• About
  • Contact Us
Sunday, October 19, 2025
Swastika
No Result
View All Result
  • হোম
  • সম্পাদকীয়
  • রাজ্যপাট
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি
  • অতিথি কলম
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • পরম্পরা
  • সঙ্ঘবার্তা
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • ই -পত্রিকা
  • হোম
  • সম্পাদকীয়
  • রাজ্যপাট
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি
  • অতিথি কলম
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • পরম্পরা
  • সঙ্ঘবার্তা
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • ই -পত্রিকা
No Result
View All Result
Morning News
No Result
View All Result
Home উত্তর সম্পাদকীয়

26th May উত্তর সম্পাদকীয়

in উত্তর সম্পাদকীয়
26th May উত্তর সম্পাদকীয়

Issue 77-38-26-05-2025

নরেন্দ্র মোদীই বর্তমান ভারতের আইকন
শিবেন্দ্র ত্রিপাঠী
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের অপারেশন সিঁদুর আপাতত স্থগিত। তারপর থেকে এদেশের কিছু মোদীবিরোধী শক্তি, রাজনৈতিক নেতা, সামাজিক ব্যক্তিত্ব এই সেনা অপারেশন বন্ধ হওয়াকে সরাসরি ভারতের ভীরুতা, আমেরিকার চোখরাঙানি এবং মোদীর রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব বলে বর্ণনা করতে শুরু করেছে। কেউ কেউ এমনও বলছেন যে ‘আপনি ইন্দিরা হতে পারলেন না মোদীজী। এ লজ্জা আপনার’। গণতান্ত্রিক দেশে প্রশ্ন তোলার অধিকার সবারই আছে। কিন্তু তার উত্তর পেতে গেলে প্রথমেই বুঝতে হবে ১৯৭১-এর প্রেক্ষাপট আর ২০২৫-এর পরিস্থিতি কি এক? ভারতের এই ‘অপারেশন সিঁদুর’ কি পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে আঘাত করার জন্য করা হয়েছিল, নাকি পাকিস্তানের সাধারণ মানুষকে হত্যা করার জন্য? না, এর কোনোটাই নয়। ভারত এই অপারেশন করেছিল পহেলগাঁওয়ে পাকিস্তান মদতপুষ্ট ইসলামিক জঙ্গিদের দ্বারা বেছে বেছে ২৬ জন নিরাপরাধ হিন্দু হত্যার বদলা নিতে। আমাদের ঘরের হিন্দু মায়েদের সিঁথির সিঁদুর মুছে দেওয়ার প্রতিকার করতে।
যে সময় কাশ্মীরে এই ঘটনা ঘটে সে সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইউনাইটেড আরব আমিরাত সফরে ছিলেন। ঘটনা শুনে সঙ্গে সঙ্গে তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন এর প্রত্যাঘাত তাদের কল্পনার চেয়েও বেশি মারাত্মক হবে। সত্যিই, প্রধানমন্ত্রী তাঁর কথা রেখেছেন। ৬ ও ৭ মে, এই দুদিনে ভারত এমন বদলা নিয়েছে যা সত্যিই সন্ত্রাসবাদীদের কল্পনার অতীত। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমরা ঘরে ঢুকে মারবো, সন্ত্রাসবাদীদের মাটিতে মিশিয়ে দেব’-আমাদের সেনাদের অদম্য সাহস ও পরাক্রম, আর প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছাশক্তি সন্ত্রাসবাদী ও তাদের আশ্রয়দাতা পাকিস্তানের শিরদাঁড়া ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে।
পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পর দেশবাসীর একটাই দাবি ছিল- বদলা চাই। পাকিস্তানও বুঝতে পেরেছিল ভারত প্রত্যাঘাত করবে। কিন্তু সে আঘাত কবে ও কীভাবে আসবে তা ছিল তাদের ধারণার বাইরে। ২৩ এপিল ভারত প্রথমে পাকিস্তানকে আঘাত দিল নন মিলিটারি অ্যাকশনের মাধ্যমে। ১৯৬০ সালে জওহরলাল করা ইন্দাস ওয়াটার ট্রিটি অর্থাৎ সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি রদ্ করে ভারত প্রথম পাকিস্তানে আঘাত হানলো। যে সিন্ধুর জলের ওপর পাকিস্তানের ৮০ শতাংশ কৃষিকাজ নির্ভর করে, তার সঙ্গে সঙ্গে ঝিলাম ও চেনাব নদীর জল আটকে দিয়ে ভারত পাকিস্তানকে ভাতে মারার কাজ শুরু করল। মোদীজী বললেন, ‘জল আর রক্ত একসঙ্গে বইতে দেব না’। পঞ্চাশ বছরে যা সম্ভব হয়নি, পাকিস্তানের কাছে বারে বারে আঘাত পেয়েও জওহরলাল বা ইন্দিরার মতো শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রীরাও যা করতে পারেননি, মোদীজী তাই করে দেখালেন। একই সঙ্গে ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সব রকমের বাণিজ্য বন্ধ করে আটারি-ওয়াঘা বর্ডার সিল করে দিল এবং ভারতে আসা সমস্ত পাকিস্তানিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। মোদীজী এই ১৪ দিনে প্রায় কুড়িটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে নিজে কথা বলেছেন। কীভাবে পাকিস্তানকে একঘরে করে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায় তার ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করেছেন। মোদীজীর কূটনৈতিক দৌত্যে শুধু বিশ্বের সর্ববৃহৎ শক্তিশালী দেশগুলিই নয়, সৌদি আরব, ইউএই-সহ প্রায় বেশিরভাগ ইসলামি দেশও এই বিষয়ে ভারতকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। বিশ্বে একঘরে হয়েছে পাকিস্তান। তারপরে ৬ ও ৭ মে রাত থেকে শুরু হলো নির্ণায়ক আঘাত। ৬ তারিখ রাতে ভারত সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিল চাইলে সে কী না করতে পারে। কেবল পাক অধিকৃত কাশ্মীরেই নয়, চাইলে সে ইন্টারন্যাশনাল বর্ডার পার করে পাকিস্তানের ঘরের ভেতরে ঢুকে সন্ত্রাসবাদের ডেরা গুঁড়িয়ে দিয়ে আসতে পারে।
যিনি পাকিস্তানকে চোখ বলতে পারেন ‘সমঝে অপারেশান সিঁদুর স্থগিত রাঙিয়ে যাও, হয়েছে মাত্র, বন্ধ করা হয়নি। সেনাকে ‘খুলি ছুট’ দেওয়া আছে। ওপার থেকে গুলি এলে, এপার গোলা চলবে। আবার থেকে ঘরে ঢুকে মারবো’। আমাদের এই মোদীই ভালো। এই মোদীই ভারতের আইকন। অপারেশন সিঁদুরের প্রথম লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানের ভেতরে থাকা জঙ্গি ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া, যেখানে পাকিস্তানি সেনার ছত্রছায়ায় বসে উগ্রপন্থীরা ভাবত তারা সেখানে সম্পূর্ণ নিরাপদ, ওখানে গিয়ে কেউ তাদের কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারবে না। দ্বিতীয় লক্ষ্য ছিল ওই ঘাঁটিগুলিতে লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের খুঁজে খুঁজে নিকেশ করা। কিন্তু ভারত প্রথম থেকেই সতর্ক ছিল উগ্রপন্থীদের টার্গেট করতে গিয়ে এই অভিযানে যেন পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বা সাধারণ নাগরিকদের কোনো ক্ষতি না হয়। অর্থাৎ এই লড়াই ছিল বিশুদ্ধভাবে ইসলামি উগ্রপন্থা ও উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে, কোনো দেশের বিরুদ্ধে সার্বিক যুদ্ধ নয়।
এখন প্রশ্ন, ভারত কি সেই লক্ষ্য ঠিকভাবে পূরণ করতে পেরেছে? এর উত্তর হ্যাঁ, পেরেছে। ভারতের এই আক্রমণে পাকিস্তানের নয়টি জেহাদি ট্রেনিং ক্যাম্পের ঠিকানা, যার পাঁচটি ছিল পাক অধিকৃত কাশ্মীরে, আর চারটি ছিল পাকিস্তানের ভেতরে সেগুলি ধ্বংস করে দিয়েছে। ভারত এই প্রথমবার পঞ্জাব প্রভিন্সে ঢুকে লস্কর-ই-তৈবা, জইশ-ই-মহম্মদ, হিজবুল মুজাহিদিন-এদের ডেরা ধ্বংস করে উপপন্থীদের নিকেশ করে এসেছে। একসময় মহম্মদ ঘোরি, তৈমুর লং, সুলতান মামুদ ভারতে ঢুকে ভারতের মঠ-মন্দির ভেঙে তছনছ করে দিত। আজ আমাদের সেনা বিদেশের মাটিতে গিয়ে এই প্রথম এতগুলি জঙ্গিঘাঁটিতে ধ্বংসলীলা চালিয়ে এল। কোনো ভিন দেশে ঢুকে তার ন’-নয়টি জঙ্গি ক্যাম্প ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে এল। যা স্মরণ করলে পাকিস্তানের আগামী প্রজন্ম আগামী ১০০ বছর এই বলে যন্ত্রণায় কাতর হবে যে, ২০২৫ সালে কোনো এক মোদী সরকার এবং তার সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এক সেনা অভিযানের মাধ্যমে তাদের কী হাল করে ছেড়েছিল। তারা মনে করবে দেশের ভারতের মায়েদের সিঁথির সিঁদুর যারা মুছে দিয়েছিল তাদের উপর কী ভয়ংকর শাস্তি নেমে এসেছিল।
এই অপারেশনে পাকিস্তানের যে ন’টি উগ্রপন্থী ট্রেনিং ক্যাম্প ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে প্রথমেই আছে ‘সাওয়াইনালা ক্যাম্প’, মোজাফফরাবাদ, যা এলওসি থেকে ৩০ কিলোমিটার ভেতরে, পিওকের অন্তর্গত। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে আমাদের মায়েদের সিঁথির সিঁদুর যারা মুছে দিয়েছিল তাদের প্রশিক্ষণ হয়েছিল এই ট্রেনিং ক্যাম্পেই। তারপর দ্বিতীয়টি হলো ‘সৈদানা বিলাল ক্যাম্প’, মুজাফফরাবাদ, এটি জইশ-ই-মহম্মদের ট্রেনিং সেন্টার। তৃতীয়টি হলো ‘গুলপুর ক্যাম্প’, কোটলি, এলওসি থেকে ৩০ কিলোমিটার ভেতরে লস্কর-ই-তৈবার বেশ ক্যাম্প এটি। ২০ এপ্রিল ২০২৩, পুঞ্চে এবং ৯ জুন, ২০২৪ কাশ্মীরে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের বাসে হামলা করেছিল এই ক্যাম্প থেকে ট্রেনিং নেওয়া জঙ্গিরা। চতুর্থ, ‘বার্নালা ক্যাম্প’ বিরপগড় যা এলওসি থেকে ৯ কিলোমিটার ভেতরে। পাঁচ, ‘আব্বাস ক্যাম্প কোটলি’ যা এলওসি থেকে ১৩ কিলোমিটার ভেতরে যা লস্কর-ই-তৈবার আত্মঘাতী প্রশিক্ষণ শিবির। ছয়, ‘সারজাল