• About
  • Contact Us
Sunday, October 19, 2025
Swastika
No Result
View All Result
  • হোম
  • সম্পাদকীয়
  • রাজ্যপাট
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি
  • অতিথি কলম
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • পরম্পরা
  • সঙ্ঘবার্তা
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • ই -পত্রিকা
  • হোম
  • সম্পাদকীয়
  • রাজ্যপাট
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি
  • অতিথি কলম
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • পরম্পরা
  • সঙ্ঘবার্তা
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • ই -পত্রিকা
No Result
View All Result
Morning News
No Result
View All Result
Home পরম্পরা

25th August পরম্পরা

in পরম্পরা
25th August পরম্পরা

Issue 78-02-25-08-2025


তারকেশ্বরের শ্রাবণীমেলা
নিমাইতীর্থঘাট

নন্দলাল ভট্টাচার্য
বয়স তখন চব্বিশ। ভরা যৌবন। ওই বয়সেই সন্ন্যাস নিলেন তিনি। নিমাই থেকে হলেন শ্রীচৈতন্য। এসব ষোড়শ শতকের একবারে গোড়ার কথা। জন্মভূমি নবদ্বীপ ছেড়ে সাময়িকভাবে রয়েছেন শান্তিপুরে। ইচ্ছা বৃন্দাবনবাসী হওয়ার। কিন্তু মায়ের কথায় জায়গা বদল। বৃন্দাবনের পরিবর্তে শ্রীক্ষেত্র নীলাচল। গঙ্গা বেয়ে যাত্রার পথে শ্রীচৈতন্য থামলেন হুগলির বৈদ্যবাটিতে।
বৈদ্যবাটিতে যে ঘাটে শ্রীচৈতন্য নেমেছিলেন, স্নান-আহ্নিক-পূজা করেছিলেন, তাঁরই নামে সে ঘাটের আজ পরিচিতি নিমাইতীর্থের ঘাট হিসেবে। সেখান থেকে আবার শুরু হয় তাঁর যাত্রা নৌকায়।
কেউ কেউ মনে করেন, বৈদ্যবাটি ওই ঘাট থেকে শ্রীচৈতন্য গিয়েছিলেন তারকেশ্বরে। পদব্রজে। সময় লেগেছিল ১২ ঘণ্টা। এতো শোনার পরও বলতে হয়, তথ্যটা সম্ভবত কেন, নিশ্চিতভাবেই ভুল। তার প্রধান কারণ পাঁচশো বছ আগে তারকেশ্বরে অনাদি লিঙ্গ তারকনাথ বিরজিত থাকলেও মন্দিরের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। তাছাড়া শ্রীচৈতন্যর যাত্রাপথের নির্ভরযোগ্য যেমন তথ্য পাওয়া যায় তার কোনোখানেই তাঁর তারকেশ্বর তীর্থদর্শনের কথা নেই। তা সত্ত্বেও শ্রীচৈতন্যর তারকেশ্বরে যাওয়ার যে কথা বলেন কেউ কেউ তার মূলে রয়েছে হয়তো কিছু ভ্রান্তি।
তারকনাথের মাথায় গঙ্গাজল ঢালার জন্য যেমন পুণ্যার্থী পদব্রজে বাঁকে অথবা ঘটে জল নিয়ে যান, তাঁদের বেশিরভাগ ওই জল সংগ্রহ করেন বৈদ্যবাটী ওই নিমাইতীর্থের ঘাট থেকে। বছরের বেশিরভাগ সময়ই তীর্থযাত্রীরা এইভাবে গঙ্গাজল নিয়ে যান তারকেশ্বরে। এর মধ্যে শিবরাত্রি, গাজন, বৈশাখী পূর্ণিমা এবং শ্রাবণ মাসেই জলযাত্রী বা বাঁকযাত্রীদের ভিড় হয় বেশি। শিবরাত্রি গাজন এবং বৈশাখী পূর্ণিমায় জলযাত্রীদের প্রায় সকলেই একসময় ছিলেন বাঙ্গালি। আর শ্রাবণ মাসটা ছিল অবাঙ্গালিদের জন্য নির্দিষ্ট। কিন্তু এখন সে ভেদাভেদ প্রায় নেই বললেই চলে। বাঙ্গালি অবাঙ্গালি নির্বিশেষে সকলেই এই যোগগুলিতে তো বটেই, প্রায় সারা বছরই জলযাত্রী হিসেবে গঙ্গাজল নিয়ে পায়ে হেঁটে যান তারকেশ্বরে।
