বড্ড বাড় বেড়েছে বাংলাদেশ
ইউনুসবান্ধবেষু দিদি,
একটা প্রবাদ আছে। ‘যার খায় যার পরে, তারই আবার ক্ষতি করে’। এটা আপনাকে বলছি, কারণ আপনার সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মিল রয়েছে। প্রথমত দুই সরকারই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধী। অথচ দু’জনেই কেন্দ্রের দয়ায় অনেক কিছু করতে পারে। মানে উন্নয়নমূলক কাজ আর কি! দ্বিতীয়ত, দু’জনেই বামন হয়ে চাঁদে হাত বাড়াতে চায়। এই আপনি যেমন দুর্নীতির জন্য কেন্দ্র যে সব প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে সেগুলি নিজেই করতে চান। অথচ রাজ্যের নিজের খরচ চালানোর পয়সাই নেই। একইভাবে নিজের দেশ ঠিক মতো চালাতে না পারা ইউনুস ভারতকে অসুবিধায় ফেলতে চাইছেন। তবে চাপে পড়ে ইউনুস ইতিমধ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি পালাতে পারলে বাঁচেন। এনিয়েই আজকের আলোচনা। দেখুন।
সদ্যই পাকিস্তানকে যোগ্য জবাব দিয়ে টগবগ করছে ভারতীয় সেনা। ওদিকে ভারতীয় কূটনীতির যে সাফল্য দেখা গিয়েছে তাতে উচ্ছ্বসিত ভারত সরকারও। এই পরিস্থিতিতে এবার বাংলাদেশকে শিক্ষা দেওয়ার পালা। ইতিমধ্যেই ভারতের পদক্ষেপে কাঁপছে ইউনুস প্রশাসন। এবার কাঁদবেন দিদি আপনি। আমরা কাছে থাকি বলে সেই কান্না সবার আগে শুনতে পাব। হাতেপায়ে ধরতে হবে। তার আগে নিজের থেকেই পদত্যাগ করতে চাইছেন ইউনুস।
দিদি, পাকিস্তানের কান্না আপনি দেখেছেন। পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ দেশের সেনার এক জমায়েতে বলছেন, ৯ ও ১০ মে-র মধ্য রাতে, প্রায় আড়াইটা নাগাদ সেনাপ্রধান মুনিরের ফোন আসে। হট লাইনে বলে, বস, ভারত মেরে ফাটিয়ে দিয়েছে। নূর খানে মিসাইল মেরেছে। পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রাক্তন
প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মেয়ে, মরিয়ম শরিফ সারগোধা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় বলছেন, ভারত পাকিস্তানের চরম ক্ষতি করে দিয়েছে। আবার পাক সেনেটর সৈয়দ আলি জাফর পাকিস্তান সেনেটে দাঁড়িয়ে সাঙ্ঘাতিক কথা বলছেন। বলছেন, সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করে দিয়ে ভারত আসলে পাকিস্তানের ওপর ‘ওয়াটার বম্ব’ ফেলেছে। পকিস্তানের উচিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভারতের পায়ে পড়া।
একই দশা বাংলাদেশের। মহম্মদ ইউনুস বুঝেছেন, আর পারা যাবে না। দেশে নির্বাচন করা নিয়ে নানা মত, জামাতের সঙ্গে তাল রেখে চলা, সেনার কথা শোনা সব কিছু করা যায় কিন্তু ভারত যদি বেঁকে বসে তবে দেশ চলবে না। ইতিমধ্যেই ব্যবসাবাণিজ্যের হাল খারাপ। ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রক বিবৃতি জারি করেছে কোনো স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের রেডিমেড পোশাক ভারতে ঢুকবে না। কেবল
শিলিগুড়ি করিডোরের খুব কাছে লালমণিরহাটে চীনা সহযোগিতায় বিমানঘাঁটি তৈরির কথা ভাবতে শুরু করেছিল ঢাকা। কিন্তু ইউনুস রাত জেগে টিভিতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ দেখার পরে বুঝেছে এসব করলে কপালে শনি নিশ্চিত।
মুম্বই ও কলকাতা বন্দর দিয়ে জলপথে ঢুকতে পারবে। ফল, ফলের স্বাদযুক্ত কার্বনেটেড পানীয়, কেক, চিপস্, বিস্কুট, তুলো, সুতো, প্লাস্টিকের পণ্য এবং কাঠের আসবাবপত্র অসম, মেঘালয়, ত্রিপুরা বা মিজোরামের কোনো স্থল সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢুকতে পারবে না। পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ি দিয়েও এই পণ্য ঢুকতে দেওয়া হবে না। ভারতীয় মুদ্রায় এই সমস্ত পণ্যের বার্ষিক আমদানির মোট মূল্য সাড়ে ছ’ হাজার কোটি টাকার বেশি। আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করায় তলায় তলায় জনরোষও বাড়ছে। সব মিলিয়ে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা।
বামনের যেমন চাঁদ ছোঁয়ার ইচ্ছা হয়, তেমনই ভারতের ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলার অদম্য ইচ্ছা হয়েছিল ইউনুসের। নিজের ক্ষমতা নেই, তাই অন্যের সাহায্য নিয়ে বাণিজ্য তথা অর্থনৈতিক কার্যকলাপের আড়ালে খানিকটা নিঃশব্দে ভারতের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটানোর আয়োজন করেছিল। গত মার্চ মাসে ইউনুস চীন সফরে গিয়েছিলেন। সেখানেই ইচ্ছাটা প্রকাশ করেছিলেন। শিলিগুড়ি করিডোরের খুব কাছে লালমণিরহাটে চীনা সহযোগিতায় বিমানঘাঁটি তৈরির কথা ভাবতে শুরু করেছিল ঢাকা। কিন্তু ইউনুস রাত জেগে টিভিতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ দেখার পরে বুঝেছে এসব করলে কপালে শনি নিশ্চিত। বিমানঘাঁটি হোক বা অন্য যে কোনও পরিকাঠামো, প্রয়োজন পড়লে তা গুঁড়িয়ে দিতে ভারতের খুব একটা সময় লাগবে না। তার নমুনা ভারতে সদ্য দেখিয়েছে। কোনো একটা ভোররাত পেলেই ভারতীয় সেনা সব তছনছ করে দিতে পারে। আর নরেন্দ্র মোদীর মতো প্রধানমন্ত্রী সব পারেন। তাই আপাতত চুপ থাকাই ভালো। আপনাকেও দিদি, আমার পরামর্শ, সীমান্ত এলাকায় আপনার ভাইয়েরা যেন বাংলাদেশের হয়ে দালালি না করেন। পরিস্থিতি কিন্তু কঠিন হয়ে উঠতে পারে।