ক্যাম্প, শিয়ালকোট, যা ভারতীয় সীমা থেকে পাকিস্তানের ছয় কিলোমিটার ভেতরে। সাত, ‘মেহমুনাজায়া ক্যাম্প’, শিয়ালকোট, যা ভারতের বর্ডার থেকে পাকিস্তানের ১৮ কিলোমিটার ভেতরে, হিজবুল মুজাহিদিনের ট্রেনিং ক্যাম্প। আট, ‘মারকাজ তৈবা’, মুরিদ, যা ভারতীয় সীমা থেকে ২৫ কিলোমিটার ভেতরে। ২০০৮ সালে মুম্বাইয়ের হামলা, যা ২৬/১১ নামে কুখ্যাত হয়ে আছে, যার মূল চক্রী আজমল কাসব এবং ডেভিড হেডলি এই ট্রেনিং ক্যাম্প থেকে তৈরি হয়েছিল। নয়, ‘মারকাজ সুভানাল্লাহ’ বাহাবলপুর, ভারতের সীমানা থেকে ১০০ কিলোমিটার ভেতরে যা জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান কার্যালয়। এই বাহাবলপুর এমন এক ক্ষেত্র যেখানে লাদেনকে খুঁজতে গিয়ে আমেরিকাও তাদের ড্রোন পাঠাবার সাহস করেনি। পাকিস্তান-সহ বিশ্বের কোনো দেশ স্বপ্নেও কোনোদিন ভাবেনি যে ভারতীয় সেনার এত সাহস বা মোদীজীর এমন ইচ্ছা শক্তি যা বর্ডার থেকে একশো কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে শত্রুদের জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়ে আসতে পারে।
এই অপারেশনের দুটি লক্ষ্য ছিল, এক সন্ত্রাসবাদীদের ক্যাম্প গুলি ধ্বংস করা, দুই, সন্ত্রাসবাদীদের খুঁজে খুঁজে হত্যা করা। ভারতের এই অপারেশন ৯টি জঙ্গিঘাঁটি এবং সেখানে লুকিয়ে থাকা বিশ্বের মোস্ট ওয়ান্টেড একশোরও বেশি উগ্রপন্থীকে নিশ্চিহ্ন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই আবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসবাদী, ছিল লস্কর-ই-তৈবার মারকাজ-ই-মুদ্রিকের ইনচার্জ মুদস্সর? কাদিয়ান খান, ওরফে আবু জিন্দাল। ছিল জইশ-ই-মহম্মদের হাফিজ মহম্মদ জামিল, যে সম্পর্কে মাসুদ আজাহারের শ্যালক এবং ‘মারকাজ সুভানাল্লা’ ট্রেনিং ক্যাম্পের ক্যাম্পের ইনচার্জ। ছিল জইশ-ই-মহাম্মদের দাবি সন্ত্রাসবাদী, মাসুদ আজাহারের নিকট আত্মীয় মহম্মদ ইউসুফ আজহার, যে ১৯৯৯ সালে কান্দাহারে আইসি-৮১৪ বিমান অপহরণের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড। ছিল লস্কর-ই-তৈবার আবু আসকা খালিদ। এরকম নামকরা একশোর বেশি কুখ্যাত উগ্রপন্থীকে ভারতে সেনারা ঢের করেছে। অপারেশন সিঁদুরের লক্ষ্য ছিল সন্ত্রাসবাদীদের ধ্বংস করা, এতে ভারত সফল হয়েছে। এই প্রথমবার সারা বিশ্ব দেখল পাকিস্তানের প্রতি ইঞ্চি জমি ভারতের টার্গেটের আওতায়। পাকিস্তানের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সম্পূর্ণ ব্যর্থ। মাত্র ২৫ মিনিটের অপারেশন, রাফেল বিমানের মাধ্যমে স্কালফ ও হ্যামার মিশাইলের আক্রমণে পাকিস্তানের ৯টি বৃহত্তর ট্রেনিং ক্যাম্প আজ ধুলায় মিশে গেছে।
