• About
  • Contact Us
Sunday, October 19, 2025
Swastika
No Result
View All Result
  • হোম
  • সম্পাদকীয়
  • রাজ্যপাট
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি
  • অতিথি কলম
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • পরম্পরা
  • সঙ্ঘবার্তা
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • ই -পত্রিকা
  • হোম
  • সম্পাদকীয়
  • রাজ্যপাট
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি
  • অতিথি কলম
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • পরম্পরা
  • সঙ্ঘবার্তা
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • ই -পত্রিকা
No Result
View All Result
Morning News
No Result
View All Result
Home প্রচ্ছদ নিবন্ধ

26th May প্রচ্ছদ নিবন্ধ

in প্রচ্ছদ নিবন্ধ
26th May প্রচ্ছদ নিবন্ধ

Issue 77-38-26-05-2025

স্বাধীনতাযুদ্ধের অগ্রণী সেনানী মহানায়ক রাসবিহারী বসু
প্রণব দত্ত মজুমদার
বঙ্গ প্রদেশে ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে বিপ্লবী কর্মকাণ্ড বাড়তে থাকায় ইংরেজ সরকার ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার রাজধানী দিল্লিতে সরিয়ে নিয়ে যায় ১৯১২ সালে। ঠিক হলো, ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রতিভূ ভাইসরয় হার্ডিঞ্জ মহা জাঁকজমক করে হাতির পিঠে মণিমুক্তা খচিত হাওদায় বসে, রাজছত্র শোভিত হয়ে, সস্ত্রীক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে লালকেল্লার দরবারে গিয়ে বসবেন। দেশীয় সামন্ত, রাজা, মহারাজা ও উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীরা সভা আলো করে বসবেন এবং বড়লাটের প্রতি তাঁদের সম্মান ও আনুগত্য প্রদর্শন করবেন। বড়লাট সাহেবও তাঁদের যথোচিত উপহার ও খেতাব প্রদান করবেন সম্রাট যেমন করে থাকেন। প্রজারা রাস্তায় জমায়েত হয়ে তাঁর শোভাযাত্রা অবাক বিস্ময়ে দেখবেন। সিপাই শাস্ত্রী দিয়ে সুরক্ষার বিপুল বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। কিন্তু অপ্রতিরোধ্য ব্রিটিশ রাজশক্তির অহংকারকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছিলেন এক বাঙ্গালি বিপ্লবী।
বড়লাট যখন সস্ত্রীক হাতির পিঠে চেপে, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে দিল্লির চাঁদনিচকের রাস্তা ধরে তাঁর সভাস্থলের দিকে যাচ্ছিলেন, তখন সেখানে শোভাযাত্রা দেখার জন্য রাস্তার ধারে মানুষের সারি, আশেপাশের বাড়ির বারান্দায়, ছাদে মানুষের ভিড়। রাস্তার ধারে কাটরাধুলিয়ার কাপড়চোপড়ের পাইকারি বাজার আছে, সেখানেও শোভাযাত্রা দেখার জন্য নারী-পুরুষের ভিড়। ওখানে রাস্তার ধারে একটি বিল্ডিঙের একতলায় পুরুষদের ভিড়; আর দোতলায় সব আশেপাশের মেয়েবউরা ভিড় জমিয়েছিল সস্ত্রীক বড়লাট সাহেবকে দেখার জন্য। বড়লাটসাহেবের শোভাযাত্রা সেই বিল্ডিঙের পাশ দিয়ে যখন যাচ্ছিল তখন দোতলায় মেয়েবউদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গেল তাঁদের একটু ভালো করে দেখার জন্য। অন্য কারুর দিকে নজর দেওয়ার মতো অবকাশ তখন তাদের ছিল না। সেই সময় সকলের অলক্ষ্যে অল্পবয়সি সুন্দরী এক তরুণী তাঁর অঙ্গবস্ত্রের ভিতর থেকে বোমা বের করে ছুঁড়লেন বড়লাট হার্ডিঞ্জকে লক্ষ্য করে। তীব্র শব্দে ফাটল সেই বোমা। চারিদিকে ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে গেল। মাহুত মারা গেল। বড়লাট অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন। সিংহাসনে বসার বদলে ডাক্তারের টেবিলে শায়িত হলেন তিনি। চারিদিকে চিৎকার চেঁচামেচি হুড়োহুড়ির মধ্যে কেউ কিছু বোঝার আগেই সেই সুন্দরী তরুণী এবং তার সঙ্গী জনতার ভিড়ে মিলিয়ে গেলেন। কে বা কারা এই ভয়ানক কাণ্ড ঘটাল অনেকদিন পর্যন্ত পাগলা কুকুরের মতো ঘুরেও ব্রিটিশ পুলিশ তার হদিশ করতে পারল না।
ওই ছদ্মবেশী তরুণের নাম- বিপ্লবী বসন্ত কুমার বিশ্বাস। তাঁর সঙ্গী যাঁর পরিকল্পনায় এবং নেতৃত্বে ঘটেছিল এই ভয়ানক ঘটনা তিনি আর কেউনন বিপ্লবী মহানায়ক রাসবিহারী বসু। তিনি ব্রিটিশ রাজশক্তিকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিলেন; কিন্তু এই অসম্ভব বুদ্ধিমান বিপ্লবীনায়ককে ব্রিটিশের ধুরন্ধর গোয়েন্দা পুলিশ কোনোদিন গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি। তিনি পরে জাপানে আত্মগোপন করে তৈরি করেছিলেন ‘ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগ’ এবং ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি’ বা ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’। পরবর্তীকালে যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু। শুধু ভারতবর্ষ নয়, পুরো এশিয়ার মুক্তি আন্দোলনে তিনি বিরাট ভূমিকা পালন করেছিলেন। জাপান সরকার তাঁকে জাপানের সর্বোচ্চ সম্মান প্রদান করেছেন; অথচ এই মহান বিপ্লবীর কথা খুব কমই হয় আলোচনা করেছেন তথাকথিত ঐতিহাসিকরা আমাদের দেশে।
