- তাতেও আক্রান্ত হন তিনি। এমনকী ভাগ্যের উপর্যুপরি আঘাতে মাসিমা অ্যানাও নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারেননি। তিনি চরম দুরবস্থায় ছিলেন। তাঁর ফিরে আসার প্রথম দিন আমি তাঁকে দেখি।
তিনি তাঁর পুরনো ঘরে বসে ছিলেন, নিজের বড়ো হয়ে যাওয়া দুই ছেলেকে পর্যন্ত চিনতে পারছিলেন না, অশেপাশে কাউকেই যেন তিনি জানতেন না। তাঁর চোখ ছিল ধোঁয়াটে, তিনি জানালার দিকে অপলক তাকিয়ে ছিলেন- আমরা যখন তাঁকে জানাচ্ছিলাম আমার বাবার মৃত্যু, ঠাকুমার মৃত্যু, আর আমাদের চিরশত্রু বেরিয়ার পতনের খবর- তাঁরা মনে কোনো ছাপ ফেলছিল না। তাঁর একমাত্র প্রতিক্রিয়া ছিল কেবল নিষ্প্রাণভাবে মাথা নাড়ানো।’ যিনি একদিন নিউরোসাইকিয়াট্রিস্ট হতে চেয়েছিলেন স্তালিনের ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র’ তাকেই মনোরোগী করে তুলেছিল কোনো অপরাধ ছাড়াই।
রেডেন্সের মৃত্যুর পরপরই অ্যানাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। স্তালিনের শ্যালিকা হওয়া সত্ত্বেও তিনি রক্ষা পাননি। স্তালিনকে এক্ষেত্রে যথার্থ মার্কসবাদী বলা যায়, কারণ মার্কসবাদের দৃষ্টিতে পরিবার, পুঁজিবাদী ব্যবস্থার ক্ষুদ্রতম একক। মার্কসবাদ বলে আদিম সাম্যবাদী সমাজে পরিবারের কোনো অস্তিত্বই ছিল না। তাই স্তালিনের কাছে সম্পর্কের কোনো মূল্য না থাকাই স্বাভাবিক।
আলিলুয়েভা পরিবারের সকলেই একে একে আত্মহত্যা, গুলাগের বন্দি,
গুলিতে নিহত, গুলাগ-ফেরত মানসিক রোগীতে পরিণত হয়- এই সবের সাক্ষী শ্বেতলানা আর আলিলুয়েভা দম্পতি। শ্বেতলানা তাঁর পিতামহ ও পিতামহীর যন্ত্রণার জীবনকে আর পাঁচটা সাধারণ পরিবারের থেকে পৃথক করে দেখেননি বরং বলেছেন সেই সময়ের সোভিয়েত রাশিয়ার মানুষের জীবনে এইরকম দুর্ভাগ্য কোনো ব্যতিক্রম নয়- ‘Each of their children came to a tragic end. Life broke them all in different ways. Was it the fate of everyone at that time?