এর সঙ্গে সঙ্গে ‘অপারেশন সিঁদুর’ আজ অনেকগুলো ‘মিথ’ও ভেঙে দিয়েছে। প্রথম ‘মিথ’ ওপর থেকে এসে সন্ত্রাসবাদীরা যতই হামলা করুক, ভারত পাকিস্তানকে ছুঁতে পারবে না, দূর থেকেই আস্ফালন করবে। কারণ পাকিস্তান পরমাণুধর দেশ, তাকে আঘাত করলেই সে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে। এই মিথ্যা কল্পনা আজ ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। ভারতের প্রত্যাঘাতের আগের মুহূর্ত পর্যন্তও যে পাকিস্তান চিৎকার করে পরমাণু হামলার হুমকি দেখাচ্ছিল, ভারত প্রত্যাঘাত করার পর তার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। ভারত গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে যে পাকিস্তানের পরমাণু-হুমকি এক ফাঁকা আওয়াজ। এক ধমকে ভারত তা থামিয়ে দিতে পারে। ওই মান্ধাতা আমলের নিউক্লিয়ার ব্ল‍্যাকমেলিং আর কাজ করবে না।
দ্বিতীয় ‘মিথ’- পাকিস্তানে ভারত আঘাত হানলেই ভারতকে চীনের আক্রমণের মুখে পড়তে হবে, অর্থাৎ শুধু পাকিস্তানের সঙ্গে নয়, চীনের সঙ্গেও ভারতকে যুদ্ধ করতে হবে। এই ‘মিথ’ও আজ ভেঙে খান খান। আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বললেই অনেকেই ভারতকে চীনের জুজু দেখাত। ‘অপারেশন সিঁদুর’ প্রমাণ করল কেবল পাক অধিকৃত কাশ্মীরেই নয়, এবার পাকিস্তানের বুকের উপর ভারত আঘাত হানতে পারে, আর চীনের ভূমিকা সেখানে কেবল নির্বাক দর্শকের মতো। ১২টি সেনাঘাঁটি, ৪টি বিমানঘাঁটি, করাচির নৌঘাঁটি, ৬টি যুদ্ধবিমান, সমস্ত এয়ার ডিফেন্স, নূর খান এয়ারবেস-সহ ৫২ জন বিমানবাহিনীর সদস্য- এত কিছু ধ্বংস হতে দেখেও চীন কেবল বিবৃতি দেওয়া ছাড়া কিছুই করতে পারবে না।
তৃতীয় ‘মিথ’ হলো, চীন সামরিক দিক থেকে প্রচণ্ড শক্তিশালী। তাদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নাকি দুর্ভেদ্য। তাই চীনকে সবার সমীহের চোখে দেখা উচিত। ‘অপারেশন সিঁদুর’ চীনের এই কষ্টকল্পিত ভাবমূর্তিও ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে পাকিস্তান মূলত চীনা প্রযুক্তিই ব্যবহার করছিল। দেখা গেল, চীনা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ভারতীয় আক্রমণের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। শয়ে শয়ে চীনা ড্রোন দিয়ে হামলার চেষ্টা কোনো কাজে এল না। সব ড্রোনকেই ভারত মাঝ-আকাশে ধ্বংস করছে। চীনা ফাইটার জেটগুলোও ভারতের কোনো ক্ষতি করতে পারেনি। এত দিন ধরে চীনের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে গোটা বিশ্বে যে ধারণা তৈরি হয়েছিল তা মিথ্যা প্রমাণিত হলো। আর চীনের কাছ থেকে যেসব দেশ যুদ্ধ সরঞ্জাম কেনার কথা ভাবছিল, তাদের মনে এখন চীনের থেকে মিসাইলের চেয়ে ভারতের ব্রহ্মোস মিসাইলের গুরুত্ব বাড়লো।