১৮৮৬ সালের ২৫ বর্ধমানের প্রত্যন্ত গ্রাম সুবলদহে রাসবিহারীর জন্ম। পিতার নাম বিনোদবিহারী বসু, পিতামহ কালীচরণ বসু। শিশুবয়সেই মাতৃহারা হন রাসবিহারী। পিতা সিমলায় সরকারি প্রেসে করণিকের চাকরি করতেন। পিতা দ্বিতীয়বার বিবাহ করেন এবং ফরাসি উপনিবেশ চন্দনগরে একটি বাড়ি কিনে সেখানে পরিবারকে পাঠিয়ে দেন বসবাসের জন্য। পিতামহ, পিতামহী এবং অত্যন্ত স্নেহময়ী বিমাতার কাছে থেকে চন্দননগরে মানুষ হতে থাকেন রাসবিহারী। ছাত্র হিসেবে অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন তিনি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যায়াম, কুস্তি, সাঁতার ইত্যাদি শরীরচর্চার মাধ্যমে দৈহিকভাবে বলশালী হয়ে উঠেছিলেন। মাতৃহীন দামাল দুরন্ত ছেলে, চারিদিকে ঘুরে বেড়ান, নানান লোকের সঙ্গে মেশেন। ফরাসি কলোনি হওয়ার সুবাদে বহু বিপ্লবীর গোপন ডেরা ছিল চন্দননগরে। সেসব জায়গায় যাতায়াত বাড়ে তাঁর। চারুচন্দ্র রায়ের বিপ্লবী সংগঠন সুহৃদ সম্মিলনী, প্রবর্তক সঙ্ঘের বিপ্লবী শ্রীঅরবিন্দের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মতিলাল রায়, শ্রীশ চন্দ্র ঘোষ প্রমুখর সংস্পর্শে আসেন তিনি। শ্রীশ চন্দ্র ঘোষের মাধ্যমে পরিচিতি ও ঘনিষ্ঠতা হয় উত্তরপাড়া নিবাসী বিখ্যাত বিপ্লবী অমরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। স্বামী বিবেকানন্দ ও শ্রীঅরবিন্দের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হন রাসবিহারী। অনুশীলন সমিতি ও যুগান্তর দলের বিপ্লবীদের সঙ্গেও গোপন যোগাযোগ হয় তাঁর। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লেখাপড়ার সঙ্গে দেশভক্তির চেতনা মাথাচাড়া দিতে থাকে। প্রথাগত লেখাপড়ার চাইতে দেশের স্বাধীনতাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠে ১৬/১৭ বছর বয়সি মেধাবী ছেলেটির কাছে। ইংরেজের সঙ্গে লড়াই করতে গেলে যুদ্ধবিদ্যা শিখতে হবে। এইসব চিন্তাভাবনা তখন তাঁর মাথার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। উত্তর ভারতে অনেক দেশীয় রাজ্য আছে। সেরকমই কোনো একটি রাজ্যের সৈন্যদলে যোগ দিয়ে যুদ্ধবিদ্যা শিখবেন। এইরকম চিন্তাভাবনা থেকেই একদিন বাড়ি থেকে পালালেন রাসবিহারী। কিন্তু ট্রেনের কামরায় এক পরিচিত ভদ্রলোকের হাতে ধরা পরে গেলেন। তিনি বাড়ি থেকে পালানো ছেলেটিকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে গেলেন।
ছেলের মতিগতি ভালো ঠেকছে না দেখে বাড়ির লোকেরা সিমলায় পিতার কাছে খবর দিলেন। পিতা এসে ঠিক করলেন ছেলেকে চন্দননগরে আর রাখবেন না। নিয়ে চলে গেলেন সিমলায়। ছেলের পড়াশোনা থেকে মন উঠে গেছে দেখে পিতা যেখানে চাকরি করতেন সেই সরকারি প্রেসে কপি এডিটরের চাকরিতে ঢুকিয়ে দিলেন। সিমলায় চাকরি করার সময় খুব ভালোভাবে ইংরেজি শিখছিলেন তিনি, টাইপ রাইটিং ও শর্টহ্যান্ডের কাজটাও খুব ভালোভাবে শিখেছিলেন। সিমলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হলেন রাসবিহারী। তিনি ধ্রুপদী সংগীত এবং বেহালা বাদনে বেশ পারদর্শিতা অর্জন করেছিলেন। সিমলার নাট্য সমিতিতেও যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর অভিনয় ক্ষমতা ওখানকার অনেককেই মুগ্ধ করেছিল। তাঁর এই অভিনয় ক্ষমতার বলেই তিনি ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের বোকা বানাতেন; ব্রিটিশের পুলিশ কোনোদিন তাঁকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি। পিতার সঙ্গে বেশিদিন তাঁর সিমলায় থাকা হলো না। কোনো এক কারণে পিতার সঙ্গে তাঁর মনোমালিন্য হয় এবং সিমলা থেকে আবার পলায়ন করেন। বেশ কিছুকাল পরে পিতা-মাতা (স্নেহময়ী বিমাতাকে তিনি মাতার মর্যাদা দিয়েছিলেন) জানতে পারেন পারেন যে তিনি দেরাদুনে সরকারি বনবিভাগে (Indian Forest Research Institute) করণিকের চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। তার আগে অবশ্য কিছুকাল কসৌলিতে কাজ করেছিলেন।
শিক্ষিত মার্জিত আচার ব্যবহারের কারণে তিনি সবার কাছেই খুব প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন সেখানে। মেধা ও অধ্যবসায়ের ফলে তিনি ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু, ফ্রেঞ্চ ও বাংলাভাষায় বিশেষ ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছিলেন। সরকারি বনবিভাগে কাজ করার সুবাদে একটি সুযোগ তাঁর কাছে এসে যায়। তখন দেরাদুনে যেসব বড়ো বড়ো সরকারি ইংরেজ অফিসার থাকতেন তাঁদের বাংলা শেখানোর গৃহশিক্ষক হয়ে গেলেন তিনি। তখন সরকারি ইংরেজ অফিসারদের ক্ষেত্রে একটি নিয়ম চালু হয়েছিল যে তাঁরা যদি কোনো একটি দেশীয় ভাষা শিখতে পারেন তবে অতিরিক্ত অর্থ পাবেন; তাই অনেক বড়ো বড়ো ইংরেজ অফিসার এদেশীয় ভাষা শিখতে আরম্ভ করেছিলেন। গৃহ শিক্ষক হিসেবে বড়ো বড়ো ইংরেজ অফিসারদের ঘরের মানুষ হয়ে গেলেন রাসবিহারী। মনে মনে ইংরেজ শাসনকে ঘৃণা করলেও চতুর বুদ্ধিমান রাসবিহারী প্রকাশ্যে রাজানুগত্য দেখিয়ে চলতেন। কাজেই তাঁর গোপন বিপ্লবী কাজকর্মে কেউ কোনো সন্দেহই করত না। এমনকী ইংরেজ অফিসাররা তাঁকে এতটাই ভরসা করতেন যে এক ইংরেজ পুলিশকর্তা মিস্টার ডেনহাম তাঁকে গোয়েন্দার কাজেও নিযুক্ত করেছিলেন। এই কাজকে তিনি রক্ষাকবচ হিসেবে নিয়েছিলেন।
