• About
  • Contact Us
Sunday, October 19, 2025
Swastika
No Result
View All Result
  • হোম
  • সম্পাদকীয়
  • রাজ্যপাট
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি
  • অতিথি কলম
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • পরম্পরা
  • সঙ্ঘবার্তা
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • ই -পত্রিকা
  • হোম
  • সম্পাদকীয়
  • রাজ্যপাট
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি
  • অতিথি কলম
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • পরম্পরা
  • সঙ্ঘবার্তা
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • ই -পত্রিকা
No Result
View All Result
Morning News
No Result
View All Result
Home প্রচ্ছদ নিবন্ধ

30th June প্রচ্ছদ নিবন্ধ

in প্রচ্ছদ নিবন্ধ
30th June প্রচ্ছদ নিবন্ধ

Issue 77-43-30-06-2025

ভারতীয় সংসদে জোট রাজনীতির প্রথম সফল প্রবক্তা
ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়

ড. বিনয়ভূষণ দাশ ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দের ২১ অক্টোবর দিল্লির রাঘোমল আর্য উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে অখিল ভারতীয় জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠা হয়। এই সম্মেলনে দলের প্রথম সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতপূর্ব উপাচার্য ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। বলরাজ ভাল্লা তাঁর নাম প্রস্তাব করেন। তিনি ছাড়া দুই সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত ড. ভাই মহাবীর এবং পণ্ডিত মৌলীচন্দ্র শর্মা। যুবক অটলবিহারী বাজপেয়ীকে সভাপতি ড. শ্যামাপ্রসাদ তাঁর ব্যক্তিগত সচিব হিসেবে নিযুক্ত করেন। এই অধিবেশনে ৫০০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। ড. শ্যামাপ্রসাদ ছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়, অধ্যাপক বলরাজ মাধোক প্রমুখ নেতাকে যথাক্রমে উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, ইত্যাদি রাজ্যের প্রথম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। নতুন এই দলের আদর্শ হিসেবে বলা হয়, নতুন দলটি ভারতীয় সংস্কৃতি ও মর্যাদার উপর ভিত্তি করে ভারতকে পুনর্গঠিত করবে। দলের মূল আদর্শ হলো, ‘এক দেশ এক জাতি, এক সংস্কৃতি এবং এক আইনের শাসন।’ জনসঙ্ঘের দলীয় গঠন সম্পর্কে অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা দীনদয়াল উপাধ্যায় United Asia পত্রিকার জানুয়ারি ১৯৬২ সংখ্যায় The Jana Sangh Perspective নামে এক প্রবন্ধে লেখেন, ‘It (the party) was not a disgruntled, dissident, or discredited group of Congressmen who formed the nucleus of the party, as is the case with all other political parties; the latest in the field not excluded. Its inspiration came from those who basically differes from the Congress outlook and policies. It was an expression of the nascent nationalism.’
ভারতীয় জনসঙ্ঘ এবং স্বতন্ত্র পার্টি বিষয়ক গবেষক মোতিলাল এ ঝাঙ্গিয়ানী তাঁর গবেষণা সন্দর্ভ Jana Sangh and Swatantra গ্রন্থে লিখেছেন, ‘A new party, not of dissident or disillu- sioned Congressmen but of those who were diametri- cally opposed to Congress ideology and had a positive philosophy of their own which they later chose to call Bharatiya viewpoint. এই প্রসঙ্গে বলা প্রয়োজন যে, ভারতীয় জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠার তাৎক্ষণিক কারণ হলো নেহরু সরকারের পাকিস্তানের দুই অংশের হিন্দু, শিখ ও