সেনাবাহিনীর এত পরাক্রমের পরেও নিন্দুকেরা বলছে মোদী নাকি ১৯৭১-এর ইন্দিরা হয়ে উঠতে পারেননি। কারণ তিনি অপারেশন সিঁদুর স্থগিত করেছেন। হে প্রবুদ্ধগণ, আপনারা ঠিকই বলেছেন! ইন্দিরা হওয়া এত সোজাও নয়। তাঁর কার্যকালে (১৯৬৬-১৯৮৪) কাশ্মীরে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের ওপর যখন জঙ্গি হানা হতো। অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের ওপর যখন জঙ্গিরা আক্রমণ চালাত, হিন্দুর রক্তে কাশ্মীর উপত্যকা লাল হয়ে উঠত, তখন একটু শোক জ্ঞাপন করে, ২-৪টে জঙ্গি মেরে, কয়েকটাকে জেলে পুরে যদি বীরত্ব প্রকাশ করে কাটিয়ে দিতে পারতেন যেমন তৎকালীন ইন্দিরা সরকার করত তবে হয়তো আজ আপনি এদের চোখে ‘আয়রন লেডি’র মতো শক্তিশালী প্রধানমন্ত্রী বলে বিবেচিত হতেন। ১৯৭১ সালে নিজেকে বীর প্রমাণ করতে আয়রন লেডিকে ৯ মাস অপেক্ষা করতে হয়েছিল (২৬ মার্চ-৩ ডিসেম্বর) যতক্ষণ না পর্যন্ত পাকিস্তান এসে পাঠানকোট অমৃতসর আম্বালা বিমানঘাঁটিতে বোমা ফেললো। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের তথ্য বলছে, ১৯৬৭ থেকে ১৯৬৯ ‘আয়রন লেডির স্বর্ণযুগে পাকমদতপুষ্ট জঙ্গি আক্রমণে নিহত ভারতীয় নাগরিকের সংখ্যা ছিল ১৬৯ জন। তখন যেভাবে আয়রন লেডি চুপ ছিলেন, আপনাকেও একইভাবে চুপ থাকতে হতো, আপনি তো তাঁর মতো ‘বীর’ নন, তাই পাকিস্তানের ভিতর ১০০ কিলোমিটার ঢুকে একশোরও বেশি জঙ্গি নিকেশ করে এলেন, ১১টি সেনা বিমানঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়ে এলেন, কান্দহার বিমান অপহরণের মূলচক্রী রউফ আজহারকে ঘরে ঢুকে মেরে এলেন, রহিম ইয়ার খান এয়ারবেস- যার অনতিদূরেই পাকিস্তানের নিউক্লিয়ার পাওয়ার সেন্টার তার পাশে মিসাইল হামলা করলেন, মুরিদ এয়ারবেস ধ্বংস করে দিলেন, ১৯৬০ সালে ‘তাঁর’ বাবার হাতে তৈরি জমিদারির-দানখয়রাত ‘সিন্ধু জল বিতরণ চুক্তি’ বাতিল করে দিলেন, মার্কিন এফ-১৭ জেট ভূপতিত করলেন, একটাও মিসাইল-ড্রোন হামলাকে কার্যকর হতে দিলেন না। আয়রন লেডির আমলে পাকিস্তান অমৃতসর বিমানঘাঁটিতে ২টি ৫০০ কেজির বোমা ফেলেছিল, পাঠানকোট বিমান ঘাঁটিতে ৮টি ১২৫ কেজির বোমা ফেলে ধ্বংসলীলা চালিয়েছিল, ভারত সেদিন সেটা আটকাতে পারেনি। আর আপনি আজ ওদের ড্রোন, মিসাইল, যুদ্ধবিমান সব ধ্বংস করে দিলেন, তাহলে আপনি কী করে আয়রন লেডি হতে পারবেন মোদীজী!
আরও শুনে রাখুন মোদীজী, আয়রন লেডি হতে গেলে আপনার মতো ১৪ দিন পরে নয়, ১৯৭১-এর মতো ৯ মাস অপেক্ষা করে যুদ্ধে যেতে হয়। আয়রন লেডি হতে গেলে পাকিস্তানের ৯৩ হাজার যুদ্ধবন্দিকে বিনা শর্তে ভুট্টোর কাছে উপঢৌকন দিয়ে আসতে হয়। আর আয়রন লেডি হতে গেলে পাকিস্তানের হাতে যুদ্ধবন্দি ৫৬ জন ভারতীয় সেনাকে মুক্ত না করে তাদের লাহোরের জেলে পচিয়ে মারতে হয়। এর কোনোটাই যে আপনি করেননি মোদীজী! তবে কীভাবে আপনি নিজেকে আয়রন লেডির মতো শক্তিশালী বলে নিজেকে প্রমাণ করতে পারবেন!
