সেকুলার রাজনীতির নোংরা খেলায় হিন্দু ওবিসি সংরক্ষণ গুমরে কাঁদে
সিদ্ধানন্দ পুরকাইত
গত ৩৫ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে যে নোংরা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তার বর্ণনা করার মতো কোনো ভাষা খুঁজে পাওয়া যাবে না। শুধু এইটুকুই বলা যায় যে, সেকুলার, জেহাদি তোষণকারী রাজনৈতিক দলগুলির অনৈতিক, অসাংবিধানিক তোষণনীতির সৌজন্যে পশ্চিমবঙ্গে এত বছর ধরে বঞ্চিত হয়ে চলেছে ওবিসি সমাজ। পশ্চিমবঙ্গের ওবিসি সংরক্ষণের দীর্ঘ ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, মণ্ডল কমিশন গঠনের শুরু থেকেই পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলি রাজ্যের ভূমিপুত্র অনগ্রসর শ্রেণীর স্বার্থবিরোধী কাজ করেই চলেছে। সিপিএম, তৃণমূলের মতো শাসক দলের কবলে পড়ে দারিদ্রের বেড়াজাল ভেদ করতে পারছে না এই রাজ্যের গরিব হিন্দুসমাজ।
মণ্ডল কমিশন গঠন করে সারা দেশের সমস্ত রাজ্যের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর তালিকা সহজে প্রস্তুত হলেও পশ্চিমবঙ্গে তা অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে তবেই হয়েছে। সাম্প্রতিক ইতিহাস বলছে যে, তদানীন্তন বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণী চিহ্নিতকরণ করতে মণ্ডল কমিশনকে কোনো সহযোগিতা করেনি। সেই সময় বামফ্রন্ট সরকার ‘বিনয়কৃষ্ণ চৌধুরী কমিশন’ গঠন করে ৪২ দিনে একটি রিপোর্ট বানিয়ে দিয়ে দেয়। সেই রিপোর্টে বলা হয় যে, পশ্চিমবঙ্গে কোনো অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর মানুষ নেই।
এতবড়ো একটা রাজ্যে কোনো অনগ্রসর জনগোষ্ঠী নেই, বিশেষ করে ভারতের মতো একটি দেশের অঙ্গরাজ্যে এটা হতেই পারে না। ফলে স্পেশাল পারমিশন ও আইন পাশ করে মণ্ডল কমিশন নিজস্ব প্রচেষ্টায় পশ্চিমবঙ্গের ১৭৭টি জনগোষ্ঠীকে ‘অনগ্রসর’ হিসেবে চিহ্নিত করে। উল্লেখ্য যে, মণ্ডল কমিশন সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা, চাকুরি থেকে শুরু করে সমস্ত তথ্য যাচাই করে তবেই এই জনগোষ্ঠীগুলিকে তালিকাভুক্ত করেছিল। ১৯৯০ সালে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহ লোকসভায় মণ্ডল কমিশনের সুপারিশ পেশ করেন এবং ওবিসিদের জন্য ২৭ শতাংশ সংরক্ষণের প্রস্তাব পাশ করান। রাজ্যগুলোকেও ওবিসি সংরক্ষণ কার্যকর করার জন্য সুপারিশ করে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সরকারের পরামর্শ ছিল- ‘মণ্ডল কমিশন চিহ্নিত সব জনগোষ্ঠীকে ওবিসি সংরক্ষণ দেওয়া হবে এবং এর বাইরে যদি কোনো অনগ্রসর জনগোষ্ঠী থাকে তবে তা চিহ্নিত করার জন্য রাজ্যভিত্তিক কমিশন গঠন করা যেতে পারে। রাজ্যের দ্বারা গঠিত কমিশন ওবিসি চিহ্নিতকরণ এবং ওবিসি সংরক্ষণ দিতে পারে।’ দুর্ভাগ্যজনক যে, পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকার মণ্ডল কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করেনি।
ফলে সারা ভারতে ওবিসি সংরক্ষ কার্যকর হলেও পশ্চিমবঙ্গে তা হয়নি। ফলে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে আন্দোলন সংগঠিত হলো। অনেকেরই ধারণা যে, পশ্চিমবঙ্গের ওবিসি সমাজ কোনো আন্দোলন করেনি বলেই তাঁরা বঞ্চিত, কিন্তু ইতিহাস সম্পূর্ণ বিপরীত কথা বলে। ভারতের একমাত্র রাজ্য হলো পশ্চিমবঙ্গ যেখানে ওবিসিদের সংরক্ষণের আন্দোলন করে তাঁদের দাবি আদায় করতে হয়েছে। এসসি বা এসটি তালিকাভুক্ত জনগোষ্ঠীগুলিকে কখনও নিজেদের চিহ্নিতকরণ বা সংরক্ষণ চালু করার জন্য সরকারি বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়নি।