ছুটি পেলেই তিনি চন্দননগরে চলে আসতেন। গুপ্ত বিপ্লবী দলের বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিপ্লবী কাজকর্ম চালিয়ে যেতে লাগলেন। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন আরম্ভ হলো। সারা বঙ্গজুড়ে স্বদেশী আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়ল। সেই আন্দোলনের ঢেউ সারা দেশেই পড়েছিল। বিশেষ করে পঞ্জাবে ও মহারাষ্ট্রে। রাসবিহারীর সাংগঠনিক ক্ষমতাও ভীষণ ভালো ছিল। কী করে গুপ্ত বিপ্লবী দল অন্য প্রদেশে গড়ে তলা যায় সে ব্যাপারে তিনি সচেষ্ট ছিলেন। পঞ্জাবের বিপ্লবীদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। দেরাদুনে থাকার সময় তাঁর সঙ্গে উত্তপপ্রদেশের সাহারানপুরের জিতেন্দ্রমোহন চ্যাটার্জির বন্ধুত্ব হয়। তিনি পঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশের (তখনকার ইউনাইটেড প্রভিন্স) বিপ্লবীদের নেতা ছিলেন। এইভাবে রাসবিহারী পঞ্জাবের বিপ্লবী নেতা সর্দার অজিত সিংহ (ভগৎ সিংহের কাকা), সুফি অম্বাপ্রসাদ প্রমুখ বিপ্লবীর সংস্পর্শে আসেন। পরিচয় হয় দিল্লির বিপ্লবী নেতা স্কুলশিক্ষক আমীর চাঁদের সঙ্গে। এভাবে দেরাদুনে থাকার সময় রাসবিহারী গোপনে তাঁর বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের পরিধি বঙ্গপ্রদেশের বাইরে অনেকদূর বিস্তার করেছিলেন।
এই সময় ১৯০৭-০৮ সালে পঞ্জাবে ইংরেজ সরকার ব্রিটিশবিরোধী কার্যকলাপের প্রেক্ষিতে লালা লাজপত রাই এবং সর্দার অজিত সিংহকে গ্রেপ্তার করে বার্মার মান্দালয় জেলে পাঠিয়ে দেয়। বিপ্লবী জিতেন্দ্র মোহন চ্যাটার্জি গ্রেপ্তারের হাত থেকে বাঁচার জন্য পঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশে তাঁর বিপ্লবী কাজকর্মের দায়িত্ব রাসবিহারীর হাতে দিয়ে আত্মগোপনের জন্য বিদেশে চলে যান। এভাবে রাসবিহারীকে কেন্দ্র করে বঙ্গের বাইরে একটি বিপ্লবী চক্র গড়ে উঠল। কিন্তু ইংরেজ প্রশাসক এসব ঘুণাক্ষরেও তার টের পেল না। কারণ তিনি দেরাদুনে এমন রাজভক্ত কর্মচারীর ভান করতেন যে তাঁর উপরওয়ালারা তাঁকে কোনোরকম সন্দেহই করতেন না। ১৯০৮ সালে ২৯ এপ্রিল মুজফ্ফরপুরে কিংসফোর্ডের উপরে ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকীর বোমা নিক্ষেপে সারাদেশ হতচকিত হয়ে পড়ে। ইংরেজ পুলিশ মানিকতলায় (মুরারীপুকুর বাগানবাড়ি) বিপ্লবীদের গোপনে বোমা তৈরির আস্তানার খোঁজ পেয়ে যায়। একে একে ধরা পড়েন শ্রীঅরবিন্দের ভাই বারীন্দ্র ঘোষ, উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, উল্লাসকর দত্ত, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, কানাইলাল দত্ত, নরেন্দ্রনাথ গোস্বামী (নরেন গোঁসাই) প্রমুখ বিপ্লবী। ইংরেজ সরকার শ্রীঅরবিন্দ ঘোষকেই এই কাজের হোতা হিসেবে গ্রেপ্তার করে। শুরু হয় বিখ্যাত আলিপুর বোমার মামলা। ক্ষুদিরাম ধরা পড়ে গিয়েছিলেন। ১৯০৮ সালে ১১ আগস্ট মুজফফরপুর জেলেই ক্ষুদিরামকে ফাঁসি দেয় ইংরেজ সরকার। প্রফুল্ল চাকী ধরা পড়ার আগে নিজের পিস্তলের গুলিতে আত্মবলিদান দিয়েছিলেন।
সারাদেশে বিপ্লবীদের মধ্যে এই ঘটনার তীব্র প্রভাব পড়েছিল। এই সময় ইংরেজ সরকার অত্যন্ত ভীত হয়ে অশ্বিনী দত্ত, সুবোধ মল্লিক, পুলিন দাস, শচীন্দ্রনাথ বসু প্রমুখ বঙ্গের অনেক বিশিষ্ট নেতাকে গ্রেপ্তার করে। পঞ্জাবের নেতারাও যেমন- হরদয়াল, সুফি অম্বাপ্রসাদ, সর্দার অজিত সিংহ গ্রেপ্তারের আশঙ্কায় দেশ ছেড়ে চলে যান। রাসবিহারী এই সময় বঙ্গ থেকে পলাতক অনেক বিপ্লবীকেই পঞ্জাব বা অন্য জায়গায় আত্মগোপন করতে সহায়তা করেছিলেন। বিখ্যাত নেতাদের অবর্তমানে বঙ্গ ও পঞ্জাবের বিপ্লবী দলের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন দুই তরুণ নেতা- যথাক্রমে যতীন মুখার্জি (বাঘা যতীন) ও রাসবিহারী বসু। দুজনেই ছিলেন ইংরেজ সরকারের কর্মচারী। বঙ্গের বিপ্লবীদের ভয়ে ইংরেজ সরকার দিল্লিতে রাজধানী সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