এই প্রসঙ্গেই বলতে হয়, গত পাঁচ ছয়ের দশকেও তারকনাথের নিত্যপূজার জন্য তারকেশ্বর মঠের পক্ষ থেকে গোরুর গাড়ি করে জল আনার ব্যবস্থা ছিল। সেই জলও সংগ্রহ করা হতো নিমাইতীর্থের ঘাট থেকেই। বৈদ্যনাথ ধামের বৈদ্যনাথের মাথায় ঢালার জন্য যেমন রামনগরের ভূস্বামী রাও ভায়ামল্লের গোরক্ষক মুকুন্দ ঘোষ। তাঁর কাছ থেকে খবর পেয়ে রাও ভায়ামল্ল ওই শিবলিঙ্গ তুলে নিয়ে রামনগরে প্রতিষ্ঠা করতে চান। তার জন্য শুরু হয় খোঁড়াখুঁড়িও। পরে জোয়ার। বঙ্গদেশে রেল চলাচল শুরু হয় ১৮৫৪-র ১৫ আগস্ট। আর তারই একত্রিশ বছর বাদে ১৮৮৫-র পয়লা জানুয়ারি শেওড়াফুলি থেকে তারকেশ্বর ব্রাঞ্চ লাইন চালু হয়। এই রেললাইনের মালিক ছিল স্বপ্নাদেশ পেয়ে ভায়ামল্ল তারকেশ্বরেই ওই তারকেশ্বর রেলওয়ে কোম্পানি। শিলার ওপর মন্দির তৈরি করে দেন। তারপরই বাবা তারকনাথের মহিমার কথা ছড়িয়ে পড়তে থাকে চারিদিকে। কিন্তু সেসময় যোগাযোগব্যবস্থা এখনকার মতো উন্নত না হওয়ার কারণে দেশের বিভিন্ন তীর্থের মতোই তারকেশ্বরেও ভক্ত, পুণ্যার্থীদের সংখ্যা ছিল মোটামুটি সীমিত। ফলে মন্দিরের আয়ও ছিল যথেষ্ট কম। তখন মন্দিরের নিত্যপূজা ও অন্যান্য কাজ নির্বাহের মূল উৎস ছিল রাও ভায়ামল্ল প্রদত্ত দেবোত্তর সম্পত্তি। তারকেশ্বরের গিরি-মোহান্তদের একটি ধারা ব্যবসায়ী হওয়ার পরেই তাঁরা জমিদারদের মতো সম্পত্তি করার দিকে নজর দিতে থাকেন। ফলে মোহান্তদের ক্রমে জমিদারদের ভূমিকায় দেখা যেতে থাকে।
মোহান্তরা যেন জমিদার
জমিদারি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আরও নানাভাবে মন্দিরের আয় বাড়াতে সচেষ্ট হন মোহান্তরা। দেশে রেল চলাচল শুরু হওয়ার পর সারাদেশেও তীর্থযাত্রায় আসে সন্নিহিত এলাকায় প্রজাদের ওপর চাঁদনি স্বত্ব নামে এক ধরনের খাজনা ব্যবস্থা চালু করেন। এই ব্যবস্থায় প্রজাদের যথেষ্ট উচ্চহারে খাজনা দিতে হতো। একই সঙ্গে প্রজাদের পাকাবাড়ি তৈরির অধিকার ছিল না। এই ব্যবস্থায় তারকেশ্বর এস্টেটের আয় পরবর্তীকালে এটির মালিক হয় ইস্ট ইন্ডিয়া বাড়লেও প্রজাদের মধ্যে এক ধরনের রেলওয়ে কোম্পানি বা ইআইআর।
তারকেশ্বর পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণের সময় তারকেশ্বরের মোহান্ত ছিলেন মাধবচন্দ্র গিরি। সেই সময় থেকেই তারকেশ্বরে তীর্থযাত্রী আসার সংখ্যা বাড়তে থাকে। ফলে বৃদ্ধি পেতে থাকে মন্দিরের আয়তন। কিন্তু মোহান্ত মাধব গিরি নানা অনৈতিক কাজে যুক্ত থাকার কারণে কারারুদ্ধ হওয়ার পর পুণ্যার্থীর সংখ্যায় আসে ভাটার টান।
মাধব গিরির পর তারকেশ্বরে গিরি সম্প্রদায়ের শেষ মোহান্ত হন সতীশচন্দ্র গিরি ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে। মোহান্ত হয়ে সতীশচন্দ্র গিরি নানা ভাবে তারকেশ্বর তীর্থের মহিমা প্রচার এবং মন্দিরের আয় বৃদ্ধির দিকে নজর দেন। তিনি কলকাতার অভিজাত মহলের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে থাকেন। তারকেশ্বর রাস্তাঘাট ইত্যাদি উন্নত করার দিকেও নজর দেন তিনি। একই সঙ্গে তারকেশ্বর মন্দির রামনগরের ভূস্বামী রাও ভায়ামল্পের গোরক্ষক মুকুন্দ ঘোষ। তাঁর কাছ থেকে খবর পেয়ে রাও ভায়ামল্ল ওই শিবলিঙ্গ তুলে নিয়ে রামনগরে প্রতিষ্ঠা করতে চান। তার জন্য শুরু হয় খোঁড়াখুঁড়িও। পরে স্বপ্নাদেশ পেয়ে ভায়ামল্ল তারকেশ্বরেই ওই শিলার ওপর মন্দির তৈরি করে দেন। তারপরই বাবা তারকনাথের মহিমার কথা ছড়িয়ে পড়তে থাকে চারিদিকে। কিন্তু সেসময় যোগাযোগব্যবস্থা এখনকার মতো উন্নত না হওয়ার কারণে দেশের বিভিন্ন তীর্থের মতোই তারকেশ্বরেও ভক্ত, পুণ্যার্থীদের সংখ্যাছিল মোটামুটি সীমিত। ফলে মন্দিরের আয়ও ছিল যথেষ্ট কম।
