সঙ্ঘ শতবর্ষে পঞ্চ পণের একটি নাগরিক শিষ্টাচার
সুব্রত ভৌমিক
ভারতীয় বিচার সাধনা, জ্ঞান পরম্পরার প্রধান বৈশিষ্ট্য শুধু জ্ঞান বা বুদ্ধি নয় বরং অনুভূতি, উপলব্ধিকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। অনুভূতিশূন্য জ্ঞানী বা পণ্ডিত ব্যক্তির প্রকৃত অবস্থা বোঝানোর জন্য একটি সংস্কৃত সুভাষিতমে বলা হয়েছে-
যথা খরশ্চনন্দনবাহী ভারস্য বেত্তা ন তু চন্দনস্য।।
অর্থাৎ ভারবাহী গাধার পিঠে চন্দন কাঠের বোঝা থাকলে গাধা শুধু ওজন বা ভার বুঝতে পারে, চন্দনের গন্ধ বা গুণ অনুভব করতে পারে না। তাই কোনো ব্যক্তি যতই জ্ঞানী বা পণ্ডিত হোন না কেন, যদি তার অনুভূতি বা অভিজ্ঞতা না থাকে তবে তার সমস্ত জ্ঞান নিষ্ফল। এই অনুভূতির অভিব্যক্তি বিচারবুদ্ধির মাধ্যমে হয়। আবার অনুভূতি যুক্ত বিচারবুদ্ধিই যথেষ্ট নয়। যদি প্রাত্যহিক আচার-আচরণ, ব্যবহার, কার্যকলাপে প্রতিফলিত হয় তবে আমাদের আদর্শগত সাধনা ও জ্ঞানার্জনের প্রক্রিয়া বা চক্রটি সম্পূর্ণ হয়। আদর্শগত সাধনার সুদীর্ঘ যাত্রাপথে বিচারবুদ্ধির অবস্থান মাঝখানে সর্বপ্রথমে তাঁর মূল অনুভূতি এবং শেষে আচার-ব্যবহার। রাষ্ট্র পুনর্নির্মাণ এবং বিশ্বে ভারতের ভূমিকা সম্বন্ধে ভাববার সময় আমাদের এই তিনটি বিষয় নিয়েই ভাবতে হবে।
মেকলে সাহেব শিক্ষানীতি চালু করার সময় বলেন এর মধ্যে দিয়ে যে ভারতীয়রা বেরিয়ে আসবেন তারা হবেন- ‘Indian in blood and colour but English in taste, opinion, moral and intellect.’ স্বাধীনতার এত বছর পরেও সেই টেস্ট অনুযায়ী প্যাটিস, পিৎজা, বার্গার, কোক অগণিত মানুষের প্রিয় হয়ে উঠেছে। সেই ইংলিশ ওপিনিয়ন অনুযায়ী দেশজ সমস্ত ভাবনাচিন্তা মূল্যহীন, পাগলের প্রলাপ মাত্র। সেই moral অনুযায়ী ত্যাগ, কর্তব্য ও সেবা-প্রধান হিন্দু জীবনমূল্যের পরিবর্তে ভোগ প্রধান ধারণাই শ্রেষ্ঠ। সবকিছুকে যেন আমরা মেকলে আরোপিত দৃষ্টি দিয়ে দেখার চেষ্টা করি। যেমন পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে ভাববার সময় হাজার হাজার বছর ধরে প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক এবং তার প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন ছিল সেটা ভুলে গিয়ে প্রথমেই মাথায় আসে যে এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ নামক পাঠ্য বিষয়ের মাধ্যমে পাশ্চাত্য জগৎই আমাদেরকে পরিবেশ-সচেতন হতে শিখিয়েছে। সম্পূর্ণ ভুলে যাই যে পাশ্চাত্যের শিল্প সভ্যতা এবং চূড়ান্ত ভোগবাদী জীবনশৈলীই সমস্ত ধরনের পরিবেশ দূষণের খলনায়ক। একইভাবে নাগরিক শিষ্টাচার প্রসঙ্গ এলেই মনে হয় যে ‘সিভিক’ নামক পাঠ্য বিষয়ের মাধ্যমে পাশ্চাত্য শিক্ষাই নাগরিক শিষ্টাচার বিষয়ে সচেতন করেছে। সেই অনুসারে নাগরিক শিষ্টাচার শুধুমাত্র courtesy বা সৌজন্যবোধের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে এবং অধিকাংশ
ক্ষেত্রে তা কৃত্রিমতায় পর্যবসিত হয়, তার মধ্যে আন্তরিকতা থাকে না।