যাঁরা ১৯৭১ সালের যুদ্ধ নিয়ে ইন্দিরা গান্ধীর পিঠ চাপড়াচ্ছেন, তাদের অবশ্যই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পরবর্তী অধ্যায়টি ভালো করে জানা উচিত। যুদ্ধে সেদিন ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সেনা ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। ভারতের বীর সেনাবাহিনী সিন্ধুর থারপারকার জেলাকে ভারতে অন্তর্ভুক্ত করে এটিকে গুজরাটের একটি নতুন জেলা বলে ঘোষণা করেছিল। মুজাফ্ফরাবাদ সংসদে তোলা হয়েছিল ভারতের জাতীয় পতাকা। জুলফিকার আলি ভুট্টো যুদ্ধে হেরে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সিমলা চুক্তি স্বাক্ষর করতে এলেন। সঙ্গে কন্যা বেনজির ভুট্টো। ইন্দিরা গান্ধী ভুট্টোর সামনে শর্ত রাখলেন, ‘যদি আপনি আপনার ৯৩ হাজার সৈন্য ফেরত চান তবে আমাদের পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফেরত দিন’। ভুট্টো বলেছিলেন, ‘আপনি এই ৯৩ হাজার সৈন্য আপনার কাছে রাখুন, আমরা কাশ্মীর দেব না। স্বাক্ষরও করব না’। ইন্দিরা গান্ধী ভাবতেও পারেননি যে ভুট্টো এই উত্তর দেবে। পুপুল জয়কার এবং কুলদীপ নায়ার দুজনেই তাঁদের বইয়ে লিখেছেন, ‘ইন্দিরা গান্ধী এর উত্তর শুনে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন’। ভুট্টো সন্ধ্যায় হোটেলে তার মেয়ে বেনজির ভুট্টোকে বলেছিলেন, ‘এই যুদ্ধে ভারতের মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে। বাংলাদেশি উদ্বাস্তুদের বোঝা ভারত ইতিমধ্যেই বহন করেছে। এখন ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যকে জায়গা দেবে কোথায়? আমরা যা বলবো ইন্দিরা তা মানতে বাধ্য’।
পাকিস্তানের শর্তেই সেদিন সিমলা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। যুদ্ধে জিতেও আয়রন লেডি সেদিন পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফিরিয়ে আনতে পারেননি। বরং বাধ্য হয়ে ৯৩ হাজার সৈন্য ফিরিয়ে দিয়েছিলেন আর ভারতের ৫৬ জন যুদ্ধবন্দি সেনাকে পাকিস্তানের কারগারে মরতে রেখে দিয়েছিলেন। ৮ মাস পর গুজরাট রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থারপারকার জেলাকেও ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তৎকালীন সেনাপ্রধান স্যাম মানেক’শ অবসর গ্রহণের পর তাঁর লেখা বই ‘The India-Pakistan War of 1971: A History’-তে লিখেছেন, ‘আমরা এই ‘যুদ্ধ লড়াইয়ের ময়দানে জিতেছি, কিন্তু চুক্তির টেবিলে রাজনীতিবিদরা ভারতকে হারিয়ে দিয়েছে’। এই ছিলেন আমাদের আয়রন লেডি। নিন্দুকেরা এঁর নাম নিয়ে আজ নরেন্দ্র মোদীকে খোঁটা দিচ্ছে!
না, ভারতের আর ওরকম আয়রন লেডির দরকার নেই। বরং এখন আমাদের এখানকার মতো ভীরু নরেন্দ্র মোদীই ভালো, যিনি পাকিস্তানের চোখে চোখ রেখে উরি হামলার পর পাকিস্তানে ঢুকে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করতে পারেন, পুলওয়ামার বদলায় এয়ারস্ট্রাইক করতে পারেন, আর পহেলগাঁওয়ের বদলা হিসেবে পাকিস্তানে ঢুকে যোগ্য জবাব দিতে পারেন। যিনি পাকিস্তানকে চোখ রাঙিয়ে বলতে পারেন ‘সমঝে যাও, অপারেশান সিঁদুর স্থগিত হয়েছে মাত্র, বন্ধ করা হয়নি। সেনাকে ‘খুলি ছুট’ দেওয়া আছে। ওপার থেকে গুলি এলে, এপার থেকে গোলা চলবে। আবার ঘরে ঢুকে মারবো’। আমাদের এই মোদীই ভালো। এই মোদীই ভারতের আইকন।