বৌদ্ধদের প্রতি বিমাতৃসুলভ অবাস্তব পাকিস্তান নীতি। অখিল ভারতীয় জনসঙ্ঘ স্থাপনের কয়েকদিনের মধ্যেই, ২৫ অক্টোবর, ১৯৫১-তে দেশে প্রথম নির্বাচন শুরু হয় এবং ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ অবধি চলে। ফলে নতুন স্থাপিত এই দল নিজেকে গুছিয়ে নেবার আগেই তাকে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমে পড়তে হয়। দলের ম্যানিফেস্টো রচনা, প্রার্থী স্থির করা ইত্যাদি তাৎক্ষণিক বিষয় দলকে স্থির করতে হয় তাড়াহুড়ো করে। দলের নির্বাচনী ম্যানিফেস্টো রচনার ভার দেওয়া হয় Organiser পত্রিকার সম্পাদক কে আর মালকানির উপর। এই নির্বাচন শুরু হয় ১৯৫১ সালের ২৫ অক্টোবর, দলের প্রতিষ্ঠার মাত্র চার দিনের মধ্যে। নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু নিজের কংগ্রেস দলের নীতির বিষয়ে কিছু প্রচার না করে নতুন প্রতিষ্ঠিত জনসঙ্ঘের বিরুদ্ধে ‘সাম্প্রদায়িক ও ফ্যাসিস্ট’ অভিধায় দেগে দিয়ে এই দলের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার শুরু করেন। কারণ তিনি তখনই বুঝেছিলেন, ভবিষ্যতে এই দলটিই তাঁর দল কংগ্রেসকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদ করতে সক্ষম হবে। দলের বিরুদ্ধে নেহরুর এই প্রচারের জন্য ড. শ্যামাপ্রসাদ তাঁকে দলের ‘honorary publicity Secretary’ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
১৯৫২-র নির্বাচনের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, সেই নির্বাচনে কংগ্রেস এবং অখিল ভারতীয় জনসঙ্ঘ ছাড়া অন্য কোনো সর্বভারতীয় দলের কোনো গুরুত্বপূর্ণ নেতা নির্বাচিত হতে পারেননি। জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি জওহরলাল নেহরু এবং অখিল ভারতীয় জনসঙ্ঘের সভাপতি ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সেই নির্বাচনে জয়ী হন। ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের এই জয় সম্পর্কে জওহরলাল নেহরুর জীবনীকার মাইকেল ব্রেখার তাঁর Nehru : A Political Biography গ্রন্থে লিখেছেন, Only two leaders of all India parites were elected- Nehru and Dr. S.P. Mookerjee, the founder of the Jan Sangh. Many leading Socialists were rejected by the voters, as were Kripalani, Dr. P.C. Ghose and Ambedkar.
যদিও এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, বিহারের আঞ্চলিক দল ঝাড়খণ্ড পার্টির এস জয়পাল সিংহ সেই নির্বাচনে জয়ী হন। কিষাণ মজদুর প্রজা পার্টি (কেএমপিপি)-র সভাপতি আচার্য জেবি কৃপালানি (জীবতরাম ভগবানদাস কৃপালানি) এবং সোশ্যালিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক অশোক মেহতা পরে উপ-নির্বাচনে জয়ী হন। এই নির্বাচনে সদ্যগঠিত ভারতীয় জনসঙ্ঘ মোট ৯৩টি লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়ে তিনটি আসনে জয়ী হয়। অন্যদিকে রাজ্য বিধানসভাগুলির নির্বাচনে মোট ৭২৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৩৫টি আসনে জয়ী হয়। বিধানসভাগুলির মধ্যে রাজস্থান বিধানসভায় সর্বাধিক ১১টি আসনে জয়ী হয় এবং দ্বিতীয় স্থানে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মোট ৯টি বিধানসভা আসনে জয়ী হয়। মেদিনীপুর জেলা থেকে সর্বাধিক ৮টি আসন এবং অখণ্ড ২৪ পরগনা থেকে একটি আসনে জয়ী হয় দল মেদিনীপুর জেলা থেকে সর্বাধিক আসনে জয়ের কারণ হলো, বিয়াল্লিশের আগস্ট আন্দোলনের সময় বিদেশি ইংরেজ শাসকের পুলিশ সত্যাগ্রহী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উপর ব্যাপক অত্যাচার চালায়। ইংরেজ পুলিশের এই অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় রাজ্যের শ্যামা-হক মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পক্ষে দাঁড়ান। এই ঘটনা তাঁকে মেদিনীপুর জেলায় ভীষণ জনপ্রিয় করে তোলে। তারই ফলশ্রুতি এই নির্বাচনী ফলাফল।