তখন মন্দিরের নিত্যপূজা ও অন্যান্য কাজ নির্বাহের মূল উৎস ছিল রাও ভায়ামল্ল প্রদত্ত দেবোত্তর সম্পত্তি। তারকেশ্বরের গিরি-মোহান্তদের একটি ধারা ব্যবসায়ী হওয়ার পরেই তাঁরা জমিদারদের মতো সম্পত্তি করার দিকে নজর দিতে থাকেন। ফলে মোহান্তদের ক্রমে জমিদারদের ভূমিকায় দেখা যেতে থাকে।
মোহান্তরা যেন জমিদার
জমিদারি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আরও নানাভাবে মন্দিরের আয় বাড়াতে সচেষ্ট হন মোহান্তরা। দেশে রেল চলাচল শুরু হওয়ার পর সারাদেশেও তীর্থযাত্রায় আসে জোয়ার। বঙ্গদেশে রেল চলাচল শুরু হয় ১৮৫৪-র ১৫ আগস্ট। আর তারই একত্রিশ বছর বাদে ১৮৮৫-র পয়লা জানুয়ারি শেওড়াফুলি থেকে তারকেশ্বর ব্রাঞ্চ লাইন চালু হয়। এই রেললাইনের মালিক ছিল তারকেশ্বর রেলওয়ে কোম্পানি। পরবর্তীকালে এটির মালিক হয় ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানি বা ইআইআর।
তারকেশ্বর পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণের সময় তারকেশ্বরের মোহান্ত ছিলেন মাধবচন্দ্র গিরি। সেই সময় থেকেই তারকেশ্বরে তীর্থযাত্রী আসার সংখ্যা বাড়তে থাকে। ফলে বৃদ্ধি পেতে থাকে মন্দিরের আয়তন। কিন্তু মোহান্ত মাধব গিরি নানা অনৈতিক কাজে যুক্ত থাকার কারণে কারারুদ্ধ হওয়ার পর পুণ্যার্থীর সংখ্যায় আসে ভাটার টান।
মাধব গিরির পর তারকেশ্বরে গিরি সম্প্রদায়ের শেষ মোহান্ত হন সতীশচন্দ্র গিরি ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে। মোহান্ত হয়ে সতীশচন্দ্র গিরি নানা ভাবে তারকেশ্বর তীর্থের মহিমা প্রচার এবং মন্দিরের আয় বৃদ্ধির দিকে নজর দেন। তিনি কলকাতার অভিজাত মহলের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে থাকেন। তারকেশ্বর রাস্তাঘাট ইত্যাদি উন্নত করার দিকেও নজর দেন তিনি। একই সঙ্গে তারকেশ্বর মন্দির সন্নিহিত এলাকায় প্রজাদের ওপর চাঁদনি স্বত্ব নামে এক ধরনের খাজনা ব্যবস্থা চালু করেন। এই ব্যবস্থায় প্রজাদের যথেষ্ট উচ্চহারে খাজনা দিতে হতো। একই সঙ্গে প্রজাদের পাকাবাড়ি তৈরির অধিকার ছিল না। এই ব্যবস্থায় তারকেশ্বর এস্টেটের আয় বাড়লেও প্রজাদের মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ দেখা দেয়। তবে মোহান্ত সতীশ গিরি সেই অসন্তোষকে তেমন গুরুত্ব না দিয়ে নিজের মতো করেই মন্দির ও জমিদারি পরিচালনা করতে থাকেন।
শ্রাবণে মাড়োয়ারি মেলা এই প্রসঙ্গেই বলতে হয়, তারকেশ্বরের গিরি মোহান্তরা ছিলেন অবাঙ্গালি। সেই কারণে তাঁরা বঙ্গ সংস্কৃতির সঙ্গে সঙ্গে বিহার- উত্তরপ্রদেশের সংস্কৃতির ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। সেই ধারাতেই মোহান্ত সতীশচন্দ্র গিরি বঙ্গদেশের অবাঙ্গালিদের তারকেশ্বরমুখী করার জন্য একটি পরিকল্পনা নেন।
