জঙ্গি সংগঠনের মতো কিছু রাজনৈতিক দলকেও নিষিদ্ধ করা উচিত
এরপরেও বলতে হবে দেশের শত্রু কারা?
নির্মাল্য মুখোপাধ্যায়
‘অপারেশন সিঁদুর’ দেশের শত্রুদের নতুন করে চিনিয়ে দিয়েছে। ষাট ও সত্তরের দশকে বলা হতো ‘চীনের কাস্তে হাতুড়ি, পাকিস্তানের তারা। তারপরেও কি বলতে হবে দেশের শত্রু কারা?’ একদল বিদেশি বামপন্থী আর সংস্কৃতির মোড়কে থাকা অ-বাম হাঁসজারুদের সম্পর্কে এটা বলা হতো। তারা চীন ও পাকিস্তানের গুণগান করে। পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পরে তাদের বংশধররা একজোট হয়েছে। ১৯৬২-তে চীন, ১৯৬৫-তে পাকিস্তান ও ১৯৭১-এ বাংলাদেশ যুদ্ধে তারা ভারত-বিরোধিতায় মগ্ন ছিল। এখন এই অপজাতদের সরানোর সময় এসেছে।
কোনো হিন্দু যদি নব্য মুসলমান হয়, সে ভীষণ হিন্দু বিদ্বেষী হয়। খুব বেশি করে নিষিদ্ধ খাদ্য খেতে শুরু করে। মহিলা পুরুষ নির্বিশেষে মাতৃগর্ভের এই লজ্জারা মুসলমান-দরদি সাজবে বলে হিন্দু বাঙ্গালি নামের সঙ্গে পয়গম্বর মহম্মদের সম্মানসূচক প্রতীক ব্যবহার করছে। পাশাপাশি দেশবিরোধী ও মুসলমান-দরদি বক্তব্য পেশ করে সমাজের মূলস্রোত থেকে মুসলমানদের বিচ্ছিন্ন করতে চাইছে। এই নির্লজ্জ মুসলমান তুষ্টীকরণের রাজনীতি আজ তাদের হারানো ভোটব্যাংক ফিরে পাওয়ার হাতিয়ার।
তারা সংস্কৃতির মোড়কে দেশবিরোধী ও উসকানিমূলক মন্তব্য করে থাকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শাসিত রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে তাদের বাহবা দেওয়া হয়। ইদানীং মোল্লাবাদীরা কিছু হিন্দু মহিলা ও যুবতীদের এই কাজে লাগিয়েছে। তারা এতটাই নিকৃষ্ট যে, মুসলমানদের পাঁচ ওয়াক্ত নমাজের সময় নিয়েও তারা সামাজিক মাধ্যমে উচ্চগ্রামে প্রচার চালায়। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে এই নির্লজ্জ, দেশদ্রোহীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় যে নোংরামি শুরু করেছে তাতে অবিলম্বে তাদের
দেশবিরোধিতার কারণে আটক করা উচিত। অনেকে আবার সমাজকর্মী সেজে ইসলামের ধ্বজা ধরেছে।
বিদেশি বামেরা চিরকাল দেশবিরোধী। তারা ধর্ম মানে না, কিন্তু ক্ষমতায় থাকার জন্য ইসলামকে ব্যবহার করে। ভারতের স্বাধীনতাকে এখনও তারা ঝুটা বলেই মনে করে। এখন মুখে না বললেও ‘ইয়ে আজাদি ঝুটা হ্যায়’ মনে মনে বিশ্বাস করে। ভারতীয় সংবিধানকে সমাজ বিভেদের বিকৃত দলিল বলেই মনে করে। অথচ ভারতের পতাকা নিয়ে তারা ভারতেরই সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে প্রতি মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ করে। মিথ্যা ও বিকৃত কটূক্তি করে। পাকিস্তান যে সন্ত্রাসবাদের আঁতুড়ঘর তা প্রকাশ করতে তাদের লজ্জা করে। তাহলে কেন তাদের ভারত-বিরোধী চীন ও পাকিস্তান প্রীতি? ভারতের মধ্যে থাকা কিছু মুখোশ পরা, সংস্কৃতির মোড়কে থাকা জঙ্গি তাদের প্রত্যক্ষ মদত দেয়।
ইদানীং তারা ঘুরিয়ে নাক দেখাতে শুরু করেছে যে পাকিস্তানের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী যুদ্ধে সাধারণ মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। ভারতীয় অর্থনীতি ভেঙে যারা বাহবা কুড়োতে চায়, হঠাৎ করে ভারতীয় অর্থনীতিকে বাঁচাতে তাদের দরদ দেখে সন্দেহের উদ্রেক হয়। মানুষের সামনে
বিদেশি বামেরা চিরকাল দেশবিরোধী। তারা ধর্ম মানে না, কিন্তু ক্ষমতায় থাকার জন্য ইসলামকে ব্যবহার করে।
ইসলামি সন্ত্রাসবাদকে তারা আড়াল করতে চায়। এক আজগুবি কায়দায় হিন্দুসমাজ ও ভারত সরকারকে তারা এক্ষেত্রে দায়ী করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। মোল্লাতন্ত্র যে মানুষের কোনো ক্ষতি করে না তারা সেটাই বলার চেষ্টা করে। এরাই ভারতের প্রধান শত্রু।
সাংবাদিকতা করতে গিয়ে আমি দীর্ঘদিন ইসলামি সন্ত্রাসবাদকে খানিকটা কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রকে অনুসরণ করে এটা পরিষ্কার বুঝেছি, এই ইসলামি সন্ত্রাসবাদের গভীরে রয়েছে এক অতি চরম মজহবি উন্মত্ততা যা কিনা খারিজি মাদ্রাসাগুলোতে শেখানো হয়। তাতে মুসলমান ছাত্রদেরকে সেই সব পরিবার থেকেই নেওয়া হয় যেখানে শিশু বয়স থেকেই অমুসলমানদের বিরুদ্ধে যাবতীয় হিংস্র কার্যকলাপের পাঠ দেওয়া হয়ে থাকে। যেমন দেওয়া হয়েছিল মাসুদ আজহারকে। তৈরি করা হয়েছে তার মতো গ্লোবাল টেররিস্ট বা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদীকে।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের মতে সন্ত্রাসবাদী মোল্লাতন্ত্রের তিন তার হলো ‘মারকাজ’ (প্রশিক্ষণ কেন্দ্র), ‘তাবলিগ’ (বার্তা) ও ‘দাওয়া’ (সেবা)। অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তান
এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে যে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ভারতীয় বায়ুসেনা ধ্বংস করেছে, তার ভিতর ৪টি মারকাজ রয়েছে। ভারতের ভিতরেও বহু মারকাজ কাজ করছে। তাদের কেন্দ্রে যেমন রয়েছে ইসলামি জঙ্গিরা, ঠিক তেমনই তার চারধারে রয়েছে তথাকথিত সংস্কৃতির মোড়কে থাকা কিছু ব্যক্তি যারা আদতে সন্ত্রাসবাদের ভাবনায় জারিত। রাজনৈতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি এইসব ভারত-বিরোধীদের নিষিদ্ধ করতে না পারলে এই রাজ্য ও দেশ থেকে ইসলামি সন্ত্রাসের ইতি ঘটবে না।