ভারতীয় জনসঙ্ঘের লোকসভায় নির্বাচিত সদস্যরা হলেন দক্ষিণ-পূর্ব কলকাতা কেন্দ্র থেকে জয়ী দলের সভাপতি ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। তিনি কমিউনিস্ট নেতা সাধন গুপ্তকে হারিয়ে নির্বাচিত হন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে দ্বিতীয় জয়ী প্রার্থী হলেন দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জাতীয় কংগ্রেসের প্রার্থী অতুলচন্দ্র বসুকে হারিয়ে সংসদে নির্বাচিত হন। জনসঙ্ঘের তৃতীয় জয়ী প্রার্থী হলেন রাজস্থানের চিতোর থেকে নির্বাচিত উমাশঙ্কর মুলজীভাই ত্রিবেদী। তিনি রাজস্থানের পূর্বতন মুখ্যমন্ত্রী মাণিক্যলাল বার্মাকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। উল্লেখ্য যে, নির্বাচিত এই তিন সদস্যই পেশায় ব্যারিস্টার ছিলেন। আর ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় একসময়ে ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বকনিষ্ঠ উপাচার্য। এই প্রথম নির্বাচনে ভারতীয় জনসঙ্ঘের নির্বাচনী ফলাফল আহামরি কিছু ছিল না; যদিও একটি সদ্য স্থাপিত দলের পক্ষে হতাশাজনক নয়। দলের এই ফলাফল সম্পর্কে অন্যতম নেতা অধ্যাপক বলরাজ মাধোক লিখেছেন, Viewed in the light of the serious handicaps under which the Jana Sangh con- tested the elections, it was a remarkable achievement. রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের তৎকালীন সরসঙ্ঘচালক অধ্যাপক মাধবরাও সদাশিবরাও গোলওয়ালকর (শ্রীগুরুজী) জনসঙ্ঘের এই জয়কে ‘ভালো করেছো’ বলে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘(the party) should go ahead with calm confidence in them- selves and their mission.’ ওই বছরের জুন মাসে সংসদের অধিবেশন শুরু হলে এটা পরিষ্কার হয় যে, বিরোধীগোষ্ঠীতে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ছিলেন সবচেয়ে অভিজ্ঞ, সবচেয়ে দক্ষ এবং সবচেয়ে বাগ্মী সাংসদ।
প্রথম লোকসভার অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই ড. মুখোপাধ্যায় সংসদে একটা যৌথ সংসদীয় দল গঠনের জন্য কথাবার্তা শুরু করে দেন। তিনি অনুভব করেছিলেন যে, সংসদে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে বাগে আনতে এবং সঠিক পথে চালনা করতে হলে বিরোধী দলগুলির একটা সুসংহত রূপ প্রদান করা বিশেষ প্রয়োজন। এই উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে ২৮ মার্চ, ১৯৫২ নয়াদিল্লিতে ড. মুখোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে লোকসভার ৪৫ জন সাংসদ একটি বৈঠকে মিলিত হন। এই বৈঠকে ভারতীয় জনসঙ্ঘ, অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা, গণতন্ত্র পরিষদ, আকালি দল, কমনওয়েলথ পার্টি, তামিলনাড়ু থেকেও দুটি দল এবং কয়েকজন নির্দল তামিল সদস্য যোগদান করেন। যদিও রামরাজ্য পরিষদ এই প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করেনি। ড. মুখোপাধ্যায় এই গোষ্ঠীকে আরও বড়ো আকার দেওয়ার জন্য সোশ্যালিস্ট পার্টির অশোক মেহতা এবং সুচেতা কৃপালানির সঙ্গে কথাবার্তা চালান।