বর্তমান ঝাড়খণ্ডের বৈদ্যনাথ ধামে শ্রাবণ মাসে যে কাঁওর যাত্রা হয় তারই অনুকরণে তিনি তারকেশ্বরে শ্রাবণী মেলারপ্রবর্তন করেন। আষাঢ়ের গুরুপূর্ণিমা থেকেশ্রাবণের ঝুলন পূর্ণিমা পর্যন্ত চলে এই শ্রাবণী মেলা। তবে মাসজুড়ে নয়, মেলা বসত প্রতি সোমবার। এই মেলার সঙ্গে বঙ্গদেশে প্রচলিত মেলার কোনো মিল ছিল না। এক্ষেত্রে বৈদ্যবাটি থেকে তারকেশ্বর পর্যন্ত কাঁওর যাত্রার ওপরই জোর দেন তিনি। তাঁর আহ্বানেই কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের অবাঙ্গালিরা সোমবার-সোমবার বাঁকে করে গঙ্গাজল এনে তারকনাথের মাথায় ঢালা শুরু করেন।
শ্রাবণ মাসে এই ভাবে কাঁওর যাত্রার যে প্রচলন তিনি করেন স্থানীয়ভাবে তা মাড়োয়ারি মেলা হিসেবে পরিচিতি পায়। দীর্ঘদিন পর্যন্ত শ্রাবণ মাসে গঙ্গাজল নিয়ে পদযাত্রায় বাঙ্গালিরা তেমনভাবে যোগ দিতেন না। তবে এই দিনগুলিতে ফিরতি পথে ট্রেনে যে ভিড় হতো তা সামাল দিতে প্রথম থেকেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিশেষ ট্রেন চালাবার ব্যবস্থা করে আসছেন।
অন্যদিকে সতীশ গিরির উদ্যোগেই সে সময়ে তারকেশ্বরে ধর্মশালাও নির্মাণ করেন অবাঙ্গালি ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে হনুমান পরিষদ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানও মূলত অবাঙ্গালি তীর্থযাত্রীদের থাকা এবং অন্যান্য বিষয়ে সাহায্য করার সক্রিয় হয়।
এই শ্রাবণী বা মাড়োয়ারি মেলা প্রবর্তনের ফলে তারকেশ্বর মন্দিরের আয় যথেষ্ট বৃদ্ধি পায়। তারকেশ্বরের নানা উন্নয়ন কাজেও ক্রমে অবাঙ্গালি ধনী সম্প্রদায় বিভিন্নভাবে যুক্ত হতে থাকেন। একই সঙ্গে স্থানীয় অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও কম-বেশি উন্নতির একটা প্রদীপ টিপটিপ করে জ্বলতে থাকে। তবে রুচি ও সংস্কৃতির ভিন্নতার কারণে এক্ষেত্রে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের চেয়েও কলকাতা থেকে আসা ব্যবসায়ীদের অস্থায়ী খাবারের দোকানদাররা বেশি লাভবান হতে থাকেন। এখন অবশ্য সেই ব্যবস্থার বেশ পরিবর্তন হয়েছে। বলা যায় এক্ষেত্রে তারকেশ্বরে স্থায়ীভাবেইকিছু অবাঙ্গালি ব্যবসা শুরু করার আগেরমতো অস্থায়ী ব্যবসায়ীদের আসাটা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। মেলার রূপ রূাপান্তর বিশ শতকের গোড়ায় তারকেশ্বরে শ্রাবণী মেলা প্রবর্তন করেন তৎকালীন
মোহাস্ত সতীশ গিরি। লক্ষ্য ছিল অবাঙ্গালি ভক্তদের ভিড় বাড়ানো। তিনি চেয়েছিলেন আয় বাড়াতে সেই সঙ্গে স্থানীয়দের অর্থনৈতিক উন্নতি।
স্বাধীনতার বেশ কয়েক বছর পর পর্যন্ত বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর পথটি ছিল বেশ দুর্গম।কাঁচা ও মাটির রাস্তা। মাঝে মাঝে শুনশান। রাতে একবারে অন্ধকার। এরকম রাস্তা ধরে জল নিয়ে যাওয়া সত্যিই এক সাধনা। ভক্তি ও বিশ্বাসে সে সাধনায় উত্তীর্ণ ভক্তেরদল ভিড় বাড়াতে থাকে তারকেশ্বরে। ভরে উঠতে থাকে প্রণামীর বাক্স।