READ ALSO

29th September উত্তর সম্পাদকীয়

29th September উত্তর সম্পাদকীয়

October 7, 2025
15th September উত্তর সম্পাদকীয়

15th September উত্তর সম্পাদকীয়

September 16, 2025
ShareTweetShare

Related Posts

29th September উত্তর সম্পাদকীয়
উত্তর সম্পাদকীয়

29th September উত্তর সম্পাদকীয়

October 7, 2025
15th September উত্তর সম্পাদকীয়
উত্তর সম্পাদকীয়

15th September উত্তর সম্পাদকীয়

September 16, 2025
08th September উত্তর সম্পাদকীয়
উত্তর সম্পাদকীয়

08th September উত্তর সম্পাদকীয়

September 11, 2025
01st September উত্তর সম্পাদকীয়
উত্তর সম্পাদকীয়

01st September উত্তর সম্পাদকীয়

September 1, 2025
25th August উত্তর সম্পাদকীয়
উত্তর সম্পাদকীয়

25th August উত্তর সম্পাদকীয়

August 26, 2025
18th August উত্তর সম্পাদকীয়
উত্তর সম্পাদকীয়

18th August উত্তর সম্পাদকীয়

August 20, 2025

POPULAR NEWS

4th September 2023 Rajjopat

4th September 2023 Rajjopat

September 21, 2023
৩৫০ বছর পর দেশে ফিরছে শিবাজীর বাঘনখ

৩৫০ বছর পর দেশে ফিরছে শিবাজীর বাঘনখ

October 2, 2023
কেশব ভবনে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী হানা

কেশব ভবনে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী হানা

October 4, 2023
4th September Angana

4th September Angana

September 21, 2023
2nd October 2023 Parampara

2nd October 2023 Parampara

October 1, 2023

EDITOR'S PICK

2nd October 2023 Oththi Kalam

2nd October 2023 Oththi Kalam

October 1, 2023
21st April বিশ্বামিত্রর কলম

21st April বিশ্বামিত্রর কলম

May 5, 2025
23rd June অতিথি কলম

23rd June অতিথি কলম

June 23, 2025
01st September পরম্পরা

01st September পরম্পরা

September 2, 2025

About

Follow us

Categories

  • Uncategorized
  • অতিথি কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • পরম্পরা
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • রাজ্যপাট
  • সঙ্ঘবার্তা
  • সম্পাদকীয়
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি

Recent Posts

  • 29th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • 29th September পরম্পরা
  • 29th September পরম্পরা
  • 29th September পরম্পরা

© 2023 Swastika. All rights reserved.

No Result
View All Result
  • হোম
  • সম্পাদকীয়
  • রাজ্যপাট
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি
  • অতিথি কলম
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • পরম্পরা
  • ই -পত্রিকা

© 2023 Swastika. All rights reserved.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?