এসময় রাসবিহারী ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে বড়ো একটা কিছু করার কথা ভাবতে থাকেন; যাতে ইংরেজ সরকার দিল্লিতে রাজধানী সরিয়ে নিয়ে গেলেও বিপ্লবীদের হাত থেকে নিস্তার না পায়। ১৯১১-তে তিনি দু-তিনবার চন্দননগরে আসেন। শ্রীঅরবিন্দের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মতিলাল রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। যোগাযোগ করেন বিপ্লবী অমরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। মতিলাল রায়ের কাছে দুই বিপ্লবী বসন্ত কুমার বিশ্বাস ও মন্মথনাথ বিশ্বাস বোমা বানানোতে পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন। এরা দুজনই খুবই বিশ্বাসী এবং দেশের জন্য প্রাণ দিতে প্রস্তুত। এই দুই বিপ্লবীকে সঙ্গে করে নিয়ে যান রাসবিহারী। মন্মথনাথকে কাশীতে বিপ্লবী নেতা শচীন সান্যালের কাছে পাঠিয়ে দেন; আর ১৬-১৭ বছরের বসন্তকুমার বিশ্বাসকে সঙ্গে করে দেরাদুন নিয়ে যান। সেখানে বসন্তকুমারকে তাঁর রান্নার লোক পরিচয় দিয়ে নিজের কাছে রাখলেন এবং বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতার ট্রেনিং দিতে লাগলেন। দেরাদুনে একটি বড়ো নির্জন বাগানবাড়িতে বোমা নিক্ষেপের মহড়াও দিয়েছিলেন তাঁরা। কয়েক মাস ট্রেনিং, এরপর বসন্তকুমারকে লাহোরে বিপ্লবী দলেরই একজনের ওষুধের দোকানে কম্পাউন্ডারের কাজে ঢুকিয়ে দেন। নিখুঁত ছকে এগুতে লাগলেন রাসবিহারী। তিনি ঠিক করেই ফেলেছিলেন ১৯১২ সালে রাজধানী স্থানান্তরের অনুষ্ঠানে বড়লাটের উপর চূড়ান্ত আঘাত হানবেন। রাজধানী পরিবর্তনের দিন এবং জাঁকজমকপূর্ণ শোভাযাত্রার কথা অনেক আগেই ঘোষণা করে সেইভাবে ইংরেজ সরকারের প্রস্তুতি চলছিল; আর এদিকে রাসবিহারীও তাঁর ঘনিষ্ঠ বিপ্লবীদের নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
অবশেষে এসে গেল সেই ঐতিহাসিক দিন। ১৯১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর। বেলা ১১-৪৫। রাসবিহারী ছদ্মবেশে, বসন্ত বিশ্বাসকে সুন্দরী তরুণীর বেশে সাজিয়ে উপস্থিত হলেন দিল্লির চাঁদনিচকে কাতরাধুলিয়ার একটি নির্দিষ্ট জায়গায়, যেখান দিয়ে ভাইসরয়ের শোভাযাত্রা যাবে। তারপর বড়োলাটের উপর নিক্ষিপ্ত হলো বোমা- যে ঘটনা আগেই বর্ণনা করা হয়েছে। কোলাহলের মধ্যে উধাও হয়ে গেলেন তাঁরা। বসন্ত ট্রেনে চলে গেলেন লাহোর আর রাসবিহারী চলে গেলেন দেরাদুন।
পাকা অভিনেতা রাসবিহারী রাজভক্ত কর্মচারীর ভড়ং করে দেরাদুনে ফরেস্ট রিসার্চ ইন্সিটিউটে একটি সভার আয়োজন করেন এবং ভাইসরয়ের উপর এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা করেন। শুধু তাই নয়, কয়েক মাস পরে ভাইসরয় সাহেব যখন দেরাদুনে ফরেস্ট রিসার্চ ইন্সিটিউট পরিদর্শনের আসেন তখন ওখানকার কর্মচারীদের নিয়ে একটি সংবর্ধনা কমিটি গঠন করেন রাসবিহারী এবং তাঁকে সংবর্ধনা দেন। এতবড়ো ঘটনার জন্য কেউ রাসবিহারীকে ঘুণাক্ষরেও সন্দেহ করল না। ইংরেজের পুলিশ, গোয়েন্দারা পাগলা কুকুরের মতো খুঁজেও তখনকার মতো ঘটনার কোনো হদিস করতে পারল না।
১৯১৩ সালের মে মাসে আর একটি ঘটনা ঘটালেন বিপ্লবীরা। লাহোরে বসন্ত বিশ্বাস পঞ্জাবের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার গর্ডন সাহেবের উপর বোমা নিক্ষেপ করলেন। অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন গর্ডন সাহেব। মারা গেলেন একজন পথচারী। বসন্ত বিশ্বাস পালিয়ে গেলেন। বোমার রাসায়নিক পরীক্ষা করে দেখা গেল, এর মশলার উপাদান ভাইসরয়কে যে বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছিল তার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। পুলিশ পাগলের মতো অপরাধীদের সন্ধান করতে লাগলো। পুলিশের জালে ধরা পড়লেন দিল্লির সেন্ট জোসেফ স্কুলের শিক্ষক আমীরচাঁদ। আমীরচাঁদের বাড়ি তল্লাশি করে পাওয়া যায় দীননাথ তলোয়ার বলে একজনের নাম। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এই দীননাথ তলোয়ার পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি করে বসে। ভাইসরয়কে বোমা মারার দুদিন আগে দিল্লিতে আমীর চাঁদের বাড়িতে বিপ্লবীরা মিটিং করেছিলেন। একে একে ধরা পড়েন অবোধবিহারী, বসন্ত বিশ্বাসকে লাহোরে ওষুধের দোকানে কম্পাউন্ডারের চাকরি দিয়ে রেখেছিলেন যিনি সেই বালমুকুন্দ। বসন্ত বিশ্বাস রাসবিহারীর নির্দেশে নদীয়াতে তাঁর গ্রামের বাড়ি চলে এসেছিলেন। তখন তাঁর পিতার মৃত্যু হয়েছিল। তিনি তার শেষকৃত্যে যোগদান করতে এসেছিলেন। তাঁর এক কাকা বিশ্বাসঘাতকতা করে তাঁকে পুলিশে ধরিয়ে দিলেন। একে একে রহস্যের জট খুলতে থাকে। দীননাথ তলোয়ার রাজসাক্ষী হয়ে যায়।
দিল্লির দায়রা জজ হ্যারিসন সাহেব সাক্ষ্য প্রমাণাদি বিচার করে দিল্লি ষড়যন্ত্র মামলার রায় দিলেন। ওই রায়ে আমীরচাঁদ, বালমুকুন্দ, অবোধ বিহারী ও বসন্ত বিশ্বাসের ফাঁসির হুকুম হয়। রায়ে জজসাহেব বলেন এই ঘটনার মূল হোতা হলেন রাসবিহারী বসু। ইংরেজ প্রশাসক যারা রাসবিহারীকে চিনতেন তাঁরা অনেকেই রাজভক্ত। রাসবিহারী যে এই কাজ করতে পারেন তা বিশ্বাস করতে পারলেন না। তাঁরা অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বললেন-পুলিশের কোনো ভুল হচ্ছে না তো? কিন্তু সাক্ষ্য প্রমাণাদি দেখে জজসাহেব নিঃসন্দেহ। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বের হলো রাসবিহারীর বিরুদ্ধে। ঘোষিত হলো বড়ো অঙ্কের পুরস্কার। কিন্তু রাসবিহারীকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না। কোথায় রাসবিহারী?
রাসবিহারী তখন দেশের স্বাধীনতার লক্ষ্যে ইংরেজের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংগ্রামের পরিকল্পনায় বিদেশের পথে পাড়ি দিয়েছেন।