যাত্রী সংখ্যা বাড়তে থাকায় স্থানীয়দের অবস্থাও ভালো হতে থাকে। তারকনাথের পূজায় নিবেদন করা হতো এক বিশেষ ধরনের চিনির মিষ্টি-নাম যার ‘ওলা’। চিনিতে সামান্য জল দিয়ে মেখে নাড়ুর মতো গোল গোল এবং আতা সন্দেশের ছাঁচে ফেলে তৈরি ওইমিষ্টি রোদে শুকনোর পর হতো তা প্রায় বজ্রকঠিন। দাঁত দিয়ে চেপে অথবা শক্ত কিছুর বাড়ি দিয়ে ভাঙতে হতো তা। এগুলি তৈরি করতেন মন্দিরপাড়ার দোকানদার এবং তাঁদের বাড়ির মেয়েরা অবসর সময়ে। তা ছিল তারকেশ্বরের এক উল্লেখযোগ্য কুটির শিল্প। কিন্তু গত ছয়ের দশকে চিনির আকালের সময় বিলুপ্তি ঘটে এই শিল্পের। বর্তমানে উত্তর ভারতের মতো তারকেশ্বরের ঠাঁই করে নিয়েছে ক্ষীরের প্যাঁড়া। আর নতুন হিসেবে চল হয়েছে রঙিন বাতাসার। এখন গোটাদশেক সংস্থা এই বাতাসা তৈরি করে জনা সত্তরের অন্ন সংস্থান করছে।
ওলার মতোই তারকেশ্বরের তাগা তৈরি করেও সংসার চালাতেন বহু মহিলা। কিন্তু সম্প্রতি উত্তর ভারতের প্রভাবে ওই তাগার জায়গা নিয়েছে হলুদ রঙের সুতো। এর ফলেও বৃত্তিচ্যুত হয়েছে বহু জন। মোটের ওপর শ্রাবণী মেলার কারণে তারকেশ্বরে এখন বহু মানুষ একটু সুখের মুখ দেখছেন। এই মেলার কারণেই এখন বৈদ্যবাটি- শেওড়াফুলিতেও চলছে বাঁক, ঘট, মাটি ও প্লাস্টিকের ঘট, কলসি, বাঁক সাজাবার নানা সামগ্রীইত্যাদির ব্যবসা চলছে রমরমিয়ে।
অনেক অসুবিধার মধ্যেই শুরু হয়েছিলতারকেশ্বরের শ্রাবণী মেলা। এখনকিন্তু অবস্থার বহু পরিবর্তন হয়েছে। গত পঞ্চাশের দশকেই বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর সড়কটি পাকা হয়। এখন রাস্তার বহু জায়গাতেই আছে আলো। সিঙ্গুরের পর থেকে লোকনাথ পর্যন্ত রয়েছে অনেকগুলি চটিবাবিশ্রামস্থল। যেখানে গরমজল থেকে নানারকম খবারদাবার দেওয়া হয় বিনামূল্যেই। বেড়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছেচিকিৎসার ব্যবস্থা। রাজ্যসরকারও শ্রাবণী মেলার জন্য নিচ্ছেন নানা ব্যবস্থা।
একদা যা ছিল মাড়োয়ারি মেলা এখন তা পুরোপুরি শ্রাবণী মেলা। এ মেলায় জলযাত্রীর সংখ্যার সিংহভাগ এখন বাঙ্গালি। এখন ভিড় এত বেশি হয় যে গর্ভগৃহে যাত্রীদের ঢুকতে দেওয়া হয় না ওই সময়। পরিবর্তে বাইরে রাখা ডোঙায় জল ঢালেন ভক্তরা এবং সে জল গিয়ে পড়ে শিবের মাথায়।
শ্রাবণী মেলার জলযাত্রীদের চরিত্রেও এখন এসেছে বেশ পরিবর্তন। এখন বেশ কিছু উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়ে তাসা, ডিজে ইত্যাদি বাজনার তালে নাচতে নাচতে জল নিয়ে আসেন। অনেক সময় ট্যাবলোর মতো রথ ইত্যাদি সাজিয়ে প্রতিমা ভাসানের শোভাযাত্রার মতো নানা হুল্লোড় করতে করতে জল নিয়ে আসেন বেশকিছু মানুষ। মনে হয়, এঁদের কাছে বাঁকে জল আনাটা কোনো ধর্মীয় আচার নয়, স্রেফ অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের আনন্দের সন্ধানেই এরা জলযাত্রায় শামিল হন।
এসব সত্ত্বেও অধিকাংশ জলযাত্রী শ্রাবণীমেলার সময় তারকেশ্বরে আসেন ভক্তি ও বিশ্বাসের কড়ি কাপড়ে বেঁধে। তারই ফলে বৈদ্যনাথ ধামের মতোই তারকেশ্বরের শ্রাবণী মেলা আজ দেশের অন্যতম ভক্ত সমাবেশ। ‘ভোলে বাবা পার করেগা’ ধ্বনিতে মুখরিত শ্রাবণীমেলা এখনভক্তের অন্তরের পরম ধন।