কোনো অজানা, অচেনা বা অল্প পরিচিত ব্যক্তির থেকে উপকার বা সাহায্য পেলে আমরা তাঁকে ধন্যবাদ জানাই, কারণ তার সঙ্গে হয়তো আমার আর দেখাই হবে না বা দেখা হওয়াটা অনিশ্চিত। কিন্তু পাশ্চাত্যের অনুকরণে আজ কথায় কথায় স্থান-কাল-পাত্র নির্বিশেষে ‘থ্যাঙ্ক ইউ’-এর যথেচ্ছ ব্যবহার মুদ্রাদোষে পরিণত হয়েছে। বাবা, মা-সন্তান, স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন, ছাত্র-শিক্ষক, বন্ধু, প্রতিবেশী ইত্যাদি যারা প্রতিদিন বা নিয়মিত আমাদের ঘনিষ্ঠ বৃত্তের মধ্যে থাকেন তাদের মধ্যেও এই ‘থ্যাঙ্ক ইউ’-এর আদান প্রদান চলে। এ থেকেই প্রমাণ হয় যে আমরা কেউই আর একাত্ম, ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে বিশ্বাসী নই, সবাইকে যেন পর মনে করতে শুরু করেছি। একদিকে যেমন প্রত্যেকেই কোনো কিছু করার বিনিময়ে ধন্যবাদের প্রত্যাশী, অন্যদিকে নিজেরাও ভাবি যে নিকটজনকেও যদি ধন্যবাদ না দিই তাহলে তিনি অসন্তুষ্ট হবেন অথবা আমাকে অভদ্র ভাববেন। অথচ আমাদের পরম্পরায় এটাই শেখানো হয় যে আপনজনকে ধন্যবাদ দিতে নেই। দ্বিতীয়ত, অল্প ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিও যদি উপকার করেন এবং আমিও আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞ হই তবে তা শরীরের ভাষা, মুখের ভাব এবং পরবর্তীকালে তার প্রতি আমার ব্যবহারেই সেটা ব্যক্ত হবে। তার জন্য শুধু যান্ত্রিকভাবে ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বলাটাই যথেষ্ট নয়। অথচ ছোটো থেকে এখন সেটাই স্বাভাবিক প্রবণতা করে তোলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়গুলি নাটের গুরু। পাশ্চাত্য শিষ্টাচার বলতে যা বোঝে আমাদের সন্তানকে তাই গেলানো হচ্ছে। একটা বিদেশি ভাষা শেখাতে গিয়ে বিদেশি সংস্কৃতি ও আচার ব্যবহার শেখানো হচ্ছে।
পাশ্চাত্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাবা-মায়েরা সন্তানকে নিজেদের আনন্দ-ফুর্তি-উদ্দাম জীবনের পক্ষে বাধাস্বরূপ মনে করে। তাই বিনা কারণে অতি ছোটো বয়সেই হোস্টেলে পাঠায় বা ডিভোর্সের কারণে হয় সৎ মা-বাবার কাছে বড়ো হয়। স্বাভাবিকভাবেই ওইসব দেশে বছরে একটি দিন ঘটা করে ‘চিলড্রেনস ডে’ পালনের আদিখ্যেতা দেখাতে হয়। আমাদের এখানে শিশুরা ৩৬৫ দিনই মায়ের কোল বা আঁচল ছাড়া থাকে না। অথচ আমাদের দেশেও চিলড্রেনস ডে বা শিশু দিবস পালনের আদিখ্যেতা দেখা দিয়েছে। এরকম বহু দৃষ্টান্ত আছে।
শিষ্টাচার হলো শিষ্ট ও আচার শব্দের মেলবন্ধন অর্থাৎ শিষ্ট বা সজ্জন ব্যক্তির আচার, আচরণ হচ্ছে শিষ্টাচার। সজ্জন ব্যক্তি কে? মহাভারতে সজ্জন ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে-
আর্যতানামভূতানাং যঃ করোতি প্রযত্নতঃ।
শুভং কর্ম নিরাকারো বিতরাগস্তথৈব চ।।
অর্থাৎ ব্যক্তি যদি নিজেকে প্রকাশ না করে সযত্নে প্রাণীকুলের কল্যাণের জন্য কাজ করেন, তাহলো তাঁর সেই শ্রেষ্ঠ ভাব ও আচরণকে সজ্জনতা বলে। হিন্দু জীবনচর্যায় শিষ্টাচার কোনো লোক দেখানো বিষয় নয়। এটা মূলত অন্তঃকরণ জাত ও সংস্কারপ্রসূত বিষয়।