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, সংসদে বাম এবং কমিউনিস্ট দল একটি পৃথক গোষ্ঠী গঠনের জন্য নিজেদের মধ্যে আলাদাভাবে কথাবার্তা চালিয়ে যায়। কমিউনিস্ট গোষ্ঠীর লোকসভায় নেতা একে গোপালন সমাজতন্ত্রী এবং কিষাণ মজদুর প্রজা পার্টিকে তাঁদের প্রস্তাবিত গোষ্ঠীতে যোগদানের জন্য কথাবার্তা চালান। কিন্তু এই দুটি দল কমিউনিস্টদের সঙ্গে কোনো গোষ্ঠীতে যোগদান করতে রাজি ছিল না আগেকার খারাপ অভিজ্ঞতার কারণে। বরং এই দল দুটি নিজেরা মিশে যাওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছিল। একসময়ে দল দুটি মিশে গিয়ে প্রজা সোশ্যালিস্ট পার্টি গঠন করে। এইভাবে কমিউনিস্টদের একটা বামপন্থী ‘ব্লক’ গঠনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ওই বছরের জুন মাসে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ৩২ জন সাংসদের একটি গোষ্ঠী গঠিত হয়। এই গোষ্ঠীতে রাজ্যসভার ৬ জন সাংসদও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। যার মধ্যে পরবর্তীকালে দলের সভাপতি আচার্য দেবপ্রসাদ ঘোষও ছিলেন। এই গোষ্ঠী ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি নামে পরিচিত হয়। এই গোষ্ঠী ভারতের সংসদীয় ইতিহাসে নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এই গোষ্ঠীতে ড. মুখোপাধ্যায় ছিলেন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। এই গোষ্ঠীতে বাগ্মিতায় তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী আর কেউ ছিলেন না। যার ফলে তিনি মনে করলে এই গোষ্ঠীর জন্য প্রদত্ত সময় তিনি নিজের ইচ্ছে মতো কাজে লাগাতে পারতেন। এছাড়া এই গোষ্ঠীতে রাজ্যসভার ৬ জন সাংসদ ছিলেন। অর্থাৎ, সাকুল্যে ৩৮ জন সাংসদ ছিলেন এই ব্লকে। অবশ্য এই গোষ্ঠীতে ভিজি দেশপাণ্ডে, নির্মলচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বি রামচন্দ্র রেড্ডি, হুকুম সিংহ, উমাশঙ্কর ত্রিবেদীর মতো অভিজ্ঞ সাংসদও ছিলেন।
সংসদে বামপন্থী বাদে অন্য দলগুলির সংসদীয় জোট হলেও রাজ্যস্তরে এই জোট দানা বেঁধে ওঠেনি। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল রাজস্থান। সেখানে কংগ্রেস দল অল্পের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভে সমর্থ হয়। ওই রাজ্যে কংগ্রেস ৮১টি আসন এবং বিরোধীরা ৭৭টি আসনে জয়ী হয়। সেখানে টিকারাম পালিওয়ালের নেতৃত্বে কংগ্রেস সরকার গঠিত হয়। বিকানরের রাজা কুঁয়র যশবন্ত সিংহের নেতৃত্বে সংযুক্ত দল গঠিত হয়। এই জোটে কংগ্রেস বিরোধী প্রায় সব দলই রাজ্যে বিজেপি সর্বাধিক আসন পেলেও জোটরাজনীতির স্বার্থে অন্য যোগ দিয়েছিল।
এই জাতীয় গণতান্ত্রিক গোষ্ঠীতে ড. মুখোপাধ্যায় ছিলেন অবিসংবাদিত নেতা। তাঁর সংসদীয় দক্ষতা সম্পর্কে বিখ্যাত সাংবাদিক দুর্গাদাসের মন্তব্য বিশেষ প্রণিধানযোগ্য। দুর্গাদাস তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ India : from Curzon to Nehru and After গ্রন্থে ড. শ্যামাপ্রসাদ সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন, “There were only three effective spoke for the largest group which opposed Nehru’s poli- cies. In oratory and debating skill, he excelled all others who have followed him. Mookerjee used to tell me that the only way to create an alternative to the Congress was to demolish Nehru’s image. He died while in deten- tion in Srinagar in 1953 and a promising political career was thus cut short.”
জনসঙ্ঘ ও হিন্দু মহাসভার বিধায়কেরা যৌথভাবে জনসঙ্ঘের আচার্য দেবপ্রসাদ ঘোষকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় নির্বাচিত করেন। একইভাবে মধ্যভারত থেকে হিন্দু মহাসভার নেতা সিএস রাও এবং মাদ্রাস থেকে টয়লার্স পার্টির টিভি কমলাস্বামী রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন।