বিপ্লবী মহানায়ক রাসবিহারী বসুর মন্ত্রশিষ্য বিপ্লবী বসন্ত কুমার বিশ্বাস
তরুণ বিশ্বাস
ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রথম যুগের এক জ্বলন্ত অগ্নিশিখা বিপ্লবী বসন্ত কুমার বিশ্বাস। সেই সময় এই তরুণ বিপ্লবী কাঁপিয়ে তুলেছিলেন কৃষ্ণনগর থেকে দেরাদুন, লাহোর, দিল্লি-সহ সমগ্র উত্তর ভারত। ১৮৯৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি নদীয়ার পোড়াগাছা গ্রামে এক বনেদি পরিবারে দেশপ্রেমের জ্বলন্ত প্রতীক বসন্ত বিশ্বাসের জন্ম। ১৮৬০ সালে নীলচাষিদের বিদ্রোহে নেতৃত্বদান করে দেশবাসীর কাছে সুপরিচিত ছিলেন তাঁর মেজদাদু পোড়াগাছার দিগম্বর বিশ্বাস ও চৌগাছার বিষ্ণুচরণ বিশ্বাস। বসন্ত বিশ্বাস তাঁর জ্ঞাতিভাই মন্মথনাথ বিশ্বাস নিকটবর্তী মাধবপুর গ্রামে প্রখ্যাত জমিদার, ইঞ্জিনিয়ার ও স্বাধীনতা সংগ্রামী গগনচন্দ্র বিশ্বাস প্রতিষ্ঠিত ‘মাধবপুর শ্রীমন্ত সিভিল ইংলিশ স্কুলে’-এ ভর্তি হন। পরে ১৯০৬ সালে তাঁরা ‘মুড়াগাছা উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ক্ষীরোদ চন্দ্র গাঙ্গুলি ছিলেন অগ্নিযুগের বিপ্লবী নেতা অমরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের যুগান্তর দলের সহকর্মী। তাঁদের অনুপ্রেরণায় বিশ্বাস ভ্রাতৃদ্বয় বৈপ্লবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯১০ সালে স্কুল ছেড়ে সম্পূর্ণভাবে দেশের কাজে আত্মনিয়োগ করার জন্য অমরেন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত স্বদেশী পণ্যের দোকান ‘শ্রমজীবী-সমবায় লিমিটেড’-এ কাজ শুরু করেন। দোকানটি ছিল বিপ্লবীদের একটি শক্ত গোপন ঘাঁটি। কিছুদিন পর অমরেন্দ্রনাথ দুই ভাইকে চন্দননগরে বিপ্লবী মতিলাল রায়ের কাছে পাঠান বোমা তৈরি, বোমা ছোড়াও বন্দুক চালানোর শিক্ষা নেওয়ার জন্য। মতিলাল রায়ের বাড়িতে রাসবিহারী বসুর সঙ্গে বসন্ত ও মন্মথনাথের পরিচয় হয়।
রাসবিহারী বসু ১৯০৮ সালে কলকাতার মুরারীপুকুর বোমা মামলায় জড়িত থাকায় দেরাদুনে আত্মগোপন করেছিলেন। সেখানে বনবিভাগের এক গবেষণা কেন্দ্রের হেড ক্লার্কের কাজ নিয়ে ‘টেগোর ভিলায়’ থাকছিলেন। রাসবিহারী বৈপ্লবিক কাজের জন্য বসন্তের সপ্রতিভ আচরণ, বুদ্ধিমত্তা ও সুদৃঢ় মানসিকতা দেখে তাঁকে অমরেন্দ্রনাথের অনুমতি নিয়ে দেরাদুনে নিয়ে যান। এখানে বসন্ত ‘বিশুদাস’ ছদ্মনাম নিয়ে রাসবিহারী বসুর কাজের লোক হিসেবে থাকেন। আগে বসন্ত অমরেন্দ্রনাথের কাছে বোমা তৈরি ও ব্যবহার করার পদ্ধতি শিখলেও বাসবিহারী পুনরায় তাঁকে প্রায় তিনমাস তালিম দিয়েছিলেন বোমা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে নিক্ষেপ করার। এখানে বসন্তের ওপর পুলিশের দৃষ্টি পড়ায় ১৯১২ সালের মাঝামাঝি বসন্তকে লাহোরে বিপ্লবী বলরাজের সহযোগিতায় সেখানকার ‘পপুলার ফার্মেসি’তে কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়।
রাসবিহারী বসু উত্তর ভারতের সমস্ত বিপ্লবী নেতৃত্বস্থানীয়দের নিয়ে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করেন। সেখানে একটি গুপ্ত উপদেষ্টা কমিটি গঠিত হয়। এই গুপ্ত কমিটিতে মাস্টার আমীরচাঁদ, দীননাথ তলোয়ার, বালমুকুন্দ, বলরাজ ও বসন্ত বিশ্বাস স্থান পান। বসন্ত হয়ে ওঠেন রাসবিহারী বসুর ডান হাত। ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর ব্রিটিশরাজ পঞ্চম জর্জ বঙ্গভঙ্গ আইন বাতিল বলে ঘোষণা করেন, সেই সঙ্গে ঘোষণা করেন ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করার কথা। সিদ্ধান্ত হয়েছিল আগামী বছর শোভাযাত্রা করে বড়লাট হার্ডিঞ্জ নতুন রাজধানী উদ্বোধন করবেন। রাসবিহারী এই সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য ১৯১২ সালের ১৩ অক্টোবর লাহোরে গুপ্ত সমিতির একটি বৈঠক করেন। সেখানে হার্ডিঞ্জের ওপর বোমা ছোঁড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বোমা ছোঁড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় কুশলী বোমা বিশেষজ্ঞ কিশোর বসন্ত বিশ্বাসকে। ঘোষণা মতো ১৯১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর বড়লাট হার্ডিঞ্জ হাতির পিঠে মুঘল বাদশার ব্যবহার করা হাওদায় চেপে স্থানীয় রাজন্যবর্গকে নিয়ে জাঁকজমকপূর্ণ শোভাযাত্রা সহকারে চাঁদনিচকের পথ ধরে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের সামনে দিয়ে জনসভার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রাসবিহারী বসুর নির্দেশে যথাস্থানে যথাসময় উপস্থিত হলেন বসন্তকুমার এক মহিলার ছদ্মবেশে। লীলাবতী নাম নিয়ে। প্রথমে ঠিক হলো চাঁদনিচকে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের বিপরীত দিকে প্রীতমদাসজীর বাড়ির দোতলার বারান্দায় মহিলাদের ভিড়ে মিশে সেখান থেকেই বসন্ত বড়লাটের শোভাযাত্রায় বোমা নিক্ষেপ করবেন।
কিন্তু শেষ মুহূর্তে রাসবিহারীর সুতীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তায় সেই পরিকল্পনা পালটে যায়। হার্ডিঞ্জের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা চাঁদনিচকের কাছে আসার আগেই বসন্ত রাসবিহারীর নির্দেশে মহিলার পোশাক পালটিয়ে পুরুষের বেশে রাজপথের ধারে এসে দাঁড়ালেন। কারণ বসন্ত সমতল ভূমি থেকে বোমা ছোঁড়া অভ্যাস করেছে। শোভাযাত্রাটি কাছে এলে রাসবিহারীর ইশারা পাওয়া মাত্র বসন্ত হাতির পিঠে বসে থাকা হার্ডিঞ্জকে লক্ষ্য করে বোমাটি ছুঁড়ে দেন। বিকট বিস্ফোরণ আর চোখ ধাঁধানো ঝলকানির মধ্যে শুধু একটা আওয়াজ ভেসে উঠল- ‘সাবাশ! মার ডালা।’ বোমার আঘাতে বড়লাট আহত হয়ে চূর্ণবিচূর্ণ হাওদার মধ্যে জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়েন। তাঁর পিঠে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা ছত্রধারীর দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। বিশৃঙ্খল জনতার ভিড়ের মধ্য দিয়ে বসন্ত এবং রাসবিহারী বসু পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। ব্রিটিশ সরকার শত চেষ্টা করেও অপরাধীকে ধরতে না পেরে এক লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে।