অনগ্রসর সমাজ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের চাপে পড়ে পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকার ১৯৯৩ সালে ‘এ কে সেন কমিশন’ গঠন করে এবং সেই কমিশনের সুপারিশ (মাত্র ৫ শতাংশ ওবিসি সংরক্ষণ) মেনে গণশুনানির মাধ্যমে ওবিসি তালিকা প্রস্তুত করে। এখানেও অত্যন্ত কদর্য কাজ করে বামফ্রন্ট সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের সুপারিশ অনুযায়ী মণ্ডল কমিশনের তালিকায় থাকা জনগোষ্ঠীগুলিকে ওবিসি সংরক্ষণ না দিয়ে তারা নিজেদের মতো শুনানি করে এবং নতুন করে হওয়া এই শুনানির মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের জনগোষ্ঠীগুলিকে ওবিসি সংরক্ষণ দেয়। ফলে শুরুতে মাত্র ১৮-২০টা মণ্ডল কমিশন তালিকাভুক্ত জনগোষ্ঠী ওবিসি সংরক্ষণের সুযোগ পায় এবং যে জনগোষ্ঠীগুলি মণ্ডল কমিশনের তালিকায় ছিল না রাজ্যের তালিকায় তারা ঢুকে যায়। অর্থাৎ ওবিসি সংরক্ষণ এবং রাজ্য সরকারে ক্ষমতাসীন দলের ভোটব্যাংক রাজনীতি এখানে ফুটে ওঠে।
ওবিসি সংরক্ষণ চালুর সময় পশ্চিমবঙ্গের ওবিসি সমাজের বুকে সব থেকে বড়ো ছুরি মারে বামফ্রন্ট সরকার এবং তদানীন্তন সংরক্ষিত জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ সম্প্রদায়ভুক্ত নেতৃত্ব। উভয়ে জোটবদ্ধ হয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজ্যে ওবিসি সংরক্ষণের সীমা রাখা হয় মাত্র ৫ শতাংশ, যেখানে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ওবিসি সংরক্ষণের সীমা ছিল ২৭ শতাংশ। কাহিনির এখানেই শেষ নয়। ওবিসি সমাজকে বঞ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশের এসসি সংরক্ষণ ১৫ শতাংশ হলেও, পশ্চিমবঙ্গের এসসি সংরক্ষণ ২২.৫ শতাংশ করে দেওয়া হলো। এই রাজ্যের ভূমিপুত্র ওবিসিদের বঞ্চিত করে অনুপ্রবেশকারী মুসলমানদের সংরক্ষণের আওতায় আনার মাধ্যমে তুষ্টীকরণের রাজনীতির নজির সৃষ্টি করল বামফ্রন্ট সরকার। এটাই বাস্তব যে, এত বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে অতীতের বামফ্রন্ট সরকার থেকে বর্তমান তৃণমূল সরকার সুপরিকল্পিতভাবে অত্যন্ত নোংরা খেলা খেলে চলেছে। রাজ্য সরকার প্রণীত নীতি রাজ্যের ভূমিপুত্র ওবিসি সমাজের বঞ্চনার কারণ হয়েছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে রাজ্যের অধিকাংশ মুখ্যমন্ত্রী থেকে রাজনৈতিক দলগুলির শীর্ষ নেতৃত্ব এই রাজ্যের ভূমিপুত্র না হওয়ার ফলে রাজ্যের শাসক দলগুলি চিরকাল একশ্রেণীর উদ্বাস্তু তোষণের ছত্রছায়ায় ভোটব্যাংকের সংকীর্ণ রাজনীতি চালিয়ে গিয়েছে যার বলি হয়েছে ওবিসি সমাজ।
রাজনীতির নোংরা পাঁকে বঙ্গীয় ওবিসি সমাজকে ডুবিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ওবিসি সংরক্ষণ নিয়ে বামফ্রন্ট সরকার যে গভীর চক্রান্ত ও নোংরামি করে গিয়েছে, আজকের পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সমস্ত মানুষ তার ফল ভোগ করছে। এক কথায় ‘কৃষক-শ্রমিক-গরিব-মুটে-মজুর’দের বন্ধু সেজে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমস্ত গরিবের বড়োমাপের সর্বনাশ করে গিয়েছে বামফ্রন্ট সরকার। ২০১০ সালে ‘ওবিসি সংরক্ষণ’কে সাম্প্রদায়িকীকরণের কাজ করে গিয়েছিল তারাই। সাচার কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর তারা মুসলমান নাম ও পদবিভিত্তিক ওবিসি সংরক্ষণ চালু করে। ওবিসি এ ও বি-এর শ্রেণী বিভাজন করে। ফলে