ছোটো এই দলগুলির জোটে শ্যামাপ্রসাদের মতো কোনো বক্তা বা অভিজ্ঞ নেতা ছিলেন না। স্বাভাবিকভাবেই বাগ্মী শ্যামাপ্রসাদ এই জোটের নেতা নির্বাচিত হন। জোটে তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। সুতরাং তিনি চাইলেই জোটের জন্য বরাদ্দ পুরো সময়টাই নিজে ব্যবহার করতে পারতেন; কিন্তু তিনি তা করতেন না। অন্যদেরও সুযোগ দিতেন। কিন্তু নেহরুর সঙ্গে পাল্লা দেবার প্রয়োজন বোধ করলে তিনি দীর্ঘ বক্তৃতা করতেন আর অন্যরাও এতে আপত্তি করতেন না। এই প্রসঙ্গে কমিউনিস্ট নেতা অধ্যাপক হীরেন মুখোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘শ্যামাপ্রসাদ ও সুচেতা কৃপালনী বলতে চাইলে স্পিকারের অনুমতি পেতে তাঁদের কোনো অসুবিধা হতো না। তাঁরাও তাঁদের সদস্যদের বঞ্চিত করে বক্তৃতা দিতে চাইতেন না।’ এই ধরনের মহানুভবতা আজকের দিনে কেউ কল্পনাও করতে পারে না। ভারতীয় জনসঙ্ঘের প্রথম সভাপতি ড. শ্যামাপ্রসাদ ছিলেন আক্ষরিক অর্থেই প্রথম সফল ‘কোয়ালিশন’ বা জোটের রূপকার। ভারতীয় জনসঙ্ঘের পরিবর্তিত রূপ ভারতীয় জনতা পার্টিও তাঁর আদর্শকে রূপায়িত করে পরবর্তীকালেও জোট সরকার সফলভাবে চালিয়ে আসছে। ভারতীয় জনসঙ্ঘ তথা পরবর্তীকালে ভারতীয় জনতা পার্টির জোট সরকার সফল ভাবে চালিয়েছেন তাঁরই রাজনৈতিক শিষ্য তথা ব্যক্তিগত সচিব অটলবিহারী বাজপেয়ী।
পরবর্তীকালে নরেন্দ্র মোদীও তাঁদেরই অনুসরণে কয়েকটি দলের সম্মিলিত জোট সরকারের সফল নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। এরই পাশাপাশি আমরা যদি এইচডি দেবেগৌড়া, চন্দ্রশেখর, আইকে গুজরাল, ভিপি সিংহ, মনমোহন সিংহ প্রমুখ নেতাদের জোট সরকারের দিকে তাকাই তাহলে তাঁদের জোট সরকারের নেতৃত্বদানে ব্যর্থতার দিকটিই সামনে আসে। রাজ্যস্তরেও বিহার, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব ইত্যাদি দল যথা জেডিইউ, শিবসেনা, অকালি ইত্যাদি দলকে মুখ্যমন্ত্রিত্বের আসন ছেড়ে দিয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ভারতীয় রাজনীতিতে জোটের নেতৃত্বদানে সবচেয়ে সফল হলো জনসঙ্ঘ তথা ভারতীয় জনতা পার্টি। ভারতীয় জনতা পার্টি ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকেই অন্যান্য অনেককিছুর মতোই জোট রাজনীতির সফল রূপায়ণের কলাটিও শিখে নিয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় সংসদের প্রথম দুটি বছর ছিল ড. শ্যামাপ্রসাদ ও জওহরলাল নেহরুর দ্বৈরথের যুগ। যদিও সেই সময়ে সংসদ সদস্য হিসেবে ছিলেন আচার্য জীবতরাম ভগবানদাস কৃপালানী, ড. ভীমরাও রামজী আম্বেদকর, সি রাজাগোপালাচারী, এইচ ভি কামাথ, হৃদয়নাথ কুঞ্জুরু, ফ্রাঙ্ক অ্যান্টনির মতো দিগজ সব সাংসদেরা। কিন্তু তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, দুর্দান্ত, বুদ্ধিদীপ্ত তাৎক্ষণিক উত্তরদানের ক্ষমতায় ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন। ফলে কথার লড়াই হতো জওহরলাল নেহরু এবং সংসদের অলিখিত নেতা ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মধ্যে। নেহরুর জীবনীকার ওয়াল্টার ক্রোকারের মতে, সংসদে শ্যামাপ্রসাদ ছিলেন সবচেয়ে প্রভাবশালী ও সক্রিয় সাংসদ। সংসদীয় তীক্ষ্ণবুদ্ধি, তথ্যপ্রদানের ক্ষমতা ও দক্ষতায় তিনি জওহরলাল নেহরুকে ছাড়িয়ে যেতেন।
বিরোধী পক্ষের একেবারে সামনের সারিতে, ট্রেজারি বেঞ্চের মুখোমুখি তাঁর আসন নির্দিষ্ট ছিল। গমগমে গলায় তিনি বক্তৃতা দিতে উঠে দাঁড়ালে মনে হতো, তিনিই যেন সভার কেন্দ্রবিন্দু। শ্যামাপ্রসাদ সংসদে দেশের সব সমস্যা ও বিষয় নিয়েই কথা বলতেন। তবে নেহরু সরকারের অনুসৃত ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, ভারত সরকারের কাশ্মীর নীতি এবং পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আগত হিন্দু-বৌদ্ধ ও শিখ উদ্বাস্তুদের সাহায্য ও পুনর্বাসন নিয়ে বক্তৃতায় তাঁর জুড়ি কেউ ছিলেন না। এমনকী কংগ্রেসের এক বিরাট অংশ নেহরুর পাকিস্তান নীতিতে আস্থাবান ছিলেন না; কিন্তু তাঁরা নেহরুর ভয়ে চুপ করে থাকতেন। তাঁদের অনেকেই ড. শ্যামাপ্রসাদের বক্তৃতায় নিজেদের মনের কথার প্রতিধ্বনি শুনতে পেতেন।