ব্রিটিশ সরকারকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য দেরাদুনে বিশাল জনসভায় রাসবিহারী বসু সভাপতি হিসেবে দাঁড়িয়ে হার্ডিঞ্জের ওপর বোমা নিক্ষেপ করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা করে জ্বালাময়ী বক্তব্য রাখেন। কিছুদিন পর রাসবিহারী বসুর কাছে খবর আসে সিলেট জেলার মৌলবি বাজারের মহকুমা শাসক অত্যাচারী গর্ডন সাহেব ‘দয়ানন্দ আশ্রমে’ গুলি চালিয়ে ক্যাপ্টেন মহেন্দ্র দত্তকে হত্যা করেছে এবং আশ্রমটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সেখানকার বিপ্লবীরা গর্ডনকে হত্যার চেষ্টা করে অসফল হন। সরকার আতঙ্কিত হয়ে তাঁকে লাহোরে বদলি করে। এবার রাসবিহারী গর্ডনকে হত্যার দায়িত্ব দিলেন বসন্ত বিশ্বাস ও অবোধবিহারীর ওপর। লাহোরে লরেন্স গার্ডেনে ‘মন্টোগোমারি হল নামে একটি নৈশক্লাব ছিল, সেখানে গর্ডন নিয়মিত যাতায়াত করতেন। ১৯১৩ সালে ১৭ মে সন্ধ্যাবেলায় পরিকল্পনা অনুযায়ী বসন্ত এবং অবোধবিহারী ‘লরেন্স গার্ডেনে’ যান, কিন্তু গর্ডনের নিরাপত্তা এতটাই নিশ্ছিদ্র ছিল যে বসন্তকুমার তাঁর ধারে-কাছে পৌঁছাতে পারেননি। তিনি বোমাটি গর্ডনের ফেরার পথের (জিমখানা লাইব্রেরি রোড) ওপর রেখে আসেন। গর্ডন সাহেব ফেরার আগেই রামপদ রথ নামে এক চাপরাশির সাইকেলের ধাক্কা লেগে বোমাটি ফেটে যায় এবং তার মৃত্যু ঘটে।
বসন্ত বিশ্বাস দিল্লি ও লাহোরে যে দুটি বোমা ব্যবহার করেছিলেন সে দুটি বোমা তৈরি করেছিলেন চন্দননগরের বিপ্লবী মণীন্দ্রনাথ নায়েক। বোমা দুটি দিল্লিতে নিয়ে যান বসন্ত কুমার বিশ্বাস চন্দননগরের জ্যোতিষচন্দ্র সিংহ। ব্রিটিশ সরকার বোমা নিক্ষেপকারীকে ধরার জন্য স্কটল্যান্ড থেকে সেরা গোয়েন্দা নিয়ে আসে। দিল্লি ও লাহোরে নিক্ষিপ্ত বোমার টুকরো পরীক্ষা করে তারা এই সিদ্ধান্তে আসে যে হার্ডিঞ্জকে মারা বোমাটি এবং লাইব্রেরি রোডে বিস্ফোরিত বোমা একই মালমশলায় এবং একই পদ্ধতিতে বানানো হয়েছে। সম্ভবত বঙ্গেই এই বোমা তৈরি হয়েছে।
অবশেষে পুলিশ কলকাতার রাজাবাজার ট্রামওয়ে অফিসারস্ মেসে তল্লাশি চালিয়ে কিছু বিস্ফোরক ও সাংকেতিক ভাষায় লেখা একটি চিঠি পায়। চিঠির মর্মোদ্ধার করে উত্তর ভারতে বিপ্লবী দীননাথ তলোয়ারের নাম পায় এবং তাঁকে গ্রেপ্তার করে। দীননাথ আত্মরক্ষার জন্য বিশ্বাসঘাতকতা করে রাজসাক্ষী হয়ে বিপ্লবী সহকর্মীদের নাম বলে দেয়। তিনি স্বহস্তে লিখে জানিয়ে দিলেন যে রাসবিহারী বসুর নির্দেশে হার্ডিঞ্জকে বোমা নিক্ষেপ করেছিলেন নদীয়ার বসন্ত বিশ্বাস। আমীর চাঁদ, অবোধবিহারী, বালমুকুন্দ ও বলরাজকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। বসন্ত ও রাসবিহারী আত্মগোপন করে থাকেন।
ইতিমধ্যে বসন্তের বাবার মৃত্যু হয়। ১৯১৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি বসন্ত ঘাটশ্রাদ্ধের দিন কেনাকাটার জন্য কৃষ্ণনগরে তাঁর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার ছোটোকাকা প্রতাপচন্দ্র বিশ্বাসের বাড়িতে উঠেন। জনৈক আত্মীয় সরকারি চাকরিতে পদোন্নতির লোভে বসন্ত বিশ্বাসের খবর থানায় জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ বাড়িটি ঘিরে ফেলে। শেষ মূহূর্তে মন্মথনাথ বিশ্বাস বসন্তকে খবর দিতে এসেছিল পুলিশ আসছে তাঁকে ধরতে। কিন্তু হবিষ্যির মালসা হাতে ধরা নিরস্ত্র বসন্তকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পুলিশ রাসবিহারী বসুকে গ্রেপ্তার করতে না পারলেও তাঁকে জড়িয়ে দিল্লি লাহোরের ঘটনা একত্রিত করে ‘দিল্লি-লাহোর ষড়যন্ত্র’ নামে ঐতিহাসিক মামলা শুরু করে ১৬ মার্চ ১৯১৪।
৫ অক্টোবর দিল্লি কোর্ট আমীরচাঁদ, অবোধবিহারী ও বালমুকুন্দের ফাঁসির আদেশ এবং নাবালক বিবেচনায় বসন্ত বিশ্বাসের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয়। বসন্তকে ফাঁসি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ইংরেজ সরকার তাঁর জেলের ফাইলে বয়স ২/৩ বছর কারচুপি করে বাড়িয়ে ২৩ বছর বলে লাহোর হাইকোর্টে আপিল করে এবং বলা হয়েছিল সাবালক বসন্ত বিশ্বাস তাঁর ওইসব কাজের সম্বন্ধে সম্পূর্ণ সচেতন ছিলেন। একতরফা বিচারে ১৯১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বসন্ত বিশ্বাসের ফাঁসির আদেশ হয়। এরপর বিপ্লবী অমরেন্দ্রনাথের প্রচেষ্টায় প্রিভি কাউন্সিলে আপিল করা হলে সেই আপিল ১৯১৫ সালে এপ্রিল মাসে অগ্রাহ্য হয়। ৮ মে ১৯১৫, দিল্লির সেন্ট্রাল জেলে আমীরচাঁদ, অবোধবিহারী এবং বালমুকুন্দের ফাঁসি হয়।
বসন্ত বিশ্বাসের ফাঁসি হয় পঞ্জাবের আম্বালা জেলে ১০ মে (মতান্তরে ১১ মে), মাত্র ২০ বছর বয়সে। শত অনুরোধ সত্ত্বেও ইংরেজ সরকার সৎকারের জন্য বসন্তের মরদেহ তাঁর প্রিয়জনদের হাতে দেয়নি। বসন্তের ফাঁসির দুদিন পরে ১৯১৫ সালের ১২ মে রাসবিহারী বসু পিএন (প্রিয়নাথ) ঠাকুরের ছদ্মবেশে চিরতরে ভারত ছেড়ে ‘সানুকিমারু’ জাহাজে জাপান রওনা হন দেশকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে। বসন্তের স্মৃতি রক্ষার্থে রাসবিহারী বসু নিজের হাতে জাপানের টোকিয়ো শহরে মাদাম-তেৎসু-কোং-হিগোচির বাগানে ‘ওক’ কাঠের স্মৃতিফলক প্রোথিত করেছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মহাবিপ্লবী রাসবিহারী বসু ভুলতে পারেননি তাঁর মন্ত্রশিষ্য প্রিয় বসন্ত বিশ্বাসকে |