মুসলমানরা ওবিসি সংরক্ষণের আওতায় চলে এলেও বঞ্চিতই রয়ে গেল হিন্দুসমাজ। এই সংরক্ষণের ফলে আজ ধীরে ধীরে ‘পশ্চিম বাংলাদেশ’ বা ‘মিনি পাকিস্তান’ হওয়ার দিকে হেঁটে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। সাচার কমিটির রিপোর্ট সামনে আসার পর গদি টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে, ভোটের লোভে দেশের আইন-কানুন, সংবিধানবিরোধী কাজ করে পশ্চিমবঙ্গের চিরস্থায়ী ক্ষতি করে গিয়েছে বামফ্রন্ট সরকার এবং তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
রাজ্যে তোষণ এবং পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতির জন্ম দিয়েছে বামফ্রন্ট সরকার। ওবিসি সংরক্ষণ চালুর সময়েও উদ্বাস্তুদের একটি বিশেষ শ্রেণীকে তোষণ করতে গিয়ে তারা এসসি (তপশিলি জাতি) সংরক্ষণ সীমা বৃদ্ধি করে। ২০০৯-এর পর সরকারের পতন নিশ্চিত হওয়ায় মরিয়া হয়ে মুসলমান তোষণ করতে গিয়ে তারা ধর্মের ভিত্তিতে ওবিসি সংরক্ষণ চালু করে। তাদের তৈরি ওবিসি-এ ও বি-র শ্রেণী বিভাজন মুসলমান সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন এবং গরিব, অনগ্রসর হিন্দুসমাজের ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৯০ পরবর্তী পর্যায়ে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন কোনো সরকার মণ্ডল কমিশনের সুপারিশ মেনে ২৭ শতাংশ ওবিসি সংরক্ষণ বাস্তবায়িত করেনি। অন্যান্য রাজ্যে ১৫ শতাংশ এসসি সংরক্ষণ চালু থাকলেও এই রাজ্যে তা হয়েছে ২২.৫ শতাংশ। নাম ও পদবি অনুযায়ী মুসলমান ওবিসি তৈরি করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ওবিসিদের মধ্যে শ্রেণী বিভাজন সৃষ্টি করেছে এই রাজ্যের সরকারই।
আদতে সমাজ ধ্বংস হয় শিক্ষিত মানুষদের অশিক্ষিতের মতো আচরণের কারণে। এটা বোধ হয় পশ্চিমবঙ্গের জন্য একেবারে বাস্তব। সেই সঙ্গে এই রাজ্যের ভূমিপুত্র কৈবর্ত-মাহিষ্য-কুড়মি জনগোষ্ঠীর তদানীন্তন শিক্ষিত নেতাদের অদূরদর্শিতা বা বামপন্থা-জারিত মহানুভবতা হয়তো পশ্চিমবঙ্গের আজকের এই ভয়াবহ অবস্থার জন্য অনেকাংশে দায়ী। ১৯৪৭ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সেকুলার, ভোটভিখারি শাসক দলগুলির মদতে পশ্চিমবঙ্গে অবাধে অনুপ্রবেশ ঘটে চলেছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলির জনসংখ্যার ভারসাম্য (ডেমোগ্রাফি) ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ভূমিপুত্র সমাজের জায়গা-জমি, সম্পদ থেকে শুরু করে চাকুরি-শিক্ষা সব কিছুর দখল কীভাবে হয়েছে এবং এখনও হয়ে চলেছে তা অনুসন্ধান করলেই উঠে আসবে প্রকৃত চিত্র। ধারাবাহিক ও অবাধ অনুপ্রবেশ এবং সেকুলার আগ্রাসনের কবলে পড়ে হিন্দু ওবিসি ও ভূমিপুত্র সমাজ আজ চরম সংকটের দোরগোড়ায় এসে উপস্থিত হয়েছে। অনেকেই হিন্দু ওবিসি বঞ্চনার মূল হোতা ভাবছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আদতে বামফ্রন্টের মেধাবী ছাত্রী এবং মুসলমান তোষণের পথিকৃৎ হিসেবে বামফ্রন্টের অসমাপ্ত কাজকে সদর্পে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী। এটা তার ভোট রাজনীতির বাধ্যবাধকতা। বর্তমান রাজ্য সরকার ইচ্ছা করলে কলকাতা হাইকোর্টের রায় মেনে নিতে পারতেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তা করলেন না। ওবিসি-এ-তে বরাদ্দ ১০ শতাংশ সংরক্ষণ ছিল কেবলমাত্র মুসলমান সম্প্রদায়ের জন্য বরাদ্দ। হিন্দুরা ছিল ‘ওবিসি-এ’ সংরক্ষণ হতে বঞ্চিত। রাজ্যের এই সংরক্ষণ নীতি বাতিল করে হাইকোর্ট। মুখ্যমন্ত্রী চাইলে আর্থিকভাবে দুর্বল, অনগ্রসর শ্রেণীর হিন্দুদের ইডব্লুএস (ইকোনমিক্যালি উইকার সেকশন) সংরক্ষণের আওতাভুক্ত করতে পারতেন এবং স্পেশাল টাস্কফোর্স গঠন করে বাতিল হয়ে যাওয়া ওবিসি সার্টিফিকেটগুলির পরিবর্তন করে ইডব্লুএস দিতেই পারতেন। কারণ দুটি ক্ষেত্রেই ১০ শতাংশ সংরক্ষণ ছিল। এছাড়াও তিনি মণ্ডল কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করতে পারতেন।