সাংবাদিক শঙ্কর ঘোষ তাঁর ‘হস্তান্তর’ গ্রন্থে তাঁদের সম্পর্কে লিখেছেন, ‘শ্যামাপ্রসাদ বক্তৃতা দিতে উঠলে তাঁরা সংসদ ভবনের সেন্ট্রাল হলের চা, কফির আড্ডা ফেলে লোকসভা কক্ষে উপস্থিত হতেন এবং নেহরুর বক্তৃতা যতটা মনোযোগ দিয়ে শুনতে তাঁরা অভ্যস্ত ছিলেন ঠিক ততটা মনোযোগ দিয়েই শুনতেন শ্যামাপ্রসাদের বক্তব্য। শ্যামাপ্রসাদের বলায় একটা জাদু ছিল এবং সভাকক্ষে তা এমনই একটি মোহ বিস্তার করত যে তাঁর বক্তৃতায় বাধা দিয়ে কেউই সেই মোহজাল ভাঙার কথা ভাবতেই পারতেন না। ‘অবশ্য হিংসুটে জওহরলাল নেহরু চাইতেন না, কংগ্রেস দলের সদস্যরা এত মন দিয়ে শ্যামাপ্রসাদের বক্তব্য শুনুক। সুতরাং, নেহরু মাঝে মাঝেই শ্যামাপ্রসাদের বক্তব্য পেশের সময় উঠে দাঁড়িয়ে বাধা দিতেন এবং তখন যে কথা কাটাকাটি হতো তাতে নেহরুরই পরাজয় ঘটত। ‘সংসদীয় তীক্ষ্ণবুদ্ধি ও দক্ষতায় শ্যামাপ্রসাদ নেহরুকে ছাড়িয়ে যেতেন।’
এই পত্রিকাতেই আগের একটি প্রবন্ধে আমি সংসদে শ্যামাপ্রসাদ ও নেহরুর দ্বৈরথ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছি। তাই সে সম্পর্কে বিস্তারিত এখানে আর উল্লেখ করছি না। কংগ্রেস বিরোধী সব দলকে একটি জোটে নিয়ে আসতে সচেষ্ট ছিলেন তিনি। ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় সবসময়ই জাতীয় স্তরের রাজনীতি নিয়েই বেশি আগ্রহী ছিলেন। রামগড়ের রাজা কামাক্ষা নারায়ণ সিংহ এবং তাঁর জনতা পার্টিকে জাতীয় গণতান্ত্রিক জোটে নিয়ে আসার জন্য শ্যামাপ্রসাদ চেষ্টা শুরু করেন। কংগ্রেস দল মনে করত, জনতা পার্টি জনসঙ্ঘের সঙ্গে জোট করতে ইচ্ছুক। ওই বছরের, অর্থাৎ এপ্রিল ১৯৫২ মাসে ড. মুখোপাধ্যায় ওড়িশার গণতন্ত্র পরিষদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে ওই রাজ্যে যান। তাঁর অনুরোধে সাড়া দিয়ে গণতন্ত্র পরিষদ জনসঙ্ঘে মিশে যায়। সেপ্টেম্বর মাসে তিনি মুম্বাই (তখন বোম্বাই) যান সমাজতন্ত্রী দলের অশোক মেহতার সঙ্গে দেখা করে তাঁকে ‘জাতীয়তাবাদী ও গণতান্ত্রিক’ জোটে যোগদানে রাজি করাতে।
ড. শ্যামাপ্রসাদ বুঝেছিলেন, কংগ্রেস বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে ভবিষ্যতে দেশের সমূহ সর্বনাশ। তাই তিনি দেশের প্রথম নির্বাচনের সময় থেকেই কমিউনিস্ট বাদে অন্য কংগ্রেস বিরোধী দলগুলিকে একই ছাতার তলায় নিয়ে আসা খুব প্রয়োজন বলে মনে করতেন। তাই তিনি প্রথম লোকসভা নির্বাচনের পরে পরেই সংসদে দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক দলগুলিকে সঙ্ঘবদ্ধ করে একটি সক্রিয় জোট গঠনে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। কমিউনিস্টপন্থী দলগুলি এই কাজে সফল না হলেও তিনি এই কাজে সফল হয়েছিলেন। তিনি যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন এই জোট সংসদে যথেষ্ট সক্রিয়তার সঙ্গে কাজ করেছে। এমনকী তাঁর অকালমৃত্যুর ফলে। জাতীয় গণতান্ত্রিক দলও (National Democratic Party) স্বল্পায়ু হয়ে পড়ে।
শ্যামাপ্রসাদের এই অকালমৃত্যু বিরোধী রাজনীতি, বিশেষ করে সামগ্রিকভাবে ভারতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে এক অপূরণীয় ক্ষতি। শ্যামাপ্রসাদের মৃত্যুর ফলে ভারতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে জওহরলাল নেহরু একচ্ছত্র অধিপতি হয়ে উঠেন। প্রলম্বিত হয় কংগ্রেস দলের শাসন।কংগ্রেসের শাসন অবসানের জন্য ভারতের নাগরিকদের অপেক্ষা করতে হয় ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। ১৯৭৭ সালে মোরারজী দেশাইয়ের নেতৃত্বে জনতা পার্টির সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার ফলে কংগ্রেসের দীর্ঘ শাসনের অবসান হয়। এখানে স্মর্তব্য যে, জনতা পার্টিতে ভারতীয় জনসঙ্ঘ ছিল সর্ববৃহৎ গোষ্ঠী।