পাশ্চাত্য ধারণায় শিষ্টাচার বলতে সমপর্যায়ের (শিক্ষা, অর্থ, ক্ষমতা, প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি দিক থেকে) ব্যক্তিদের পারস্পরিক আচরণ বোঝায়। যেমন রাজায় রাজায়, প্রজায় প্রজায়, জ্ঞানীর সঙ্গে জ্ঞানী ইত্যাদি। হিন্দু জীবনচর্যায় উপরোক্ত মাপকাঠিতে এগিয়ে থাকা ব্যক্তি তার থেকে অনেক পিছিয়ে থাকা বা একেবারে প্রান্তিক মানুষের সঙ্গে কীরকম আচরণ করছেন তার ভিত্তিতে শিষ্টচার বিচার হয়। মহাভারতকার মহর্ষি ব্যাসদেব বলেছেন-
বিদ্যা বিবাদায় ধনং মদায় শক্তিঃ পরেষাং পরপীড়নায়।
খলস্য সাধোর্বিপরীতমেতৎ জ্ঞানায় দানায় চ রক্ষণায়।।
অর্থাৎ খল বা দুষ্ট ব্যক্তির বিদ্যা বিবাদ করতে, ধন অহংকার করতে এবং শক্তি অপরকে কষ্ট দিতে ব্যবহৃত হয়। সাধু ব্যক্তির ক্ষেত্রে তা সম্পূর্ণ বিপরীত- বিদ্যা জ্ঞানার্জনের জন্য, অর্থ দানের জন্য এবং শক্তি অপরকে রক্ষা করার জন্য। সাধু ব্যক্তির এই নিজস্ব গুণগুলির আদর্শ প্রয়োগই শিষ্টাচার।
শিষ্টাচারের প্রেরণা হবে কর্তব্যবোধ। কিন্তু বর্তমানে পাশ্চাত্য moral অনুযায়ী সমাজ হয়েছে অধিকার সচেতন। ফলে পরিবারে বাবা-মার প্রতি সন্তান, স্বামি-স্ত্রী পরস্পর, শিক্ষকের প্রতি ছাত্র শিষ্টাচার বজায় রাখতে পারছেনা। আবার শিষ্টাচার যে সবসময় বয়সে ছোটোরাই গুরুজনদের প্রতি দেখাবে তা নয়, ছোটোদের প্রতিও বড়োদের শিষ্টাচার দেখানো উচিত। প্রখ্যাত জার্মান কথাসাহিত্যিক গ্যেটে বলেছেন, বড়োদের সামনে ছোটোদের হাত থেকেও যদি কোনো জিনিস পড়ে যায় তবে বড়োদের সেটা তুলে তার হাতে দেওয়া উচিত। এতে ছোটোদের মন জয় করা যায়।
শিষ্টাচারের মূলে কোনো ছলনা, চাতুরি বা স্বার্থবুদ্ধি থাকা উচিত নয়। এ ব্যাপারেও প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে যে পার্থক্য আছে তা স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর ‘প্রাচ্য পাশ্চাত্য’-গ্রন্থে ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলছেন, ভারতে যদি কোনো ভদ্রমহিলার সঙ্গে কোনো পুরুষের সাক্ষাৎ হয় তবে নমস্কার বিনিময়ের পর আমরা সাধারণত সম্ভ্রমসূচক দূরত্ব বজায় রেখে তার সঙ্গে ন্যূনতম আলাপচারিতা করি। কিন্তু পাশ্চাত্যে এ ধরনের পরিস্থিতিতে পুরুষটি অতি আগ্রহের সঙ্গে মহিলাটির দিকে একটি চেয়ার এগিয়ে দিয়ে বসতে বলে। মহিলাটি তার সৌজন্য দেখে খুবই প্রীত হয়। কিন্তু একটু পরেই পুরুষটি বলতে শুরু করে আপনার মাথার চুলগুলি কত সুন্দর, চোখ দুটি কত সুন্দর, তারপর ঠোঁট- এভাবে বর্ণনা ক্রমশ নীচের দিকে নামতে থাকে। এই ধরনের courtesy বা সৌজন্য প্রাচ্যের দৃষ্টিতে বাঞ্ছনীয় নয়।
উপরের আলোচনা থেকে মনে হতে পারে শিষ্টাচার মানে সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য গুরুগম্ভীর কিছু বিষয় যার জন্য অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সংস্কার প্রয়োজন। সেটা অবশ্যই একটি দিক কিন্তু কিছু সামান্য নিত্য আচরণও রয়েছে যার জন্য খুব বেশি ত্যাগ বা কষ্ট স্বীকার করতে হয় না অথচ যা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণকর এবং যার মাধ্যমে সমাজের সকলের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নততর হয়।
ইংরেজিতে প্রবাদ আছে-
Good Better Best
Never let them rest
Till your good is better
And better is the best.