গত বছর ২২ মে রাজ্যের প্রায় ১২ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তাদের রায়ে হাইকোর্ট জানায় যে, রাজ্যের ওবিসিদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে কোনো সমীক্ষা করা হয়নি। নির্দিষ্ট কোনো তথ্য ছাড়াই ‘ওবিসি’ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই রায়কে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানায় রাজ্য। হাইকোর্টের রায়ের উপর কোনো স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। এরপর অভিযোগ ওঠে হাইকোর্ট শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও তা কার্যকর করছে না রাজ্য। অনেক জায়গায় নতুন করে ওই সার্টিফিকেটের ব্যবহার করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ কো-অপারেটিভ সোসাইটির নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অভিযোগ, ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এমনকী, প্যানেলও প্রকাশ করা হয়। গত মার্চে এ বিষয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। গত ৬ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ও বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বেঞ্চ নির্দেশ দেয় যে, রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে আদালতে হাজিরা দিয়ে জানাতে হবে কেন আদালতের নির্দেশ মানা হয়নি। হাইকোর্টের তলবের কারণে গত ১২ মার্চ আদালতে ভার্চুয়ালি হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। বিচারপতিদের প্রশ্নবাণের সামনে পড়ে ‘ভুল’ স্বীকার করেন তিনি। শুনানিতে বিচারপতি মান্থা বলেন, ‘আপনারা কেন আদালতের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন যে, আমাদের নির্দেশের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ? ২০১০ সালের আগে যাঁরা ওবিসি শংসাপত্র পেয়েছেন, তাঁদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি। তাঁদের নিয়োগে তো কোনো বাধা নেই। আদালত তার নির্দেশে তা স্পষ্ট করে বলেছিল।’ এছাড়াও অন্য একটি মামলায় গত ১৭ জুন রাজ্যের তৈরি নতুন ওবিসি সংরক্ষণ নীতিতেও অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। একের পর মামলা হেরেও গরিব, অনগ্রসর হিন্দুসমাজকে বঞ্চিত রাখতে সক্রিয় এই রাজ্যের নির্লজ্জ মুখ্যমন্ত্রী ও তার দল। তার ভোট রাজনীতির কবলে পড়ে গুমরে মরছে হিন্দু ওবিসি, গুঁড়িয়ে যাচ্ছে এই রাজ্যের ভূমিপুত্ররা। পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচাতে হলে মানবতাবোধ ও রাষ্ট্রবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ভারত কেশরী ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আদর্শকে পাথেয় করে রাজ্য জুড়ে ‘ভূমিপুত্র অধিকার রক্ষা আন্দোলন’ গড়ে তোলা বিশেষ জরুরি। অনুপ্রবেশকারী, দখলদার, জেহাদি, আক্রমণকারীদের কবলে পড়ে এই রাজ্যের ভূমিপুত্র হিন্দুসমাজ আজ বিপন্ন। রাজ্যের জনবিন্যাস পুরোপুরি পালটে গেলে তাঁদের দেশছাড়া হতে খুব বেশি দেরি নেই।