READ ALSO

29th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

29th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

October 8, 2025
15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

September 23, 2025
ShareTweetShare

Related Posts

29th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ

29th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

October 8, 2025
15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ

15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

September 23, 2025
15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ

15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

September 23, 2025
15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ

15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

September 23, 2025
15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ

15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

September 23, 2025
15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ

15th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ

September 23, 2025

POPULAR NEWS

4th September 2023 Rajjopat

4th September 2023 Rajjopat

September 21, 2023
৩৫০ বছর পর দেশে ফিরছে শিবাজীর বাঘনখ

৩৫০ বছর পর দেশে ফিরছে শিবাজীর বাঘনখ

October 2, 2023
কেশব ভবনে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী হানা

কেশব ভবনে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতী হানা

October 4, 2023
4th September Angana

4th September Angana

September 21, 2023
2nd October 2023 Parampara

2nd October 2023 Parampara

October 1, 2023

EDITOR'S PICK

25th August সুন্দর মৌলিকের চিঠি

25th August সুন্দর মৌলিকের চিঠি

August 26, 2025
11th September Biswamitraer Kalam

11th September Biswamitraer Kalam

September 21, 2023
2nd June রাজ্যপাট

2nd June রাজ্যপাট

June 4, 2025
19th May বিশেষ নিবন্ধ

19th May বিশেষ নিবন্ধ

May 23, 2025

About

Follow us

Categories

  • Uncategorized
  • অতিথি কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • পরম্পরা
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • বিশেষ নিবন্ধ
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • রাজ্যপাট
  • সঙ্ঘবার্তা
  • সম্পাদকীয়
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি

Recent Posts

  • 29th September প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • 29th September পরম্পরা
  • 29th September পরম্পরা
  • 29th September পরম্পরা

© 2023 Swastika. All rights reserved.

No Result
View All Result
  • হোম
  • সম্পাদকীয়
  • রাজ্যপাট
  • সুন্দর মৌলিকের চিঠি
  • অতিথি কলম
  • বিশ্বামিত্রের কলম
  • উত্তর সম্পাদকীয়
  • প্রচ্ছদ নিবন্ধ
  • পরম্পরা
  • ই -পত্রিকা

© 2023 Swastika. All rights reserved.

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In

Add New Playlist

Are you sure want to unlock this post?
Unlock left : 0
Are you sure want to cancel subscription?