মহাবিপ্লবী রাসবিহারী বসুর বহুমুখী প্রতিভা
অংশুমান গঙ্গোপাধ্যায়
ছোটোবেলায় চন্দননগরের প্রবর্তক সঙ্ঘের মতিলাল রায়, শ্রীশ ঘোষ, চারুচন্দ্র রায় প্রমুখ বিপ্লবীর সংস্পর্শে আসে কিশোর রাসবিহারী। বিপ্লবী নিরালম্ব স্বামী (যতীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়) হলেন বিপ্লব মন্ত্রে তাঁর দীক্ষাগুরু। যুদ্ধবিদ্যা শিখে ভারত থেকে ব্রিটিশদের বিতাড়িত করার উদ্দেশ্যে তিনি বরোদার সৈন্যদলে প্রবেশ করেন এবং মহান দেশপ্রেমিক শ্রীঅরবিন্দের সংস্পর্শে আসেন। শ্রীঅরবিন্দ তাঁকে সৈন্যদল ত্যাগ করে বঙ্গপ্রদেশে গিয়ে যুবকদের নিয়ে গোপন বিপ্লবী দল গড়ার নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ অনুযায়ী তিনি বঙ্গের যেখানে যত যুবকদের সংগঠন, ক্লাব ছিল, তার সঙ্গে যোগাযোগ করে বাছা বাছা ছেলেদের নিয়ে গুপ্তদল গড়ার চেষ্টা করেন। সেই উদ্দেশ্যেই তিনি চন্দননগরে এসেছিলেন এবং রাসবিহারীকে বিপ্লবীদলের উপযুক্ত মনে করে স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করেন এবং তার মনে স্বাদেশিকতার বীজ বপন করেন। সেই বীজ অঙ্কুরিত হয়ে এককালে মহীরুহে পরিণত হয়। নিরালম্ব স্বামীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে রাসবিহারী চন্দননগরের ডুপ্লে কলেজিয়েট স্কুলের পড়াশোনা ত্যাগ করে ফরাসি সৈন্যবাহিনীতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পারেননি। পরিকল্পনা পালটে তিনি এবার একটি অন্য রূপ ধারণ করেন। রাসবিহারীর পিতা বিনোদবিহারী বসু চন্দননগরে এসে শুনলেন তাঁর অমন মেধাবী ছেলে হঠাৎ লেখাপড়া ছেড়ে ফোর্ট উইলিয়ামে কেরানির কাজ নিয়েছে। তিনি ফোর্ট উইলিয়ামের চাকরি ছাড়িয়ে দেরাদুনের বনবিভাগের একটি চাকরি ছেলের জন্য জোগাড় করলেন। ১৯০৮ সালে বাইশ বছর বয়সে রাসবিহারী এই কাজে যোগ দিলেন।
১৯০৯ সালে পঞ্জাবে বিপ্লবী দলের নেতৃত্ব গ্রহণ, ১৯১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর বড়লাট হার্ডিঞ্জের উপর বোমা নিক্ষেপ, ১৯১৫ সালে সেনা বিদ্রোহ ও সশস্ত্র অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা, এই বছরই ছদ্মবেশে জলপথে তাঁর ভারত ত্যাগ; সিঙ্গাপুর, টোকিয়ো ও সাংহাই গমন, জার্মান দূতাবাসের মাধ্যমে ভারতে তাঁর অস্ত্র প্রেরণের প্রচেষ্টা, ১৯২৩ সালে জাপানের নাগরিকত্ব লাভ, ১৯২৪ সালে ‘ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগ’ প্রতিষ্ঠা, জাপানে থাকাকালীন বিপ্লবী বীর সাভারকরের সঙ্গে তাঁর গোপন যোগাযোগ এবং হিন্দু মহাসভার জাপান শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন, ১৯৪১ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগের পক্ষে রাসবিহারী বসুর ইংরেজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, ১৯৪২ সালের ১৫ জুন ঐতিহাসিক ব্যাংকক সম্মেলন এবং আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন, ১৯৪৩ সালের ৪ জুলাই নেতাজী সুভাষচন্দ্রের উপর আজাদ হিন্দ ফৌজের দায়িত্বভার অর্পণ, ১৯৪৩ সালের ২১ অক্টোবর আজাদ-হিন্দ সরকার গঠন- বিপ্লবী মহানায়ক রাসবিহারী বসুর বহুমুখী ব্যক্তিত্বেরই প্রকাশ।
জীবনের রঙ্গমঞ্চে রাসবিহারী বহুরূপী নায়ক, অদ্বিতীয় অভিনেতা! ইংরেজ কেরানি ক্লাইভ যে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিল, তার ভিত কাঁপিয়ে দেন তিনি। পূর্ব ভারতের যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় (বিপ্লবী বাঘা যতীন) আর উত্তর-পশ্চিম ভারতের রাসবিহারী বসু ইংরেজ শাসককুলের শঙ্কার কারণ হয়ে উঠেছিলেন। বাঘা যতীনের স্বরূপ ইংরেজ যত তাড়াতাড়ি জানতে পেরেছিল, রাসবিহারীর স্বরূপ তত তাড়াতাড়ি তারা জানতে পারেনি। তাই বিপ্লবী প্রফুল্ল চাকী ও ক্ষুদিরাম বসুর দ্বারা বোমা বিস্ফোরণের পর ব্রিটিশ পুলিশ যখন মানিকতলার বোমার আড্ডায় হানা দিয়ে বিপ্লবীদের বন্দি করে ফেলে, তখন সেখানে রাসবিহারী লিখিত দুটি চিঠি হস্তগত হলেও তারা অনুমান করতে পারেনি যে, বিপ্লবী রাসবিহারী এবং কেরানি রাসবিহারী একই ব্যক্তি। কেরানি রাসবিহারী ইংরেজ শাসকের একান্ত অনুগত, রাজভক্ত প্রজা। দিল্লির বোমা বিস্ফোরণের পরও রাসবিহারীকে পুলিশ পাস দেয় দেরাদুনে বড়লাটের ক্যাম্পে যাওয়ার জন্য, যে পাস পুলিশের ডিএসপি-ও পাননি। দিল্লি ষড়যন্ত্র মামলায় ৫০০ টাকা পুরস্কার পাওয়া রাজসাক্ষী পুরণ সিংহ বলেছিল যে, রাসবিহারী তার সঙ্গে পুলিশের লোকের মতোই কথা বলতেন। অন্যতম সাক্ষী চরণদাস জেরার সময় জানিয়েছিল যে রাসবিহারী হচ্ছেন সাদা পোশাকের গোয়েন্দা। কিন্তু ব্রিটিশ জজ হ্যারিসন বুঝতে পারেন যে রাসবিহারী সরকারের খয়ের খাঁ নন, ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটানোই করাই তাঁর উদ্দেশ্য। অসাধারণ ‘মেক-আপ’ ধারণে সিদ্ধহস্ত এক ব্যক্তি ছিলেন তিনি।
সাহারানপুরে বিপ্লবী জেএম চ্যাটার্জির বাড়িতে সালোয়ার, কুর্তা, কুল্লা পরিহিত এক পাঠান, বা কাশীতে খাটা পায়খানা সাফাইকারী, ময়লার বালতি ও ঝাড়ু হাতে মেথর, চন্দননগরের এক পুজারি ব্রাহ্মণ, বিপ্লবী সহকর্মী রামশরণ দাসের স্ত্রীর নকল স্বামী সেজে লাহোরে থাকা পঞ্জাবি গৃহস্থ, কাশীতে কর্মরত থাকা অবস্থায় হঠাৎ মৃত উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারি অথবা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রাইভেট সেক্রেটারি পিএন ঠাকুর- ব্রিটিশ সরকারকে বার বার, অবলীলাক্রমে ধোঁকা দিয়েছেন পরাধীন দেশের এই মহাবিপ্লবী। ১৯৪৫ সালের ২১ জানুয়ারি জাপানে তাঁর জীবনদীপ নির্বাপিত হয়। নিজের সম্পর্কে তিনি উক্তি করেছিলেন- ‘আই অ্যাম এ ফাইটার। ওয়ান ফাইট মোর। দ্য লাস্ট অ্যান্ড দ্য বেস্ট।’ স্বাধীনতা লাভের পর বিপ্লবী মহানায়কের নশ্বর দেহাবশেষ ভারতে এনে স্মৃতি মন্দির নির্মাণ করে উপযুক্ত মর্যাদা সহকারে আজও স্থাপন করতে পারেনি ভারতবাসী |