সোভিয়েত রাশিয়ার মানুষের এই দুর্ভাগ্যের মূল কারণ শ্বেতলানা উপলব্ধি করেছিলেন। মানুষকে ও পৃথিবীর ইতিহাসকে মার্কসবাদ শুধুমাত্র অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করে আর সেখানে কোনো সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বকে স্বীকার করে না। এত মৃত্যু, অসহায়তার মাঝে দাঁড়িয়েও শ্বেতলানা ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাসী হয়েছিলেন, মার্কসবাদের বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। শ্বেতলানা বুঝেছিলেন একটিমাত্র মতাদর্শ আর তার ভিত্তিতে সমাজকে বদলানোর নামে যারা পৃথিবীকে নৃশংসতা দিয়েছে, সাম্যবাদের নামে মানুষের মানবাধিকার কেড়ে নিয়েছে তারা উন্মাদ ছাড়া আর কিছু নয়-‘হে প্রভু, কত সুন্দর তোমার এই পৃথিবী, আর কত নিখুঁত প্রতিটি ঘাসের ডগা, প্রতিটি ফুল, প্রতিটি পাতা। আর তুমি মানুষকে নিরন্তর সহায়তা করে যাচ্ছো, তাকে শক্তি দিচ্ছো এই ভয়াবহ বিশৃঙ্খলার মাঝে, যেখানে কেবল প্রকৃতিই অপরাজেয় ও চিরন্তন শান্তি ও শক্তি, সুর ও আত্মার প্রশান্তি দিয়ে যায়।’
শুধুমাত্র তারাই, যাদের ঈশ্বর অভিশপ্ত ও পরিত্যক্ত করেছেন, এই পৃথিবীর সৌন্দর্য মহিমাকে ভাঙতে পারে, অথবা ধ্বংস করার কথা ভাবতে পারে-যা বেড়ে ওঠে, ফুল ফোঁটে, আর জীবনে আনন্দ আনে। কত ভয়ংকর, যে দুনিয়ায় এত পাগল মানুষ আছে। কত ভয়ংকর এবং কত ভুল, যে তারা নিজেদের জন্য লক্ষ্য স্থির করে এবং সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য জীবন ধ্বংস করাকে ন্যায়সঙ্গত মনে করে।
অতি দরিদ্র কৃষক-ঘরনির কাছেও এটা স্পষ্ট যে এমন কিছু ঘটতে দেওয়া যায় না। অথচ যারা নিজেদের সভ্য বলে দাবি করে, তারা তা দেখতে পায় না। চীনা কমিউনিস্টরা যারা নিজেদের মার্কসবাদী বলে মনে করে, তারা বিশ্বাস করে- শুধু সম্ভব নয়, বরং প্রয়োজন যে মানুষকে একে অপরকে ধ্বংস করতে হবে। এক পাশে আছে অশুভভাব ও উন্মত্ততা; অন্য পাশে আছে বুদ্ধি, অগ্রগতি, ভ্রাতৃত্ব এবং মানবতা। বিশ্ব শান্তি ঝুলে আছে এই নরকতুল্য ভারসাম্যে। আমরাও আমাদের প্রজন্ম, আমাদের সন্তান, এই যুগ- সেই সঙ্গেই ঝুলে আছি।
আমাদের সকলেরই উচিত শালীনতা ও শুভ ইচ্ছাশক্তির শক্তিতে বিশ্বাস রাখা। সোভিয়েত রাশিয়ার মৃত্যুপুরীতে দাঁড়িয়ে ঈশ্বরে শ্বেতলানার বিশ্বাসই সঞ্জীবনী- ‘যখন আমি পঁয়ত্রিশে পৌঁছলাম এবং জীবনের কিছু অভিজ্ঞতা হলো, আমি- যাকে শৈশব থেকেই পরিবার ও সমাজ নাস্তিক ও বস্তুবাদী করে তুলেছিল- তখন আমি হয়ে উঠেছি সেইসব মানুষের একজন, যারা ঈশ্বর ছাড়া বাঁচতে পারে না। আমি আনন্দিত যে তা-ই হয়েছে।’
শ্বেতলানা যেন রাক্ষসরাজের সন্তান প্রহ্লাদের মতোই নিজের বিশ্বাসে অটল। সোভিয়েত রাশিয়ার লক্ষ লক্ষ ঘরে লক্ষ লক্ষ ‘শ্বেতলানা’র আত্মকথা অজানা থেকে গেলেও সাত দশক ধরে সোভিয়েত রাশিয়ার লৌহ যবনিকাকে ভেদ করতে শ্বেতলানাই যথেষ্ট। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত রাশিয়ার ভাঙন শ্বেতলানার কথাগুলোকেই সত্য বলে প্রমাণিত করে। কিন্তু ‘কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো’কে সামনে রেখে সমাজ পরিবর্তনের ভাবনায় উন্মত্ত অশুভশক্তি এখনো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ক্রিয়াশীল। বিভিন্ন দেশের সমাজ, সংস্কৃতি এবং সর্বোপরি মানবাধিকার বাঁচাতে বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে শ্বেতলানার এই
২০টি চিঠিই সঞ্জীবনী।