READ ALSO

29th September পরম্পরা

29th September পরম্পরা

October 7, 2025
29th September পরম্পরা

29th September পরম্পরা

October 7, 2025
ShareTweetShare

Related Posts

29th September পরম্পরা
পরম্পরা

29th September পরম্পরা

October 7, 2025
29th September পরম্পরা
পরম্পরা

29th September পরম্পরা

October 7, 2025
29th September পরম্পরা
পরম্পরা

29th September পরম্পরা

October 7, 2025
15th September পরম্পরা
পরম্পরা

15th September পরম্পরা

September 23, 2025
15th September পরম্পরা
পরম্পরা

15th September পরম্পরা

September 22, 2025
15th September পরম্পরা
পরম্পরা

15th September পরম্পরা

September 22, 2025

POPULAR NEWS

4th September 2023 Rajjopat

4th September 2023 Rajjopat

September 21, 2023
৩৫০ বছর পর দেশে ফিরছে শিবাজীর বাঘনখ

৩৫০ বছর পর দেশে ফিরছে শিবাজীর বাঘনখ

October 2, 2023
কেশব ভবনে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী হানা

কেশব ভবনে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী হানা

October 4, 2023
4th September Angana

4th September Angana

September 21, 2023
2nd October 2023 Parampara

2nd October 2023 Parampara

October 1, 2023

EDITOR'S PICK

01st September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

01st September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

September 1, 2025
12th May  রাজ্যপাট

12th May রাজ্যপাট

May 12, 2025
21st April অতিথি কলম

21st April অতিথি কলম

May 5, 2025
2nd October Sampadakiya

2nd October Sampadakiya

October 1, 2023

About

Follow us

Categories

  • Uncategorized
  • অতিথি কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • পরম্পরা
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • রাজ্যপাট
  • সঙ্ঘবার্তা
  • সম্পাদকীয়
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি

Recent Posts

  • 29th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • 29th September পরম্পরা
  • 29th September পরম্পরা
  • 29th September পরম্পরা

© 2023 Swastika. All rights reserved.

No Result
View All Result
  • হোম
  • সম্পাদকীয়
  • রাজ্যপাট
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি
  • অতিথি কলম
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • পরম্পরা
  • ই -পত্রিকা

© 2023 Swastika. All rights reserved.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?