READ ALSO

29th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

29th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

October 8, 2025
15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

September 23, 2025
ShareTweetShare

Related Posts

29th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ

29th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

October 8, 2025
15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ

15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

September 23, 2025
15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ

15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

September 23, 2025
15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ

15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

September 23, 2025
15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ

15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

September 23, 2025
15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ

15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

September 23, 2025

POPULAR NEWS

4th September 2023 Rajjopat

4th September 2023 Rajjopat

September 21, 2023
৩৫০ বছর পর দেশে ফিরছে শিবাজীর বাঘনখ

৩৫০ বছর পর দেশে ফিরছে শিবাজীর বাঘনখ

October 2, 2023
কেশব ভবনে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী হানা

কেশব ভবনে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী হানা

October 4, 2023
4th September Angana

4th September Angana

September 21, 2023
2nd October 2023 Parampara

2nd October 2023 Parampara

October 1, 2023

EDITOR'S PICK

04th August প্রচ্ছদ নিবন্ধ

04th August প্রচ্ছদ নিবন্ধ

August 7, 2025
26th May উত্তর সম্পাদকীয়

26th May উত্তর সম্পাদকীয়

May 28, 2025
15th September রাজ্যপাট

15th September রাজ্যপাট

September 15, 2025
12th May উত্তর সম্পাদকীয়

12th May উত্তর সম্পাদকীয়

May 12, 2025

About

Follow us

Categories

  • Uncategorized
  • অতিথি কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • পরম্পরা
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • রাজ্যপাট
  • সঙ্ঘবার্তা
  • সম্পাদকীয়
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি

Recent Posts

  • 29th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • 29th September পরম্পরা
  • 29th September পরম্পরা
  • 29th September পরম্পরা

© 2023 Swastika. All rights reserved.

No Result
View All Result
  • হোম
  • সম্পাদকীয়
  • রাজ্যপাট
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি
  • অতিথি কলম
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • পরম্পরা
  • ই -পত্রিকা

© 2023 Swastika. All rights reserved.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?