অর্থাৎ শিষ্টাচার এক বিরামহীন প্রক্রিয়া, যতদিন না আমাদের প্রত্যেকের আচরণ দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তির তুলনায় ভালো অর্থাৎ উন্নততর হয় এবং ধীরে ধীরে সকলের থেকে ভালো অর্থাৎ ভালোতম হয়। এই মানসিকতা নিয়ে নিম্নোক্ত ন্যূনতম শিষ্টাচারগুলি আমরা আমাদের মজ্জাগত করে তুলতে পারি যাতে অবচেতন মনেও আমরা এগুলি পালন করতে ভুলে না যাই। মন, বুদ্ধি, শরীর ও চেতনা দিয়ে বিচার করা এবং নিজেকে সেই ভাবে পরিচালনা করা। যেমন-
যে কোনো সর্বজনীন স্থানের নিয়ম, ব্যবস্থা ও সূচনা মনোযোগ সহকারে পালন করা। নিজের সুবিধার আগে অন্যের সুবিধা নিয়ে ভাবা। সামূহিক জীবনের ক্ষেত্রে কোনো কোনো অসুবিধা মন থেকে মানিয়ে নেওয়া।
ত্যাগের ক্ষেত্রে সবার আগে থাকা এবং ভোগের ক্ষেত্রে সবার পেছনে থাকা। পরিশ্রম, কর্তব্য এ সমর্পণের ক্ষেত্রে আগে থাকা।
ছোটোদের প্রতি স্নেহ এবং গুরুজনদের প্রতি সম্মানপূর্ণ ব্যবহার।
আত্মীয়স্বজন বন্ধু, সহকর্মী, প্রতিবেশী সকলের ক্ষেত্রে শুধু আনন্দ অনুষ্ঠানেই নয় বরং হাসপাতাল থেকে শ্মশান সর্বত্র ও সব ধরনের সমস্যার সময় পাশে থাকার চেষ্টা করা।
বাসে, ট্রেনে বা অন্য সর্বজনীন স্থানে বিশেষভাবে প্রবীণ, অসুস্থ ও দিব্যাঙ্গদের প্রতি সংবেদনশীল আচরণ এবং প্রয়োজনে সাহায্য করা।
কারও সঙ্গে সাক্ষাতের সময় হ্যালো, হাই না বলে নমস্কার, সুপ্রভাত ইত্যাদি অভিবাদন করা।
সঠিক শব্দের প্রয়োগ করা।
অতিথি দেব ভব- মনে রেখে সেই মতো আচরণ করা।
জন্ম দিবস হিন্দু তিথি অনুযায়ী এবং হিন্দু পদ্ধতিতে পালন করা।
মাঙ্গলিক ক্রিয়াকর্মে ভারতীয় পোশাক পরিচ্ছদ পরা।
খাওয়ার সময় টিভি না দেখা, মোবাইল ফোনের ব্যবহার না করা।
অযথা তর্ক না করা। মনে রাখতে হবে যে, তর্কে জিতলেও আমি মানুষটির মন জয় করতে পারবো না।
মার্জিত ভাষায় অন্যের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখিয়ে নিজের বক্তব্য বা মত প্রকাশ করা। অন্যের কথা সম্পূর্ণ হওয়ার পরেই বলার অভ্যাস। টিভি চ্যানেলের বিতর্কসভার মতো অন্যের কথার মাঝে কথা নাবলা।
স্থান, কাল, পাত্র অনুসারে কথা বলা উচিত।
সত্যং বদ ধর্মং চর। ধর্মের জন্য বাঁচা, সমাজের জন্য বাঁচা।
জীবিত অবস্থায় রক্তদান, মৃত্যুর সময় নেত্র দান।
পশুপক্ষীর সঙ্গে উচিত ব্যবহার।
অহিংসা পরমো ধর্মঃ ইত্যাদি।
দেশের সমস্ত নাগরিক যদি শিষ্টাচার সম্পন্ন হয়ে ওঠে, তাহলেই খুব শীঘ্র উন্নতজীবনের স্বাদ পাওয়া যায়।